সোমবার, ২৯ মে, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ১৫ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ ।
নিজস্ব প্রতিবেদক
অনুষ্ঠানে সচিব নাছিমা বেগম ও অতিথিদের সঙ্গে জয়িতারা- সোনার দেশ
রাজশাহী বিভাগীয় ‘জয়িতা অন্বেষণ’ অনুষ্ঠানে স্কাইপি কনফারেন্সের মাধ্যমে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব এনডিসি নাছিমা বেগম বলেছেন, সামাজে নারীরা অর্থনৈতিকভাবে আত্মনির্ভরশীল হয়ে উঠছে। প্রধানমন্ত্রী নারী জাগরণের অগ্রদূত। তিনি নারীর উন্নয়নে বৃহৎ পরিকল্পনা করেছেন। এরই অংশ হিসেবে তৃণমূল থেকে জয়িতা নির্বাচন করা হয়েছে।
গতকাল বুধবার দুপুরে রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনারের আয়োজনে দুপুর ২টায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজের ডা. কায়সার রহমান চৌধুরী অডিটোরিয়ামে ‘জয়িতা অন্বেষণে বাংলাদেশ’ শীর্ষক বিভাগীয় চূড়ান্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, পরিবার থেকে নারীর প্রতি আন্তরিক হতে হবে। বাল্যবিবাহ নারীদের উন্নয়নের বাধার সৃষ্টি করে। পুরুষের পাশাপাশি নারীরা সমাজ উন্নয়নে অবদান রাখতে সক্ষম হয়েছে। এতে অর্জন করছেন সাফল্যের দ্বার।
জয়িতা অনুষ্ঠানে বিচারকদের পর্যবেক্ষণে রাজশাহী বিভাগের ৮টি জেলা থেকে ৫ জন জয়িতা হলেন- অর্থনৈতিকভাবে সাফল্য অর্জনকারী নারী রাজশাহী জেলার উপশহর হাউসিং এস্টেট এলাকার মোজাহার ইসলামের মেয়ে উরসী মাহফিলা ফাতেহা উরসী এবং শিক্ষা ও চাকরি ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জনকারী নারী নগরীর মিয়াপড়া এলাকার মৃত আবদুল হাসিবের মেয়ে শিরীন মাহবুবা, সফল জননী নারী নাটোর জেলার গুরুদাসপুর কামারপাড়া এলাকার মৃত মোহাম্মদ আলীর স্ত্রী নার্গিস সুলতানা ও নির্যাতনের বিভীষিকা মুছে ফেলে নতুন উদ্যেমে জীবন শুরু করেছেন যে নারী নাটোর সদর গোয়ালডাঙ্গা চাঁদপুর এলাকার সামছুর রহমানের স্ত্রী আয়েসা বেগম এবং সমাজ উন্নয়নে অসামান্য অবদান রেখেছেন যে নারী সিরাজগঞ্জ জেলার সদরের নজরুল সরণী এলাকার আজিজুল হকের স্ত্রী আমিনা বেগমকে নির্বাচিত করা হয়।
রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার নূর-উর-রহমানের সভাপতিত্বে জয়িতা সংবর্ধনা প্রদান অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন, মহিলা বিষয়ক অধিদফতরের মহাপরিচালক সাহিন আহমেদ চৌধুরী, রাজশাহী মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ডা. আনোয়ার হাবিব, রাবির সাবেক উপউপাচার্য চৌধুরী সারওয়ার জাহান ও মহানগর আ’লীগের সহসভাপতি সমাজসেবী শাহিন আকতার রেনী।
অনুষ্ঠানে সমন্বয়ক ছিলেন, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) আমিনুল ইসলাম । এছাড়া উপস্থিত ছিলেন, রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ের সহকারি কমিশনার আবু বাক্কার সিদ্দিকসহ সরকারি কর্মকর্তাগণ ও রাজনৈতিক ব্যক্তিবগ।
‘জয়িতা অন্বেষণে বাংলাদেশ’ কার্যক্রম পরিচালনা নীতিমালার আলোকে রাজশাহী বিভাগ থেকে ৫টি ক্যাটাগরিতে যথা-১. অর্থনৈতিকভাবে সাফল্য অর্জনকারী নারী, ২. শিক্ষা ও চাকরির ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জনকারী নারী, ৩. সফল জননী নারী, ৪. নির্যাতনের বিভীষিকা মুছে ফেলে নতুন উদ্যোমে জীবন শুরু করেছেন যে নারী ও ৫. সমাজ উন্নয়নে অসামান্য অবদান রেখেছেন যে নারী নির্বাচন করে সংবর্ধনা প্রদান করা হয়েছে। এই বছর রাজশাহী বিভাগের মোট ৮ জেলা হতে প্রতি ক্যাটাগরিতে ৫ জন করে নির্বাচিত মোট ৪০ জন জয়িতা থেকে বিভাগীয় যাচাই/বাছাই কমিটি কর্তৃক ক্যাটাগরি অনুযায়ী ২ জন করে ১০ জন জয়িতা প্রাথমিকভাবে নির্বাচন করা হয়েছে।
দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে বিভিন্ন ক্ষেত্রে তৃণমূলের সংগ্রামী নারীদেরকে আত্মশক্তিতে উজ্জীবিত ও অনুপ্রাণিত করার লক্ষ্যকে সামনে রেখে সরকারের মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়াধীন মহিলা বিষয়ক অধিদফতরের উদ্যোগে রাজশাহী বিভাগের ‘জয়িতা অন্বেষণে বাংলাদেশ’ শীর্ষক কার্যক্রম বাস্তবায়িত হয়। সংগ্রামী এ সকল সফল নারীদের প্রতীকি নাম জয়িতা।
সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে জয়িতাদের চিহ্নিত করে তাদের যথাযথ সম্মান, স্বীকৃতি ও অনুপ্রেরণা প্রদান করে সমাজের আপামর নারীদের মধ্যে আস্থা সৃষ্টি করা ও তাদের জয়িতা হতে অনুপ্রাণিত করা এবং জেন্ডার সমতাভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণের মাধ্যমে নারীর অগ্রযাত্রায় সকল প্রতিবন্ধকতা মোকাবেলা করে জয়িতাদের অগ্রসর হওয়ার পথ সুগম করাই এ আয়োজনের উদ্দেশ্য।
এরই ধারাবাহকিতায় আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ ও বেগম রোকেয়া দিবস উপলক্ষে ‘জয়িতা অন্বেষণে বাংলাদেশ’ শীর্ষক বিভাগীয় পর্যায়ের চূড়ান্ত জয়িতা নির্বাচন অনুষ্ঠান হয়।
১০ জন জয়িতার মধ্য হতে বিভাগীয় পর্যায়ে প্রতি ক্যাটাগরিতে ১ জন করে মোট ৫ জন জয়িতাকে চূড়ান্তভাবে নির্বাচন করা হয়। চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত জয়িতাদের কেন্দ্রীয় কমিটিতে মূল্যায়নের জন্য প্রেরণ করা হবে।
বিভাগীয় পর্যায়ে চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত ৫ জন জয়িতাকে সনদ, ক্রেস্ট, উত্তরীয়, প্রাইজমানি বাবদ ১০ হাজার টাকা ও ৩৫ জন জয়িতাকে সনদ, ক্রেস্ট, প্রাইজমানি বাবদ ২ হাজার টাকাসহ সকল জয়িতাকে সংবর্ধনা প্রদান করা হয়। এছাড়া অনুষ্ঠানে সাংস্কৃতিক ও নৃত্য অনুষ্ঠান পরিবেশন করা হয়।