সোনার দেশ ডেস্ক :
ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন থানা ও আদালতে দায়েরকৃত মামলার তদন্তে সঠিক তথ্য প্রমাণ ছাড়া সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের গ্রেফতার না করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির প্রথম সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
গত ৮ সেপ্টেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত একটি চিঠি পুলিশ সদর দফতরে পাঠানো হয়। ১০ সেপ্টেম্বর পুলিশ অধিদফতরের ডিআইজি (কনফেডেন্সিয়াল) কামরুল হাসানের সই করা একটি চিঠি পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটে পাঠানো হয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, কোটা সংস্কারকে কেন্দ্র করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীদের প্রথমদিকে ছাড় দিলেও এক পর্যায়ে অতিরিক্ত শক্তি প্রয়োগ করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এর জেরে জুলাই-আগস্ট মাসে সরকারি হিসাব মতে সাত শতাধিক মানুষের প্রাণ গিয়েছে।
৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতে চলে যান। এরপর ৭ আগস্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তবর্তী সরকার গঠিত হয়।
তারপর থেকেই সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন পর্যায়ের সাবেক ও বর্তমান কর্মকর্তা-সদস্য, রাজনীতিক, নেতাকর্মী, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন জনকে আসামি করে কয়েকশ মামলা হয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, অনেক মামলায় গণহারে বিভিন্ন ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে সারা দেশে সমালোচনা শুরু হয়। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এরই ধারাবাহিকতায় উপদেষ্টাদের পক্ষ থেকে গণহারে মামলার বিষয়ে কাউকে হয়রানি করা হবে না বলে আশ্বাসও দেওয়া হয়।
আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদের প্রথম বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। পরবর্তীতে বৈঠকে দুটি সিদ্ধান্ত নেওয়া বলে হয় জানা গেছে। এর একটি হলো ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শাহাদাত বরণকারী পরিবার বা সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি বিভিন্ন আদালত বা থানায় দায়েরকৃত মামলায় সঠিক তথ্য প্রমাণ ছাড়া সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীকে গ্রেফতার না করা।
আরেকটি সিদ্ধান্ত হলো- জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থান কেন্দ্র করে হত্যাকাণ্ড ও অন্যান্য মামলায় তদন্ত-পূর্বক কোনও কর্মকর্তা-ব্যক্তির সম্পৃক্ততার প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া না গেলে তাদের নাম প্রত্যাহারের ব্যবস্থা নিতে হবে।
পুলিশ সদর দফতরের একটি সূত্র জানিয়েছে, আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির সিদ্ধান্তগুলো পুলিশের সব ইউনিট প্রধানদের কাছে পাঠানো হয়েছে। একইসঙ্গে এই সংক্রান্ত আপডেট তথ্য আগামী ২২ সেপ্টেম্বরের মধ্যে পুলিশ সদর দফতরে প্রতিবেদন আকারে পাঠানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
তথ্যসূত্র: বাংলা ট্রিবিউন