মাহাবুল ইসলাম:
বৈশ্বিক দূর্যোগ পরবর্তী নানা সংকট ও শঙ্কা মাড়িয়ে পদ্মা রেলসেতু, মেট্রোরেল, কর্ণফুলি র্টানেলসহ নানা অর্জন নিয়েই শেষ হলো ২০২৩। ২০২৪ সাল নিয়েও তাই প্রত্যাশা জীর্ণতা ক্ষয়ে স্মার্ট হোক। নতুন বছরে জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনৈতিক উত্তাপ নিয়ে জনমনে নানা প্রশ্ন ও শঙ্কা থাকলেও সকলের অংশগ্রহণে উন্নয়নের অব্যাহত প্রত্যাশার কথাই ব্যক্ত করছেন রাজশাহীর সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা।
গত একটি বছর রাজশাহীতে হত্যাকান্ড, সাংবাদিক নির্যাতনসহ বেশকিছু অপ্রত্যাশিত ঘটনা আলোচনার শীর্ষে ছিলো। নতুন বছরে এমন কোনো ঘটনার পুনরাবৃত্তি বা রাজনৈতিক সহিংসতার মতো ঘটনাগুলোর বিষয়ে সোচ্চার থাকার আহ্বান সবার। নতুন বছর নিয়ে সোনার দেশকে রাজশাহীর বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা নিজেদের প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন।
রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামন্ডলীর সদস্য প্রফেসর আব্দুল খালেক বলেন, আমরা জাতি হিসেবে আশাবাদী। আর আমিও মানুষ হিসেবে সবসময় ইতিবাচক প্রত্যাশা করি। সেই জায়গা থেকে নতুন বছরটাও সুখ-সমৃদ্ধির ও স্মার্ট হবে এমনটাই আশা করি। বিশ্বে যে যুদ্ধ-বিগ্রহ চলছে, অচিরেই সেগুলোর অবসান হয়ে একটি মানবিক পৃথিবীর প্রত্যাশাও করি।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ বর্তমানে যে পর্যায়ে গেছে, সেখানে আশাহত হওয়ার মতো কোনো বিষয় নেই। আজকে দেশে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। এই উন্নয়নের ধারা ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে। আসন্ন নির্বাচন নিয়ে অনেকের মনে অনেক প্রশ্ন আছে। তবে আমার প্রত্যাশা সকলের শুভ বুদ্ধির উদয় হবে। আর রাজশাহীকে আলাদা করে চিন্তা করার সুযোগ নেই। বাংলাদেশের উন্নয়ন হলে রাজশাহীর উন্নয়ন এমনিতেই হবে। আর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য হিসেবে এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন আছেন। তার হাত ধরে এখানকার অনেক উন্নয়ন হয়েছে। ভবিষ্যতেও এই ধারা অব্যহত থাকবে।
রাজশাহী কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ প্রফেসর মোহা. হবিবুর রহমান বলেন, নতুন বছর অবশ্যই বিগত বছরের থেকে সুন্দর হোক এটা সকলেরই প্রত্যাশা। জাতীয় ও বৈশ্বিক সংকটের কারণে খাদ্য নিরাপত্তায় কিছুটা হলেও বৈষম্য স্পষ্ট হয়েছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে। এতে নিম্ন আয়ের অনেক মানুষ সঠিকভাবে প্রয়োজনীয় খাবার কিনতে পারছে না। নতুন বছরে এই বিষয়টিকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে সরকারসহ সংশ্লিষ্টরা কাজ করবেন এমন প্রত্যাশা থাকবে।
তিনি আরও বলেন, রাজশাহী শিক্ষা নগরী। সে সঙ্গে কর্মসংস্থানেও অনেকই পিছিয়ে আছে। এ বিষয়গুলো নিয়ে এরইমধ্যে জনপ্রতিনিধিসহ সরকারও ভাবছে। বহুমুখী উদ্যোগও দৃশ্যমান হচেছ। দক্ষ জনগোষ্ঠী তৈরির প্রচেষ্টাও রয়েছে। আগামী বছর এসব নানা উদ্যোগের সুফলে আরও সমৃদ্ধ হবে রাজশাহী এমনটাই প্রত্যাশা।
মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোহাম্মদ আলী কামাল বলেন, ২০২৩ সাল দেশের জন্য একটি সাফল্যের বছর। আওয়ামীলীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ উন্নয়নের মহাসড়কে তাকলাগিয়ে দিয়েছে। আমরা রাজনীতিবিদরা মানুষের জন্য রাজনীতি করি। যে যাই বলুক, জনগণের কল্যাণেই আমরা কাজ করি। জননেত্রী শেখ হাসিনাও জনকল্যাণেই দেশে মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করছেন। যার সুফল সাধারণ মানুষ পাচ্ছে। আগামী বছর এই সুফল আরও সমৃদ্ধ হবে এটাই প্রত্যাশা।
রাজশাহী শিক্ষাবোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান প্রফেসর হাবিবুর রহমান বলেন, বৈশি^ক মহামারী ও সংকট পরবর্তী শিক্ষা চ্যালেঞ্জ মাড়িয়েই সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে দেশ। শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা যে শঙ্কার মধ্যে ছিলেন, এবং এক ধরনের ছন্দপতন লক্ষ্য করা গেছে। সেটা এখন স্বাভাবিক হয়েছে। জাতীয় শিক্ষাক্রমেও কিছু পরিবর্তনও এসেছে। নতুন বছরে নতুন বইয়ের ঘ্রাণ শিক্ষার্থীরা এবারও পাবে। নতুন বছর সুন্দর ও সমৃদ্ধ হবে এমনটাই প্রত্যাশা করি।
রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের প্রাক্তণ শিক্ষার্থী আশিক ইসলাম। তিনি বলেন, নতুন বছর সুন্দর ও স্বাচ্ছন্দ্যময় হোক এটা সকলেই চাওয়া। কিন্তু শিক্ষাজীবন নতুন বছরে আরও বেশি ব্যয় বহুল হচ্ছে। পরিবারের আয় কমেছে। কিন্তু খরচ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ বিষয়টিকে অধিক গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে শিক্ষা ব্যয় কমানোতে সংশ্লিষ্টরা উদ্যোগী হবেন এমনটা প্রত্যাশা যেমন থাকবে তেমনি কর্মসংস্থানের নতুন নতুন ক্ষেত্রে সৃষ্টিতে উদ্যোগ নেয়া হোক।
নগর নিয়ে নতুন বছরের নিজের পরিকল্পনা ও ভাবনার কথা জানান বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। তিনি বলেন, গ্রিন, ক্লিন ও হেলদি সিটি রাজশাহী নগরী এখন বাংলাদেশের জন্য মডেল ও বিশে^র বুকে ‘বাসযোগ্য নগরী’ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে রাজশাহী নগরীতেও বহুমাত্রিক উন্নয়ন কাজ চলমান রয়েছে। যার সুফল নগরবাসী পাচ্ছে। কর্মসংস্থানে পিছিয়ে থাকা রাজশাহীকে এগিয়ে নিতে হাইটেক পার্ক, বিসিক শিল্প এলাকা তৈরি করা হয়েছে। অর্থনৈতিক জোন প্রতিষ্ঠার কাজও চলমান। আশা করছি এই বছরের চেয়ে সামনের বছর আরও সমৃদ্ধি ও উন্নতির হবে।