সোমবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১৫ বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ ।
সরকারের জন্য কতটা স্বস্তির
বাংলাদেশের সাথে বিশ্বাসের ঘাটতি দুর করে সম্পর্ক দৃঢ় করতে চাই যুক্তরাষ্ট্র। ২ পক্ষের জন্য অস্বস্তিকর বিষয়, যেমন- মানবাধিকার, নির্বাচনসহ অন্যান্য ইস্যু নিয়ে ঢাকার সাথে আলোচনা হবে। কিন্তু তার আগে ২ দেশের জন্য ইতিবাচক বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। বাংলাদেশ সফরে এসে এ কথা জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি ডোনাল্ড লু। তিনি বুধবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে এ কথা বলেন।
ডোনাল্ড লুর এ সফর বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। সেটা বাংলাদেশের জন্য বিশেষ করে বর্তমান সরকারের জন্য যেমন, তেমনই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্যও। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র মার্কিন চাপ এবং বাংলাদেশে নিয়োজিত মার্কিন রাষ্ট্রদূতের তৎপরতা সরকারের জন্য বেশ বিব্রতকর ছিল। ফলে উভয় দেশের মধ্যে সম্পর্কের টোনাপোড়েন দেখা দেয়। সরকারের মন্ত্রী ও শীর্ষ নেতাদের পক্ষ থেকে খোলামেলাভাবে রাষ্ট্রদূতের তৎপরতার নিন্দাসহ তীব্র সমালোচনা করা হয়। সম্পর্কের এই আবহের মধ্যেই ডোনাল্ড লু-এর বাংলাদেশ সফর। ইতোমধ্যেই ঢাকাস্থ মাকিন রাষ্ট্রদূতের পরিবর্তনের ঘোষণা এসেছে।
ভূ-রাজনৈতিক কারণে বাংলাদেশ যে গুরুত্বপর্ণ হয়ে উঠেছে তা ডোনাল্ড লু-এর বাংলাদেশ সফর এবং খোলামেলা বক্তব্য তারই প্রমাণ। এ ক্ষেত্রে মার্কিন কূটনীতিতে বর্তমান সরকার যে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে তা বলাই বাহুল্য। তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাপারে সদাসতর্ক থাকারও কোনো বিকল্প নেই। যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কে সারা বিশ্বেই প্রচলিত যে, যুক্তরাষ্ট্র যে দেশের বন্ধু সে দেশের শক্রুর কোনো অভাব হয় না। দেশটি ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে গণহত্যা চালাতে পাকিস্তানকে অস্ত্র দিয়ে সহযোগিতা করেছে। বাঙালি জাতিসত্তাকে সমূলে নির্মূল করার পাকিস্তানি ্উদ্যোগের সাথ দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র।
এই ক্ষত বাঙালিরা কখনোয় ভুলতে পারে না। রাষ্ট্র সমূহের সাথে সহায়তা, লেনদেন বিশ্বের বাস্তবতা। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সেরা কূটনীতি ‘সবার সাথে বন্ধুত্ব, কারো সাথে শত্রতা নয়।’ সে ধারাতেই বাংলাদেশের কূটনীতি চলমান আছে। তবে যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কে সতর্ক-সাবধান থাকাও অপরিহার্য।