তানোরে আমের গাছে গাছে মুকুল, চাষিদের চোখে সোনালী স্বপ্ন

আপডেট: ফেব্রুয়ারি ৩, ২০১৭, ১২:০৭ পূর্বাহ্ণ

লুৎফর রহমান, তানোর



রাজশাহীর তানোরে আমের গাছে গাছে আগাম মুকুলে ভরে গেছে। গাছগুলোতে ব্যাপকভাবে শোভা পাচ্ছে সোনালী হলুদ মুকুল। কোন কোন আম গাছে পাতা পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে না। আম চাষিরা গাছ ও মুকুলের যতেœ ব্যস্ত সময় পার করছেন। আমের গাছে মুকুল দেখে সোনালী স্বপ্ন বুনছেন আম চাষিরা। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ৩৬০ হেক্টর জমিতে আমের বাগান রয়েছে। আম গাছের পরিমান ৩৩ হাজার। গত বছর আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১০ হাজার ৮শ মেট্রিক টন। এবার তা ছাড়িয়ে যাবে। এবারে এখন পর্যন্ত লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ না করলেও যে হারে মুকুল দেখা যাচ্ছে আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে গত বারের চেয়ে দিগুণ আম উৎপাদন হবে বলে ধারাণা করছে কৃষি অফিস।
এবারে মৌসুমের শুরুতে আবহাওয়াগত কারণে পর্যাপ্ত মুকুল আসতে দেরি হলেও প্রতিটি গাছে মুকুল কুড়ি দেখা গেছে। তবে বড় আকারের গাছের মুকুলের চেয়ে ছোট ও মাঝারি গাছে বেশি মুকুল লক্ষ্য করা যাচ্ছে। সব মিলিয়ে এবার ভালো গাছে মুকুল দেখা যাচ্ছে। আমের মুকুলের মৌ মৌ গন্ধের সুবাসে বাতাস ভরে উঠতে শুরু করেছে। আর তার সাথে দেখা দিয়েছে আম চাষিদের চোখে সোনালী স্বপ্ন।
উপজেলার একাধিক চাষিরা জানান, মুকুল বের হতে যে তাপমাত্রা প্রয়োজন বাতাসে সে তাপমাত্রা বিরাজ করছে। ফলে আম গাছে বেশি মুকুল ধরার আশা করছেন আম চাষিরা। আবার যদি হঠাৎ করে তাপমাত্রা বেড়ে যায় তাহলে মুকুলের স্বাভাবিক পরিবেশ নষ্টের আশঙ্কা দেখা দিবে। যার কারণে ফলনও ব্যাহত হতে পারে। আবার আগাম ফোটা মুকুলের গুটি দেখা মিলবে তড়িৎ।
মৌসুমের শুরুতেই তানোরে আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি ফলন আসবে বলে ধারণা করছে আম চাষিরা। তাইতো আম চাষিদের মুখে হাসি বুকে রঙিন স্বপ্ন বাসা বেধেছে। মনে লেগেছে আনন্দের ঢেউ। আর কয়েক দিন পর থেকে বের হওয়া গুটির যতেœ মেতে উঠবে চাষিরা।
এনিয়ে তানোর উপজেলার ইলামদহী গ্রামের আম চাষি রমজান আলী জানান, কিছু কিছু আম গাছে মুকুল বের হয়েছে। আর মুকুল আসার আগে থেকেই আম বাগানের পরিচর্যা করেছেন তিনিসহ এ অঞ্চলের অনেক আম চাষিরা। সার গাছের গোড়ায় পানি সেচ বের হওয়া মুুকুলে কীটনাশক ¯েপ্র, বাগান পরিষ্কারসহ বিভিন্ন পরিচর্যায় এখনো ব্যস্ত রয়েছেন তারমতো অনেকে। এখন আবারো পরাগায়ন নিশ্চিত করতে এবং মুকুল পুড়ে যাওয়া রোধ করতে ওষধ ¯েপ্র করবেন বলে জানান তিনি।
চাষিরা আরো জানান, এ উপজেলা খরা প্রবণ এলাকা। অন্য উপজেলার চেয়ে অনেক উচু এলাকা হওয়ায় পানির স্তর অনেক নিচে থাকে। ফলে এ অঞ্চলের মাটি অত্যন্ত কড়া। যার কারণে অন্য এলাকার আমের চেয়ে এ উপজেলার আমের স্বাদ একটু বেশি।
তানোর উপজেলার কৃষি অফিসার শফিকুল ইসলাম জানান, আম গাছে পরিচর্যা নেয়ার বিষয়ে কৃষকদের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। যেকোন সময় এ্যানথাস জোনিত রোগ হতে পারে। তার জন্য প্রতিটি চাষিকে কার্বোডাজিং গ্রুপের ওষুধ ব্যবহার করতে বলা হচ্ছে।