জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের সংবর্ধনা সভায় হামলার ঘটনায় পাল্টাপাল্টি অভিযোগ

আপডেট: ফেব্রুয়ারি ১, ২০১৭, ১২:০৯ পূর্বাহ্ণ

নিজস্ব প্রতিবেদক


%e0%a6%b9%e0%a6%be%e0%a6%ae%e0%a6%b2%e0%a6%be
রাজশাহী জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী সরকারের সংবর্ধনা সভায় হামলার ঘটনায় থানায় পাল্টাপাল্টি লিখিত অভিযোগ হয়েছে। নগরীর মতিহার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হুমায়ুন কবীর এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, সোমবার বিকেলের ওই হামলার ঘটনার পর গতকাল মঙ্গলবার উভয়পক্ষই থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তবে এ ঘটনায় কাউকে আটক করা হয়নি। বিষয়টি মিমাংসা করার চেষ্টা চলছে। এদিকে নগরীর বহরমপুর বাইপাস মোড়ে সাংসদ আয়েন উদ্দিনের ব্যক্তিগত চেম্বারে হামলার ঘটনায় থানায় কোন অভিযোগ হয় নি।
মতিহার থানার ওসি বলেন, অনুষ্ঠানের আয়োজক প্রতিষ্ঠান মহানগর টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট ইন্সটিটিউটের অধ্যক্ষ জহিরুল আলম রিপন এক অনুষ্ঠানেই জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, কৃতি শিক্ষার্থী ও আওয়ামী লীগ নেতাদের সংবর্ধনার আয়োজন করেন। আর একই অনুষ্ঠানে তিনি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, সাংসদ  আয়েন উদ্দিন ও পুলিশ কমিশনারসহ আরও কয়েকজন বিশিষ্ট ব্যক্তিকে আমন্ত্রণ করেন। তাদের সঙ্গে স্বশরীরে দেখা করে প্রত্যেককেই প্রধান অতিথি হিসেবে অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানান। আর এর ফলে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়। আর এ কারণেই সভাস্থলে হামলার ঘটনা ঘটেছে।
প্রসঙ্গত, সোমবার বিকেলে পবা উপজেলার কাপাসিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী সরকারের সংবর্ধনা সভায় হামলা চালায় সন্ত্রাসীরা। ওই অনুষ্ঠানে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ, জেলা পরিষদের সদস্য ও রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক নাইমুল হুদা রানা, জেলা যুবলীগের সভাপতি আবু সালেহ ও সাধারণ সম্পাদক খালিদ ওয়াসি কেটুও উপস্থিত ছিলেন।
হামলা চালানোর পর পরিস্থিতি শান্ত হলে অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়। এসময় বক্তব্য দিতে গিয়ে আওয়ামী লীগ নেতারা অভিযোগ তোলেন, রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর) আসনের সাংসদ আয়েন উদ্দিনের নির্দেশে তার সমর্থকরা এ হামলা চালায়। এরপর ওই রাতেই নগরীর লক্ষ্মীপুরে ও পবার বায়া বাজারে সাংসদ আয়েনের বহিষ্কার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।
এ ছাড়া এ হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সভা করেছেন গোদাগাড়ী যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতার্মীরা। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে পৌর যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা উপজেলা সদরে এই বিক্ষোভ মিছিলের আয়োজন করে। মিছিলটি পৌর শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে শহীদ ফিরোজ চত্বরে গিয়ে প্রতিবাদ সমাবেশ করে।
গোদাগাড়ী পৌর যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক দুরুল হুদার সভাপতিত্বে প্রতিবাদ সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আব্বাস আলী, পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি ইসমাইল হোসেন, পৌর যুবলীগ সদস্য তাইফুর রহমান বাবু, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা রিপন, ৪ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন, রাজশাহী মহানগর ছাত্রলীগের সদস্য ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল মজিদ প্রমুখ। প্রতিবাদ সভায় বক্তারা আওয়ামী লীগ নেতাদের ওপর হামলাকারীদের দ্রুত দৃষ্টান্তমূক শাস্তির দাবী জানান।
এদিকে গতকাল দুপুরে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী সরকার রাজশাহী মহানগর পুলিশের কমিশনার শফিকুল ইসলামের সঙ্গে দেখা করেছেন। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সোমবার হামলা চালানোর পাঁচ মিনিট আগেও সভাস্থলে দুই ভ্যান পুলিশ ছিল। কিন্তু ঘটনার সময় সেখানে কোনো পুলিশ ছিল না। হামলার ঘটনার পর ফের সেখানে পুলিশ আসে। তিনি মনে করেন, এমপি আয়েন উদ্দিনের নির্দেশে পুলিশ সরে গিয়ে সন্ত্রাসীদের হামলা চালানোর সুযোগ করে দেয়। এ ব্যাপারে অভিযোগ জানাতেই তিনি আরএমপি কমিশনারের সঙ্গে সাক্ষাত করেন।
অপরদিকে নগরীর বহরমপুর বাইপাস মোড়ে সাংসদ আয়েনের ব্যক্তিগত চেম্বারে হামলার ঘটনায় কোন মামলা হয় নি। গতকাল রাতে রজপাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আমান উল্লাহ জানান, সাংসদ আয়েনের চেম্বারে হামলার চেষ্টা হয়েছে। পুলিশ পাহারার কারণে এখানে দুর্বৃত্তরা হামলা চালাতে পারে নি। এ ঘটনায় থানায় কেউ অভিযোগ করেন নি।