বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৯ কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ ।
নিজস্ব প্রতিবেদক :
খুনের পুরো বিষয়টির একটা রাজনৈতিক উদ্দেশ্য ছিল। এ হত্যাকাণ্ড নিয়ে আমরা কিছুটা সন্দেহে করছিলাম- এই খুনের সঙ্গে একটা গোষ্ঠি বা ‘র’ এর এজেন্টরা যুক্ত থাকতে পারে। সেই সময় আমরাও নিজেদের জীবন নিয়ে শঙ্কিত ছিল। আমরাও গানম্যান পর্যন্ত ভাড়া করতে বাধ্য হয়ে ছিলাম।
আমাদের যখন পুলিশ থেকে বলা হচ্ছিল নিজের নিরাপত্তা নিয়ে চলেন। আমরা চলেছি। এই ঘটনায় একটা থার্ড পার্টি কাজ করেছে।
বুধবার (৩০ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজের কনফারেন্স রুমে চিকিৎসক ডা. গোলাম কাজেম আলী আহমেদের খুনিদের গ্রেফতার ও শান্তির দাবিতে করা সংবাদ সম্মেলনে
ন্যাশনাল ডক্টরস ফোরাম রাজশাহীর সাধারণ সম্পাদক ও রাজশাহী মেডিকেল কলেজের রিউমাটলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. এম মুর্শেদ জামান মিঞা এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, খুনের ১৮ টা ইভেন্ট ঘটে। খুনগুলো ম্যানুয়ালি করা হয়েছিল। তার হার্টে দুইটা স্ট্যাপ করেছে। হার্ট তিনভাগ হয়ে গেছে। এটা কোন নর্মাল খুনি করতে পারে না। নির্বাচনে ঠিক আগ মুহূর্তে এমন পরিবেশ তৈরি করা হয়েছিল।
এই যে সিডিআরগুলো নিয়ে ভিডিও ফুটেজগুলো নাই করে দিল, এটা কে পারে? তার মানে আপনি বোঝেন যে, এর সঙ্গে কে জড়িত ছিল। ঘটনার সময়কার সিসিটিভি কার্ট করে নেওয়া হয়েছে। ওখানকার আগে-পরের ফুটেজ আছে। তবে ওই সময়ের ফুটেজ নাই। দোকানদার জানিয়েছে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও কয়েকটা এজেন্সি নিয়ে গেছে। আমরা তাদের সাথে যোগাযোগ করি এবং বলি, আপনারা তো ধরতে পারেন। কিন্তু তারা ধরছে না।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ডা. এম মুর্শেদ জামান মিঞা বলেন, ২০২৩ সালের ২৯ অক্টোবর ডা. গোলাম কাজেম আলী আহমেদ নৃশংসভাবে খুন হন। এ নৃশংস খুনের বিচার চেয়ে রাজপাড়া থানায় পরের দিন ৩০ অক্টোবর ডা. কাজেমের স্ত্রী ডা. ফারহানা ইয়াসমিন সোমা একটি খুনের মামলা দায়ের করেন। যে মামলা নম্বর- রাজপাড়া থানা-৩৪।
তিনি বলেন, খুনের ১ বছর পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট মামলার কোন অগ্রগতি দৃশ্যমান হচ্ছে না। এই শহরে জানমালের নিরাপত্তার জন্য এ শহরে শত শত সিসি ক্যামেরা লাগানো আছে। যে স্থানে ডা. কাজেম খুন হয়েছে সেখানেও সিসি ক্যামেরা লাগানো ছিল ও আছে।
আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন ইউনিট এ খুনের ঘটনা তদন্ত করেছেন, কিন্তু ফ্যাসিবাদের দোসররা আসামী গ্রেফতারে কোন সহযোগিতা না করে বরং অজ্ঞাত কোন কারণে তারা বিলম্ব ঘটিয়েছে। এখন পর্যন্ত এ নৃশংস খুন সম্পর্কে কোন অগ্রগতি বা বিষয় জানতে পারছি না। পরিবারের পক্ষ থেকে নিহতের বাবা যোগাযোগ করলে পিবিআই কর্তৃপক্ষ উল্লেখযোগ্য কোন অগ্রগতি হয়েছে বলে জানাতে পারেননি।
তিনি আরও বলেন, এ খুনের কোন সুষ্ঠু বিচার আমরা পাবো কি না! কারণ দীর্ঘ এক বছর সময়কাল অতিবাহিত হলেও কোন ধরনের সামান্যতম অগ্রগতি আমাদের জানানো হচ্ছে না। এ খুনের সাথে কারা জড়িত তা জানতে চায়।
তার স্ত্রী-সন্তানেরাও জানতে চায় খুনি কে? কেন খুন করা হলো? পরিবর্তীত রাজনৈতিক ও রাষ্ট্রীয় প্রেক্ষাপটে তাই আজ আমরা নিহত ডা. কাজেমের বাবা মা, স্ত্রী-সন্তান, ভাই বোন, আত্মীয়-স্বজন ও সর্বন্তরের চিকিৎসকদের পক্ষ থেকে ডা. কাজেমের খুনিদের অনতিবিলম্বে গ্রেফতার করে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করার জোর দাবী জানাচ্ছি।
এ সময় ডক্টরস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) রাজশাহীর সভাপতি প্রফেসর ডা. ওয়াসিম হোসেন, ন্যাশনাল ডক্টরস ফোরাম রাজশাহীর সভাপতি প্রফেসর ডা. কাজী মহিউদ্দিন আহমেদ, নিহত ডা. কাজেম আলীর ঘনিষ্ঠ বন্ধু ডা. জাহাঙ্গীর হোসেনসহ রাজশাহী মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
এদিন দুপুরে রামেকে ডা. কাজেম আলী স্মরণে শোক সভা ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে রাজশাহীর সর্বস্তরের চিকিৎসকরা উপস্থিত ছিলেন।