মঙ্গলবার, ২৮ মার্চ, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ১৪ চৈত্র, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ ।
নিজস্ব প্রতিবেদক
রাজশাহী অঞ্চলে শীতের তীব্রতা বাড়ছে। শরীরে শীতের অনুভূতি কাঁপুনি দিয়ে ওঠছে। মৌসুমের বয়ে যাওয়া শৈত্য প্রবাহ আর মৃদু হাওয়ায় শীত বেশি নগরীজুড়ে। ভোরের দিকে কুয়াশার চাঁদরে ঢাকা থাকছে নগরী। কিন্তু কিছুটা বেলায় সূর্যের প্রখরতা বাড়লে স্বস্তি ফিরছে জনজীবনে। এতে চরম বিপাকে পড়ছে খেটে খাওয়া শ্রমজীবী মানুষ। তারপরেও ভোর না হতেই শহরের পথে কাজের খোঁজে বের হতে দেখা যায় খেটে খাওয়া দিনমজুর ও শ্রমজীবীদের। এছাড়া ছিন্নমূল ও পথশিশুদের শীতে নাজেহাল অবস্থায় কাটছে। সকালের ঠা-া আর কুয়াশার মধ্যে স্কুলগামী ছোট ছোট ছেলেমেয়েরাও বিপাকে পড়ছে। তারপরেও গন্তব্যে পৌঁছাতে বের হওয়ার দায় রয়েছে সকলের।
শীতের সকালে স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা কাঁপতে কাঁপতে যাচ্ছে। এছাড়া ভোরে নগরীর রাস্তায় যানবাহনের সংখ্যা কম দেখা যায়। তবে বেলা গড়াতেই সূর্যের দেখা মিললে মানুষের সঙ্গে যানবাহনের সমাগম বাড়তে দেখা যায়। তবে বিকেল গড়াতেই শীতের তীব্রতা বাড়ছে। এতে চরম সঙ্কটে পড়েছেন নগরবাসী। তবে মধ্যবিত্ত ও ধনী শ্রেণির মানুষের তুলনায় দিনমজুর, শ্রমজীবী, ছিন্নমূল ও অসহায় মানুষদের জীবনজীবিকা কাটছে সঙ্কটাপূর্ণ পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে।
আবহাওয়া অফিসের তথ্য অনুযায়ী গতকাল শুক্রবার সকালে রাজশাহী অঞ্চলে মৌসুমের সর্বনি¤œ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৯ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগে গত রোববার মৌসুমের সর্বনি¤œ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৯ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রাজশাহী আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আশরাফুল আলম বলেন, ভোর ৬টায় মৌসুমের সর্বনি¤œ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। ওই সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯৭ শতাংশ। তবে দুপুর ১২টায় বাতাসের আর্দ্রতা দাঁড়ায় ৩০ শতাংশে। কিন্তু দিনের সর্বোচ্চ ও সর্বনি¤œ তাপমাত্রার পার্থক্য কমে আসায় শীত অনুভুত হচ্ছে খুব বেশি।
এ মৌসুমে রাজশাহী অঞ্চলে এখন মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। পৌষের এ হাড় কাপানো শীত, ঘন কুয়াশা আর হিমেল হাওয়ায় নগরীর মানুষের জীবনযাত্রা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। এরই মধ্যে গত মঙ্গলবার আকাশ থেকে নেমেছে বৃষ্টি। এখন দিনের বেশিরভাগ সময় সূর্যের দেখা না থাকায় শীতের তীব্রতা আরো বেড়েছে।
চিকিৎসকরা বলছেন, তীব্র শীতে শীতজনিত রোগির সংখ্যা বাড়ার আশংকা রয়েছে। এজন্য সকলকে সচেতনতা অবলম্বন করার পরামর্শ দেন। এজন্য আগে থেকেই শীতজনিত রোগ থেকে মুক্তির জন্য শীতের পূর্ব প্রস্তুতি ও সতর্ক থাকা প্রয়োজন। এদিকে রাজশাহীর স্থানীয় আবহাওয়া অফিসের কর্মকর্তারা বলছেন, সামনে শীতের তীব্রতা বাড়তে পারে। আরও সপ্তাহ খানেক মৃদু এ শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কয়েকদিন থেকে শীতের তীব্রতা বাড়ছে।
গতকাল সকালে নগরীর রেলগেট এলাকায় সিরাজুল ইসলাম নামের বৃদ্ধ দিনমজুর জানান, দিন আনি দিন খায়। তাই কাজের খোঁজে বাড়ি থেকে ভোরে বের হয়েছি। সকাল ১০টা বেজে গেল কাজ না হলে খাবো কী ? সংসারে পাঁচজন মানুষকে চালাতে হয়। কাজ পায়নি শীত বেশি থাকায়।