ডায়াবেটিক রোগির সংখ্যা বাড়ছে ।। প্রতিরোধে সামাজিক উদ্যোগ চাই

আপডেট: ডিসেম্বর ১, ২০১৬, ১২:২৩ পূর্বাহ্ণ

সময়ের সাথে পালার দিয়ে দেশে ডায়াবেটিক রোগির সংখ্যা বাড়ছে। ২৭ নভেম্বর  রাজশাহী ডায়াবেটিক অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত সচেতনতামূলক সায়েন্টিফিক সেমিনারে দেয়া তথ্য মতে, বিশ্বব্যাপী ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়ছে ডায়াবেটিস। ২০৩০ সালের মধ্যে এর সংখ্যা দাঁড়াবে দ্বিগুণে। দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার তৃতীয় স্থানে রয়েছে বাংলাদেশ। দেশের ১১ শতাংশ মানুষ এ রোগে আক্রান্ত। রাজশাহীতে ডায়াবেটিস রোগির সংখ্যা ৭৪ হাজার ৩৯২ জন। এ রোগ সম্পর্কে সচেতনতা ও সুশৃংখল জীবন গড়ে তোলার মাধ্যমে এ রোগ থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব বলে ওই সেমিনারে উল্লেখ করা হয়। এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন দৈনিক সোনার দেশসহ স্থানীয় বিভিন্ন সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়েছে। ।
ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ডায়াবেটিস হচ্ছে ইন্সুলিন সমস্যা জনিত রোগ। এ রোগের প্রধান কারণ হচ্ছে শরীরে ইন্সুলিন না থাকা বা কম থাকা কিংবা ইন্সুলেন্সে কাজ না করা। এ রোগ নিয়ন্ত্রণে কার্যকরি ভূমিকা পালন করে নিয়মিত হাঁটা বা ব্যয়াম, শর্করা জাতীয় খাদ্য না খাওয়া, ওষুধ ও ইন্সুলিন দেয়া।
তথ্যানুয়ায়ী ১১ শতাংশ অর্থাৎ পৌনে দুকোটিরও বেশি মানুষ ডায়াবেটিকে আক্রান্ত। এর অর্থ এই দাঁড়ায় যে, ওই পরিমাণ লোক তাদের স্বাভাবিক সক্ষমতার অংশবিশেষ খুইয়েছেন। সেই অর্থে ধরলে বাংলাদেশে ডায়ািেটকের সংখ্যাধিক্য উদ্বেগের কারণ বটে। এর প্রভাব যে শুধু ব্যক্তি ও পারিবারিক পর্যায়ে, ব্যাপারটি সেখানেই সীমাবদ্ধ নয়- দেশের সামগ্রিক অর্থনীতির জন্যও এটি উদ্বেগজনক। স্বাভাবিকভাবেই  একজন সক্ষম মানুষ যে ভাবে সমাজ বা রাষ্ট্রের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করতে পারে, একজন ডায়াবেটিক আক্রান্তের পক্ষে তা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সম্ভব হয় না। বিশেষজ্ঞদের মতে ডায়াবেটিক এমন একটি রোগ যা জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে স্বচ্ছন্দের ব্যাঘাত ঘটায়, জীবনের স্বাভাবিক ছন্দের ব্যত্যয় ঘটায়। এক অর্থে অলস, দুর্বল ও ক্লান্তিকর জীবনের প্রতিচ্ছবিও বটে।
ডায়াবেটিকের লাগাম টেনে ধরাটাই এই মূহূর্তের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। যে হারে ডায়াবেটিক রোগ বৃদ্ধি পাচ্ছে তা আশংকাজনক। জনসক্ষমতাকে সুরক্ষা দেয়া যেমন রাষ্ট্রের দায়িত্ব তেমনি সমাজের প্রতিটি মানুষকেও ডায়াবেটিক রোগ সম্পর্কে সচেতন হওয়াও প্রয়োজন। মানসিক উত্তেজনা ও ভেজাল খাদ্যও ডায়াবেটিকের অন্যতম একটি কারণ। এটিকে আর বংশগত বলা হচ্ছে না। নানা কারণেই এই রোগ শরীরে বাসা বাধতে পারে। সম্ভাব্য কারণগুলোকেই মানুষের ধারণার মধ্যে নিয়ে অীাসাÑ যাতে করে তারা ডায়াবেটিক সম্পর্কে সচেতন হয় এবং পারিবারিক সংস্কৃতির মধ্যেই এই রোগের প্রতিরোধের শিক্ষা পৌছে দিতে হবে।
ডায়াবেটিক চিকিৎসায় দরিদ্র মানুষের অভিগম্যতা সৃষ্টি করা অতীব প্রয়োজন। রাজশাহীর ডায়াবেটিস অ্যাসোসিয়েশনের মত আরো প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজন রয়েছে। তৃণমূলের ডায়াবেটিক রোগিদের চিকিৎসাসেবার আওতায় আনার জন্য চিকিৎসার পরিধি সেই পর্যন্ত নিয়ে যেতে হবে। রোগিদের বিনা মূল্যে কিংবা কম খরচে চিকিৎসাসেবা পৌঁছে দেয়া সম্ভব হলে এ্ই রোগ প্রতিরোধে অনেকটাই সফল হওয়া যাবে। সামজিক উদ্যোগই পারে জীবনরস হরণকারী এই রোগ থেকে মানুষকে মুক্ত রাখতে।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ