শনিবার, ৭ ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২২ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ ।
তানোর প্রতিনিধি:
রাজশাহীর তানোরে কৃষি বিভাগের পলিনেট হাউস (গ্রীণহাউস) প্রকল্প বাস্তবায়নে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় এলাকার কৃষকদের মাঝে চরম অসন্তোষ-উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে।
জানা গেছে, তিন ফসলি জমি বা গভীর-অগভীর নলকুপের স্কীমের সেচ সুবিধাভুক্ত জমিতে পলিনেট হাউস প্রকল্প বাস্তবায়নের কোনো সুযোগ নাই। কিন্ত্ত নীতিমালা লঙ্ঘন ও আর্থিক সুবিধার বিনিময়ে উপজেলার মোহনপুর গ্রামে পলিনেট হাউস প্রকল্প দেয়া হয়েছে।
জানা গেছে, পলিনেট হাউস তৈরি করা হয় নেট, পলি এবং লোহা বা বাঁশের অবকাঠামো দিয়ে।চারপাশে নেট দিয়ে ঘেরা হয়। আর ওপরের অংশে থাকে পলিথিন বা কোনো কোনো ক্ষেত্রে ত্রিপল। পলিনেট হাউস তৈরি করতে প্রয়োজন তাপমাত্রা সহনশীল বিশেষ পলিথিন ও তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণকারী মেশিন।
উপজেলার পাঁচন্দর ইউনিয়নের (ইউপি) মোহনপুর গ্রামের মৌসুমি বেগমের সেমি-ডিপের স্কীমের মধ্যে তিন ফসলি জমিতে পলিনেট হাউস প্রকল্প দেয়া হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে আর্থিক সুবিধার বিনিময়ে মোহনপুর গ্রামের রইস উদ্দিন টিপুকে পলিনেট হাউস প্রকল্প দেয়া হয়েছে। স্থানীয় কৃষক আকতার হোসেন ও রফিকুল ইসলাম অভিযোগ প্রকল্পের বিপরীতে প্রায় ২৪ লাখ টাকা বরাদ্দ থাকলেও মাত্র ৬ থেকে ৭ লাখ টাকার কাজ করা হয়েছে। সরেজমিন তদন্ত করা হলে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যাবে।
জানা যায়, যেসব উঁচু জমিতে সেচ সুবিধা নায় বৃষ্টি নির্ভর একটি ফসল উৎপাদন অথবা পতিত পড়ে থাকে। সেইসব জমিতে পলিনেট হাউসের মাধ্যমে উচ্চমূল্যের ফসল যেমন ক্যাপসিকাম, টমেটো, ব্রকলি, রকমেলন, রঙিন তরমুজ, রঙিন ফুলকপি ও বাঁধাকপি এবং লেটুস এসব সবজির পাশাপাশি চারা উৎপাদনের সুযোগ তৈরি করা হয়। এর ফলে সবজি চাষে যেমন বৈচিত্র্য আসবে, তেমনি অনেকেরই আয়ের নতুন উৎস হবে। পলিথিনের আচ্ছাদন থাকায় এতে সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি ভেতরে প্রবেশে বাধা পায় এবং অতিবৃষ্টি বা প্রাকৃতিক দুর্যোগেও ফসল অক্ষত থাকে। অসময়ে সবজি চাষের জন্য পলিনেট হাউস দেশে আধুনিক কৃষি প্রযুক্তির নতুন সংযোজন।
এবিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল্লাহ আহম্মেদ এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, যথাযথ নিয়ম অনুসরণ করে পলিনেট হাউস প্রকল্প দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন,এই পদ্ধতিতে প্রযুক্তির মাধ্যমে ভারী বৃষ্টিপাত, তাপ, কীটপতঙ্গ ও ভাইরাসজনিত রোগের মতও প্রতিকূল পরিস্থিতি থেকে নিরাপদে শাক-সবজি, ফল-মূলসহ কৃষি উৎপাদন সম্ভব।