জেনিভা ক্যাম্প: ফের সংঘাতে মাদক কারবারিরা, নিহত ১

আপডেট: নভেম্বর ১, ২০২৪, ৫:২৮ অপরাহ্ণ


সোনার দেশ ডেস্ক :


রাজধানীর মোহাম্মদপুরের জেনিভা ক্যাম্পে মাদক কারবারিদের দুই পক্ষের সংঘর্ষে আবারও প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে।
বৃহস্পতিবার গভীর রাতের এ ঘটনায় চারজনকে আটক করার কথা জানিয়েছে সেনাবাহিনী।

মোহাম্মদপুর থানার ওসি আলী ইফতেখার হাসান জানান, রাত ৩টার দিকে মাদক কারবারিদের দুই পক্ষের সংঘর্ষে রাজা নামের একজন মারা গেছে।
২৮ বছর বয়সী এ যুবক মাদক কারবারি বুনিয়া সোহেল গ্রুপের সদস্য। বৃহস্পতিবার বুনিয়া সোহেলকে সিলেটের একটি হোটেল থেকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব।

ওসি ইফতেখার বলেন, “বুনিয়া সোহেল গ্রেপ্তার হওয়ার পর তার প্রতিপক্ষ চুয়া সেলিম পুরো এলাকা নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার চেষ্টা করলে বুনিয়া সোহেলের লোকজন তাতে বাধা দেয়। এতেই মধ্যরাতে দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।”

সংঘর্ষকালে দ্ইু ক্ষই গুলি-বোমা ছুড়ে প্রতিপক্ষকে ঘায়েলের চেষ্টা করে জানিয়ে তিনি বলেন, এ সময় বোমার আঘাতে ঘটনাস্থলেই রাজা মারা যান।
পুলিশ কর্মকর্তা ইফতেখার বলেন, ওই ক্যাম্পে পুলিশ নিয়মিত টহল দিয়ে আসছে।

“গন্ডগোলের খবর শুনে বৃহস্পতিবার রাত ১১টা থেকে রাত ১টা পর্যন্ত ক্যাম্পের ৭ নম্বর সেক্টরে অভিযান চালানো হয়। আমরা বের হয়ে আসার পরই রাত ৩টার দিকে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।”

শেরেবাংলা নগর ও বছিলা সেনা ক্যাম্প জানিয়েছে, ঘটনার পরপরই ঘটনাস্থলে গিয়ে অভিযান চালায় সেনা সদস্যরা। তাদের উপস্থিতি টের পেয়ে মাদক কারবারিরা বিভিন্ন দিকে পালাতে থাকেন।

এসময় চারজনকে আটক করা হয়। তাদের কাছ থেকে ৪০টি ইয়াবাসহ বিভিন্ন মাদকদ্রব্য পাওয়া যায়। এই চারজনের মধ্যে দুইজন চুয়া সেলিম, বাকি দুজন পিচ্চি রাজা গ্রুপের সদস্য। তবে তাদের নাম প্রকাশ করা হয়নি।

মাদক সাম্রাজ্য দখলের লড়াই
জেনিভা ক্যাম্পের মাদক ব্যবসার দখল নিয়ে দ্বন্দ্ব বহুদিনের। তবে দেশের অস্থিরতার মধ্যে গত জুলাই থেকে প্রাণক্ষয়ী সংঘর্ষে জড়াচ্ছে সেখানকার দুটি পক্ষ।

একটি পক্ষের নেতৃত্বে আছেন বুনিয়া সোহেল, আরেকটি পক্ষের নেতা চুয়া সেলিম। বুনিয়া সোহেলের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন সৈয়দপুইরা (নীলফামারীর সৈয়দপুর থেকে আসা ‘বিহারি’) নামের আরেকটি পক্ষের নেতা বাবু ওরফে সৈয়দপুইরা বাবু।

গত ৫ অগাস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর তাদের সংঘাতে যুক্ত হয় থানা থেকে লুট হওয়া আগ্নেয়াস্ত্র। গত তিন মাসে সেখানকার সংঘাতে রাজাসহ অন্তত পাঁচজন প্রাণ গেছে।

ক্যাম্পের বাসিন্দারা জানিয়েছেন, বছর কয়েক আগে পুরো ক্যাম্পের মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ ছিল নাদিম হোসেন ওরফে পাঁচ্চিশ ও ইশতিয়াক নামের দুই যুবকের হাতে। দুজনই মাদক কারবার করে বিপুল অর্থের মালিক হয়েছিলেন, পালতেন ব্যক্তিগত বাহিনী।

২০১৮ সালের জুলাইয়ে পূর্বাচলে র‌্যাবের ‘ক্রসফায়ারে’ নিহত হন পাঁচ্চিশ। এরপর ভারতে পালিয়ে যান ইশতিয়াক। মহামারীর সময় কোভিড আক্রান্ত হয়ে তিনি মারা যান বলে ক্যাম্পে জনশ্রুতি আছে। এরপর থেকেই ইশতিয়াক আর পাঁচ্চিশের মাদক সাম্রাজ্য দখলের প্রতিযোগিতা শুরু হয়, যা এখন রক্তক্ষয়ী লড়াইয়ের রূপ নিয়েছে।
তথ্যসূত্র: বিডিনিউজ

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ