বৃহস্পতিবার, ৮ জুন, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ২৫ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ ।
রাবি প্রতিবেদক
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক রেজাউল করিম সিদ্দিকী হত্যা মামলায় আটজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দিয়েছে পুলিশ। গতকাল রোববার দুপুরে রাজশাহী চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ চার্জশিট দেয়া হয়। দেশকে অস্থিতিশীল করতে টার্গেট কিলিঙের অংশ হিসেবে অধ্যাপক রেজাউলকে হত্যা করা হয়েছে বলে চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়েছে। মামলার তদন্তকারী কর্মকতা রেজাউস সাদিক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
রাজশাহী মহানগর গোয়েন্দা পুলিশেল পরিদর্শক রেজাউস সাদিক জানান, অভিযুক্ত আটজনের মধ্যে জঙ্গি খাইরুল ইসলাম বাঁধন, নজরুল ওরফে বাইক হাসান ও ওসমান আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর অভিযানে নিহত হয়েছে। বাকি পাঁচজনের মধ্যে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শরিফুল ইসলাম পলাতক আছে। অপর আসামী মাসকাওয়াত আবদুল্লাহ, রিপন হোসেন, আব্দুস সাত্তার ও রহমতুল্লাহ কারাগারে আছে। এই পুলিশ কর্মকর্তা জানান, ব্লগার, মুক্তমনা, প্রগতিশীল ব্যক্তিদের টার্গেট কিলিঙের অংশ হিসেবে অধ্যাপক রেজাউল করিমকে হত্যা করে জঙ্গিরা।
গত ২৩ এপ্রিল রাজশাহীর শালবাগন এলাকায় নিজ বাসার অদূরে খুন হন ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক রেজাউল করিম সিদ্দিকী। ওইদন বিকেলে নিহতের ছেলে রিয়াসাত ইমতিয়াজ সৌরভ বাদি হয়ে অজ্ঞাতনামাদের বিরুদ্ধে নগরীর বোয়ালিয়া থানায় হত্যামামলা দায়ের করেন। এ মামলায় এ পর্যন্ত ১২জনকে গ্রেপ্তার দেখায় পুলিশ। এদের মধ্যে ১৫ মে গাইবান্ধা থেকে গ্রেফতার সাসকাওয়াত হাসান ওরফে সাকিব ওরফে আবদুল্লাহ হত্যার দায় স্বীকার করে ১৬ মে আদালতে জবানবন্দি দেয়। ১৯ মে বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী শিবিরকর্মী হাফিজুর রহমান পুলিশি হেফাজতে মারা যান। জঙ্গি খাইরুল ইসলাম বাধন গুলশানে অভিযানে নিহত হন। ১ আগস্ট নগরীর আশরাফের মোড় এলাকায় পুলিশের সাথে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন নজরুল ওরফে হাসান ওরফে বাইক হাসান। এছাড়া ওসমান ঢাকায় পুলিশের অভিযানে নিহত হয়েছে। পলাতক শরিফুল ইসলামকে ধরতে পুরস্কার ঘোষণা করেছে পুলিশ।
এদিকে এ হত্যার বিচার দাবিতে দীর্ঘদিন থেকে আন্দোলন করে আসছেন নিহতের স্বজন, ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। অভিযোগের চার্জশিট দাখিল করার তাদের মধ্যে কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে।
নিহতের মেয়ে রিজওয়ান হাসান শতভী বলেন, আমরা বারবার দোষীদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়ে আসছে। সর্বশেষ ছয় মাসে চার্জশিট না দেয়ায় আমরা কিছু হতাশ হয়ে পড়ি। তবে পুলিশের চার্জশিট দাখিলে মাধ্যমে সেই হতাশা অনেকটা কেটে গেল। এখন পলাতক শরিফুলকে গ্রেফতার এবং আদালতের মাধ্যমে দ্রুত জড়িতের সর্বোচ্চ সাজা প্রদান করার দাবি জানাচ্ছি। একইসাথে আইনের ফাঁক ফোকর দিয়ে অপরাধীরা যেন পার না পেয়ে যায় সেদিকে সর্তক থাকার জন্যে সংশ্লিষ্টদের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি।
বিশ^বিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক মাসউদ আখতার বলেন, দীর্ঘদিন পার হলেও মামলা চার্জশিট না দেয়ায় আমরা হতাশ হয়েছিলাম। চার্জশিট দেয়ার মাধ্যমে বিচার প্রক্রিয় শুরু হওয়ায় আমরা খুশি। আমরা চাই দ্রুত বিচার প্রক্রিয়া শেষ হোক। খুনিদের দৃষ্টান্তমূলক সাজা প্রদান করা হোক।