তানোরে মুসুরের দাম কমে লোকশানের মুখে চাষিরা

আপডেট: ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০১৭, ১২:২০ পূর্বাহ্ণ

লুৎফর রহমান, তানোর



রাজশাহীর তানোরে প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে মুসুর ফলনের বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। অপরদিকে দামও কম থাকায় লোকশানের মুখে পড়েছে চাষিরা। উপজেলার সাতটি ইউনিয়ন ও দুইটি পৌরসভা জুড়ে এ ফলনের বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। ফলে উৎপাদন খরচ তুলতে হিমশিক খাচ্ছেন চাষিরা।
উপজেলা কৃষি অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, এ বছর উপজেলায় সাড়ে ১৩শ হেক্টর জমিতে মুসুর চাষ করা হয়েছে। বা¤পার  ফলনের স্বপ্ন দেখছিল কৃষকরা। কিন্তু সম্প্রতি প্রতিকূল অবহাওয়ার কারণে মুসুর খেতে পচন রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ায় ফলন বিপর্যয় দেখা দেয়। নামিধারী কোম্পানির কীটনাশক ব্যবহার করে কৃষকরা ফলন বিপর্যয়ের হাত থেকে তাদের উৎপাদিত ফসল রক্ষা করতে পারে নি।
সরজমিনে গতকাল সোমবার সকালে মু-মালা হাটে গিয়ে কথা হয় পাঁচন্দর গ্রামের কৃষক সাদিকুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি জানান, আমি ২ মণ মুসুর বাজারে বিক্রয় করতে নিয়ে এসেছি। দুইজন ক্রেতা (৪০) কেজিতে ১ মণ  দাম বলেছে ২ হাজার ৪শ টাকা । অপর আরেকজন ক্রেতা ২ হাজার ৫শ টাকা দাম বলায় তার কাছে বিক্রি করেছি। যা গত বছরের তুলনাই মণ প্রতি ২ হাজার ২শ টাকা কম পেয়েছি বলে জানান তিনি।
এ নিয়ে  চুনিয়াপাড়া  গ্রামের মুসুন চাষি শফিকুল ইসলাম জানান, আবহাওয়ার কারণে আমার ৫ বিঘা জমির মুসুর (ডাল)  পাতা পচঁন রোগে কবলে পড়ে। কীটনাশক ব্যবহার করে পঁচন রোধ করা গেলেও ফলন বিপর্যয় হয়েছে। প্রতি বিঘাতে ২ মণ করে মুসুর পেয়েছি। যা গত বছরের চেয়ে ৩ মণ কম হয়েছে।  তিনি অভিযোগ করে বলেন, মুসুর রক্ষার জন্য আমি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাদের সহযোগিতা পাই নি। আর না পেয়ে আমার নিজের অভিজ্ঞতায় বিভিন্ন কোম্পানির কীটনাশক ব্যবহার করে এ রোগ প্রতিরোধ করতে পারি নি। ফলে প্রতি বিঘাতে উৎপাদন খরচ বাবদ ২ হাজার টাকা করে লোকশান গুণতে হচ্ছে।
এ বিষয়ে কৃষিবিদ নুরুল ইসলাম জানান, ফল ধারার সময় প্রতিকূল অবহাওয়ার ছিল। আর সেই প্রতিকূল অবহাওয়ার কারণে মুসুরের ফুলগুলো নষ্ট হয়ে মাটিতে ঝরে পড়ে। আবার কৃষকরা না বুঝে ফুল গাছে ধরার সময় কীটনাশক স্প্রে করায় পরাগায়ন ব্যহত হয়েছে। এ কারণে ফলন বিপর্যয় হয়েছে বলে তিনি জানান।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম জানান, একদিকে প্রতিকূল অবহাওয়ার অপরদিকে বৃষ্টি না হওয়ায় গত বছরের চেয়ে এ বছর সামান্য কিছু ফলন কম হতে পারে। কিন্তু আমরা পচন প্রতিরোধের জন্য কৃষকদের সচেতন করতে পুরো উপজেলায় মাইকিং, লিফলেট বিতারন ও বিভিন্ন জায়গায় উঠান বৈঠক করে কৃষকদের কীটনাশক ব্যাবহারের পরার্মশ দিয়েছিলাম। আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগকারীর অভিযোগ সত্য নয় বলে তিনি দাবি করেন।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ