তানোরে ছাত্রলীগ সভাপতি গ্রেফতার

আপডেট: আগস্ট ১৮, ২০১৭, ১:৫০ পূর্বাহ্ণ

নিজস্ব প্রতিবেদক


রাজশাহীর তানোরে ছাত্রলীগের শোকসভা ও কাঙালিভোজ অনুষ্ঠানে রাজশাহী-১ (তানোর-গোদাগাড়ী) আসনের সাংসদ ওমর ফারুক চৌধুরীর উপস্থিতিতে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এঘটনায় থানা ছাত্রলীগের সভাপতি রবিন সরকারকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে তানোর গোল্লাপাড়া বাজারস্থ হাটসেটে এঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পনের আগস্ট উপলক্ষে গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে তানোর গোল্লাপাড়াহাট সেটে তানোর থানা ছাত্রলীগের উদ্যোগে শোকসভা ও কাঙালিভোজের আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন সভাপতি রবিন সরকার। নেতৃত্ব দেন জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জুয়েল রানা।
এসময় উপস্থিত নেতাকর্মীরা সাংসদ ফারুক চৌধুরীর সমালোচনা করেন। বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে সাংসদকে জানানো হয়। সাংসদ এ ধরনের ঘটনা অবহিত হবার পর তানোরে এক অনুষ্ঠান শেষে থানা পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে সভাস্থলে যান। সঙ্গে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। এসময় দুইপক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। একপর্যায়ে পুলিশ রবিন সরকারের পক্ষের নেতাকর্মীর ওপর লাঠিচার্জ শুরু করে। ফলে ছত্রভঙ্গ হয়ে পালিয়ে যায় নেতাকর্মীরা।
এদিকে রবিন সরকার অনুসারী পাঁচন্দর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি সারোয়ার ও মুন্ডুমালা পৌর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক অপূর্ব, ছাত্রলীগ নেতা তুসার থানা মোড় হয়ে বাড়ি ফেরার পথে বিএনপি থেকে সদ্য যুবলীগে যোগদানকারী ইব্রাহিমসহ বেশ কয়েকজন নামধারী আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা তাদের ওপর হামলা করে ব্যাপক মারধর করে। ঘটনার সময় খবর পেয়ে রবিন সরকার সেখানে গেলে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে।
বিষয়টি নিয়ে জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জুয়েল রানা জানান, রবিন সরকার ছাত্রলীগের থানা সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পাবার পর সংগঠনের গতি তরান্বিত করে। এতে সংগঠনটি চাঙা হয়ে উঠে। ফলে থানা পর্যায়ের নেতারা রবিন সরকারের বিরুদ্ধে সত্য মিথ্যা কথা লাগিয়ে সাংসদের কান ভারী করে। কিন্তু রবিন সরকার থানা ছাত্রলীগ চাঙা রেখে তার কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিল। এছাড়াও তানোর থানা সদরে অবস্থিত আওয়ামী লীগের পার্টি অফিসটি নির্মাণ করেন রবিন সরকার। দলের জন্য এতো কিছু করেও সাংসদ রবিন সরকারকে অবমূল্যায়ন করেছেন। ফলে রবিন সরকার সাংসদের আশেপাশে যাওয়া বন্ধ করে দেন। এতে করে সাংসদের সঙ্গে রবিন সরকারের দূরত্ব বাড়তে থাকে।
তিনি আরও জানান, মাসখানেক আগে তানোর থানা ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণা করা হয়। কমিটির সভাপতি করা হয় সানি নামের এক অছাত্রকে আর সাধারণ সম্পাদক হন শাওন। এই কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক পদ দেয়া হয় এক সময়ের থানা ছাত্রদলের নেতা ও পেট্রোল বোমা মামলার অন্যতম আসামী অমি সরকারকে। থানা ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা ছাড়াই নতুন কমিটি করার প্রতিবাদে রবিন সরকার শোকসভা ও কাঙালিভোজের আয়োজন করে। এতে সাংসদ ক্ষুব্ধ হয়ে তাকে গ্রেফতার করান।
সাংসদের এধরনের কর্মকা-ের ঘটনার নিন্দা করে প্রতিবাদ জানিয়েছেন, জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি অ্যাডভোকেট মুকবুল খাঁন, আওয়ামী লীগ নেতা অ্যাডভোকেট একেএম শওকত উদ্দীন রেন্টু ও অ্যাডভোকেট জালাল উদ্দীন, থানা কৃষক লীগের সভাপতি জাইদুর মেম্বারসহ আরও অনেকে।
এনিয়ে তানোর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রেজাউল ইসলাম বলেছেন, সাংসদের নির্দেশে রবিন সরকারকে গ্রেফতার করা হয়েছে। থানায় মামলা দায়ের করার প্রস্তুতি চলছে। তবে, কী মামলা দেয়া হবে, এসম্পর্কে বিষয়টি পরে জানানো হবে বলে জানান ওসি।
এব্যাপারে সাংসদ ফারুক চৌধুরী বলেন, থানা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে দ্বন্দ্ব নিয়ে পুলিশ রবিন সরকারকে গ্রেফতার করেছে। তবে, তার উপস্থিতিতে রবিন সরকারকে গ্রেফতার করার বিষয়টি সত্য নয় বলে দাবি করেন সাংসদ।