ট্রেনে কাটাপড়া নিহত পাঁচজনকে বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন নিহতদের মুখচ্ছবি গণমাধ্যমে প্রকাশ করা হোক

আপডেট: জুলাই ১১, ২০২৪, ১২:৫০ পূর্বাহ্ণ

নরসিংদীতে ট্রেনে কাটা পড়ে নিহত পাঁচজনকে বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন করা হয়েছে। পুলিশের উদ্ধৃতি গণমাধ্যমে এ খবর প্রকাশিত হয়েছে। ময়নাতদন্তের পর সোমবার (৮ জুলাই) রাতেই রেলওয়ে কবরস্থানে ওই পাঁচজনকে দাফন করা হয়। সোমবার সকাল সাড়ে ৫টা থেকে ৬টার মধ্যে রায়পুরা উপজেলার খাকচক এলাকায় ট্রেনের নিচে কাটা পড়ে পাঁজজনের মৃত্যু হয়। সকাল সাড়ে ৮টার দিকে রেললাইনের পাশে পাঁচটি মরদেহ ছিন্ন-ভিন্ন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। খবর পেয়ে রেলওয়ে পুলিশসহ জেলা পুলিশ, সিআইডি ও পিবিআই ঘটনাস্থলে যায়। নিহতরা ট্রেন থেকে পড়ে গিয়ে কাটা পড়েছেন, না-কি রেললাইনে বসা অবস্থায় কাটা পড়েছেন তা নিশ্চিত করা যায়নি। পুলিশ নিশ্চিত করেছে নিহত পাঁচজনের কারো ফিঙ্গারের ছাপের সঙ্গে কোনো আইডি কার্ডের যোগসূত্র পাওয়া যায়নি। তারা উদ্বাস্তু ধরনের ছিলেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। এছাড়া তাদের বয়সও নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না।
পিবিআই ও সিআইডির প্রযুক্তি দল এখনও পর্যন্ত নিহতদের পরিচয় শনাক্ত করতে পারেনি। পুলিশের ভাষ্যমতে বাধ্য হয়েই লাশগুলো রেলস্টেশনের কাছে বেওয়ারিশ কবরস্থানে দাফন করা হয়। তাদের পরনের কাপড়, মুখের লালা এবং দাঁত সংগ্রহে রাখা হয়েছে ফরেনসিক এবং ডিএনএ টেস্টের জন্য। নিহতরা সেখানে কীভাবে গেলেন, কী তাদের পরিচয়; সেটি হত্যা নাকি দুর্ঘটনা, সেসবের কোনো উত্তরই মিলছে না।
বলা হচ্ছে, পুলিশের মরিয়া চেষ্টার অংশ হিসেবে নিহতদেরকে ‘ভবঘুরে’ হিসেবে ধরে নিয়ে তাদের মুখচ্ছবি তুলে পাঠানো হচ্ছে বিভিন্ন স্টেশনে, যাতে অন্য ভবঘুরেদের দেখিয়ে পরিচয় উদ্ধার করা যায়।
নিহত পাঁচ লাশের যে বর্ণনা গণমাধ্যমে এসেছে- তাতে লাশ সংরক্ষণ হয়ত সম্ভব ছিল না। তবে খুবই অবাক করার মত ঘটনা যে, এক সাথে পাঁচ ব্যক্তি ট্রেনে কাটা পড়ে মারা গেলেনÑঅথচ তাদের শনাক্ত করা যাচ্ছে না। বিশেষ কোনো বড় দুর্ঘটনা ছাড়া এক সাথে পাঁচ ব্যক্তির মৃত্যু অনেক প্রশ্নের সৃষ্টি করেছে। অবশ্য পুলিশ রহস্য উদঘাটনে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তবে এটি হত্যাকা- হলে তা হবে খুবই পরিকল্পিত ও সতর্কতার সাথে সংঘটিত হয়েছে। শুধু ‘ভবেঘুরে’ বলে বিষয়টিকে হাল্কা করে দেখার সুযোগ নেই। ভবেঘুরে হলেই যে, এমন নির্মম পরিণতির শিকার পাঁচজনই হবে এমন সহজ সরলিকরণ করার সুযোগ নেই।
পুলিশের বক্তব্য ময়না তদন্তের রিপোর্ট পাওয়া গেলে মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে জানা যাবে। একই সাথে নিহতদের পরিচয় জানাটাও অত্যন্ত জরুরি। পুলিশ উদ্যোগ নিয়েছে নিহতদের মুখোচ্ছবি গণমাধ্যমে প্রচার করারও সুযোগ আছে। পাঁচ নিহতদের সম্পর্কে পুলিশ যথাশিগগিরই তাদের পরিচয় শনাক্ত করতে পারবে- এটাই প্রত্যাশা।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

Exit mobile version