বুধবার, ২৯ মার্চ, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ১৫ চৈত্র, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ ।
নিজস্ব প্রতিবেদক:
২৮ ডিসেম্বর, ১৯৭১ : এদিন ঢাকা শহরে ‘শেখ মুজিব দিবস’-এর অনুষ্ঠানসূচির মধ্যে ছিল-সকালে মসজিদ, মন্দির, চার্চ ও প্যাগোডায় বিশেষ প্রার্থনা, শোভাযাত্রা ও বিকেলে পল্টন ময়দানে জনসভা। সভায় বক্তৃতা করবেন অস্থায়ী প্রেসিডেন্ট সৈয়দ নজরুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ এবং অন্য আওয়ামী লীগ নেতারা।
প্রখ্যাত লেখক ও চলচ্চিত্র প্রযোজক জহির রায়হান অভিযোগ করেছেন যে, বদর বাহিনী কর্তৃক পরিকল্পিতভাবে বাঙালি বুদ্ধিজীবী হত্যার পেছনে একটি বৃহৎ শক্তি জড়িত আছে। তিনি স্থানীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে ভাষণ দিতে গিয়ে বলেন, এই হত্যাকান্ড শুধু বদর কূপমন্ডকদের দ্বারা সম্ভব হয়নি, মার্কিন গোয়েন্দা সার্ভিস কর্তৃক ইন্দোনেশিয়া, জর্ডান এবং কঙ্গোতে পরিচালিত হত্যাকান্ডের সঙ্গে এর প্রায় মিল রয়েছে।
জহির রায়হান তথ্য প্রকাশ করে বলেন, লে. নিয়াজিসহ কিছু পাকিস্তানি জেনারেল এ ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিল। কিছু উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মচারীও এ ষড়যন্ত্রের দোসরের কাজ করে। তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, এখনো এ ব্যাপারে কোনো কার্যকরি সরকারি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। খুনি ও অপরাধী ব্যক্তিরা ইতোমধ্যে জনগণের বিভিন্ন অংশে অনুপ্রবেশ করেছে এবং তাঁর কাছে অপরাধীদের পূর্ণাঙ্গ একটি তালিকা রয়েছে। তিনি এ ব্যাপারে একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কমিটি গঠনের মাধ্যমে ষড়যন্ত্র ও হত্যারহস্য সারা বিশ্বের কাছে উদ্ঘাটন করতে সরকারের কাছে আবেদন জানান। তিনি বলেন, বদর দস্যুদের মুখোশ উন্মোচন না করলে জাতীয় নিরাপত্তার প্রতি তা হুমকি হয়ে থাকবে। এদের কঠোর হাতেই দমন করতে হবে। বদর পশুদের জঘন্য হত্যাকান্ডে দেশ তার সেরা সন্তান-সন্ততিদের হারিয়েছে।