জানুয়ারি মাসে ৬৫৯ সড়ক দুর্ঘটনায় ৬৭৭ জন নিহত : যাত্রী কল্যাণ সমিতি

আপডেট: ফেব্রুয়ারি ১০, ২০২৫, ২:০১ অপরাহ্ণ


সংবাদ বিজ্ঞপ্তি :


বিদায়ী জানুয়ারি মাসে ৬৫৯টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৬৭৭ জন নিহত, ১২৭১ জন আহত হয়েছে। রেলপথে ৫৭ টি দুর্ঘটনায় ৫৯ জন নিহত, ২৩ জন আহত হয়েছে। নৌ-পথে ১৬ টি দুর্ঘটনায় ১৮ জন নিহত, ০৯ জন আহত এবং ০৫ জন নিখোঁজ হওয়ার খবর সংবাদপত্রে মিলেছে।

বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির দুর্ঘটনা মনিটরিং সেলের পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে। এই সময়ে ২৮৯ মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ৩০১ জন নিহত ও ২৩৯ জন আহত হয়েছে। যা মোট দুর্ঘটনার ৪৩.৮৫ শতাংশ, নিহতের ৪৪.৪৬ শতাংশ ও আহতের ১৮.৮০ শতাংশ।

এছাড়া ১৫৬ বাস দুর্ঘটনায় ১৫৯ ও আহত ৪৫২ আহত হয়েছে। যা মোট দুর্ঘটনার ২৩.৬৭ শতাংশ, নিহতের ২৩.৪৯ শতাংশ ও আহতের ৩৫.৫৬ শতাংশ। এবং ১৬৩ ব্যাটারিচালিত-ইজিবাই-নসিমন-অটোরিকশা-মাহিন্দ্রা দুর্ঘটনায় ১৩৯ জন নিহত ও ৩৩৬ জন আহত হয়েছে। যা মোট দুর্ঘটনার ২৪.৭৩ শতাংশ, নিহতের ২০.৫৩ শতাংশ ও আহতের ২৬.৪৩ শতাংশ।

সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) সংগঠনের এক প্রেস বার্তায় এই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।
দেশের বহুল প্রচারিত ও বিশ্বাসযোগ্য ৯৬টি জাতীয়, আঞ্চলিক, অনলাইন ও ইলেক্ট্রনিক সংবাদ প্রকাশিত সংবাদ মনিটরিং করে ধারাবাহিকভাবে এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়।

এতে দেখা যায়, বিদায়ী জানুয়ারি মাসে সর্বমোট সড়ক, রেল ও নৌপথে ৭৩২ টি দুর্ঘটনায় ৭৫৪ জন নিহত এবং ১৩০৩ জন আহত হয়েছে। এই মাসে সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা সংগঠিত হয় ঢাকা বিভাগে, সবচেয়ে কম দুর্ঘটনা সংগঠিত হয় ময়মনসিংহ বিভাগে।

এই মাসে সড়কে দুর্ঘটনায় আক্রান্ত- ১৬ জন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, ৩৮২ জন চালক, ২৩৮ জন পথচারী, ১৮৮ জন শ্রমিক, ১৫১ জন শিক্ষার্থী, ১৭ জন শিক্ষক, ১৭১ জন নারী, ২১ জন শিশু, ০৮ জন সাংবাদিক, ০৩ জন চিকিৎসক, ১২ সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা এবং ৪১ জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীর পরিচয় মিলেছে।

এর মধ্যে সড়কে ০৪ জন পুলিশ সদস্য, ০১ জন আনসার সদস্য, ০২ জন বিজিবি সদস্য, ১২ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা, ০২ জন সাংবাদিক, ১১৯ জন নারী, ১২ জন শিশু, ৮৬ জন শিক্ষার্থী, ১৩ জন শিক্ষক, ৩১১ জন চালক, ৪৭ জন পরিবহন শ্রমিক, ২৬ জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী, ০৩ জন চিকিৎসক, ২১৯ জন পথচারী ও ১২ সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা নিহত হয়েছে।

এ সময়ে সংগঠিত দুর্ঘটনায় সর্বমোট ১০৩২টি যানবাহনের পরিচয় মিলেছে, যার ১৬.৫৭ শতাংশ বাস, ২৩.৮৩ শতাংশ ট্রাক-পিকাপ-কাভার্ডভ্যান ও লরি, ৫.৪২ শতাংশ কার-জীপ-মাইক্রোবাস, ৪.৯৪ শতাংশ সিএনজিচালিত অটোরিক্সা, ৩১.২৯ শতাংশ মোটরসাইকেল, ১৭.৯২ শতাংশ ব্যাটারিচালিত রিক্সা-ইজিবাইক-নছিমন-করিমন-মাহিন্দ্রা-ট্রাক্টর ও লেগুনা সড়ক দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে। মোটরসাইকেল ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার দুর্ঘটনা ভয়াবহ বাড়লেও এসব সংবাদ গণমাধ্যমে কম আসছে বলে প্রকৃত চিত্র তুলে আনা যাচ্ছে না।

সড়কে দুর্ঘটনার সময় বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ১০.৩৫ শতাংশ ভোরে (৪.০০-৬.০০), ২৬.৬৯ শতাংশ সকালে (৬.০০-১২.০০), ১৫.৫৩ শতাংশ দুপুরে (১২.০০-৩.৩০), ৮.১৬ শতাংশ বিকালে (৩.৩০-৫.৩০), ১৭.৫২ শতাংশ সন্ধ্যায় (৫.৩০-৭.০০), ১৯.৫২ শতাংশ দিবাগত রাতে (৭.০০-১২.০০), এবং ২.১৯ শতাংশ মধ্যরাতে (১২.০০-৪.০০) সংগঠিত হয়েছে।

সড়ক দুর্ঘটনায় হতাহতের বয়স বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ০.৬৩ শতাংশ (০০-১০) বছর, ২৩.২৫ শতাংশ (১১-২০) বছর, ৩১.৬২ শতাংশ (২১-৩০) বছর, ১৩.৬৩ শতাংশ (৩১-৪০) বছর, ১৩.৫ শতাংশ (৪১-৫০) বছর, ৯ শতাংশ (৫১-৬০) বছর এবং ৮.৩৭ শতাংশ (৬১-১০০) বছর বয়সী ব্যাক্তি দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে।

সংগঠিত মোট দুর্ঘটনার ৪১.৬০ শতাংশ গাড়ি চাপা, ৩৮.১৮ শতাংশ মুখোমুখি সংঘর্ষ, ১৩.৩৫ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে, ৬.১৬ শতাংশ বিবিধ কারনে এবং ০.৬৯ শতাংশ ট্রেন-যানবাহন সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।

দুর্ঘটনার ধরন বিশ্লেষণে দেখা গেছে মোট সংগঠিত দুর্ঘটনার ৩৭.৮০ শতাংশ জাতীয় মহাসড়কে, ২৮.৭৫ শতাংশ আঞ্চলিক মহাসড়কে, ২৮.০৪ শতাংশ ফিডার রোডে সংগঠিত হয়েছে। এছাড়াও দেশে সংগঠিত মোট দুর্ঘটনার ৩.৬৫ শতাংশ ঢাকা মহানগরীতে, ১.০৪ শতাংশ চট্টগ্রাম মহানগরীতে, ০.৬৯ শতাংশ রেলক্রসিংয়ে সংগঠিত হয়েছে।