শনিবার, ২৫ মার্চ, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ১১ চৈত্র, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ ।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নিচের স্তরের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে অসহিষ্ণুতা, হঠকারিতা ও চাঁদাবাজির ঘটনা বাড়ছে। শুক্রবার দৈনিক সোনার দেশে এ সংক্রান্ত দুটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। একটি নওগাঁর মান্দার এবং অপরটি নলডাঙ্গার। দুটি ঘটনায় সেখানের স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে হঠকারিতার, চাঁদাবাজির।
প্রতিবেদন অনুযায়ী মান্দা উপপজেলায় স্থানীয় একটি ইটভাটায় ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে বুধবার দুই দফা হামলা ও ভাঙচুর চালায় কৃষকলীগ নেতা ও তার সহযোগীরা। আর এ চাঁদাবাজির মামলা থেকে বাঁচতে শিক্ষার্থীদের দিয়ে মানববন্ধন করানোর অভিযোগ উঠেছে।
২৫-৩০ জন যুবক একত্রিত হয়ে আবারো তার ভাটায় হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে। এসময় তারা ইটভাটার আগুন সরবরাহ বন্ধ করে দেয়। সংবাদ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পৌঁছে হামলাকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এ ঘটনার জের ধরে বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ক্লাস বন্ধ রেখে শিশইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশু শিক্ষার্থীদের দিয়ে ইটভাটাটি বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন করানো হয়।
অপর ঘটনাটি নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলায়। আওয়ামী লীগ নেতাদের না বলায় নাটোরে নলডাঙ্গায় আঞ্জুয়ারা বেগম (৭৫) নামে এক মৃত ব্যক্তির দাফন সম্পন্ন করতে দেয় নি বলে অভিযোগ উঠেছে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের নেতাদের বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় এলাকায় তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। পরে আঞ্জুয়ারার লাশ দাফনের জন্য বিলজোয়ানী বাশিলা উত্তরপাড়া করবস্থানে নেয়া হয়। এসময় পুনরায় কবর খনন করে রাত ১০টার দিকে আঞ্জুয়ারার দাফন সম্পন্ন হয়।
আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে মহাজোট সরকার যে মুহূর্তে বাংলাদেশকে একটি সমৃদ্ধশালী মর্যাদাপূর্ণ দেশ হিসেবে গড়ে তুলছে, সেই মুহূর্তে আওয়ামী লীগ নামধারীদের অনাকাক্সিক্ষত কর্মকা-ের ফলে সরকারের ভাবমূর্তি ভীষণভাবে ক্ষুণœ হচ্ছে। এক সময়ের তুচ্ছ-তাচ্ছিল্যের দেশ- বাংলাদেশের উন্নয়ন আজ উন্নয়কামী অনেক দেশের জন্য অনুসরণীয়। উন্নত দেশগুলোও এখন বাংলাদেশকে হিসেবের মধ্যে নিয়েই কর্মসূচি গ্রহণ করছে, আচরণ করছে। বাংলাদেশের উন্নয়নের বিষয়টি এখন শুধু আর বাংলাদেশের দাবির ব্যাপার নয়Ñ বিশ্বব্যাংকসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো বাংলাদেশের উন্নয়নকে ‘মিরাকল’ হিসেবে উল্লেখ করছে। এমন একটি সময়ে তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা অসহিষ্ণু ও হঠকারী আচরণ করতে থাকলে তা সরকারের সাফল্য- অর্জনকে ম্লান করে দিতে পারে। এমন অভিজ্ঞতা বাংলাদেশসহ বিশ্বের অনেক দেশেরই আছে। রাজনৈতিক কর্মীর নামে যে যারাই চাঁদাবাজি, উচ্ছৃঙ্খলতা ও হঠকারিতার আশ্রয় নিয়ে সাধারণ মানুষের ওপর নিপীড়ন চালাতে চায় তাদেরকে কোনোভাবেই ছাড় দেয়া যায় না। ওরা রাজনৈতিক কর্মী হতে পারে না, ওদের পরিচয় ওরা দুবৃত্তÑ আর দুর্বৃত্তের জন্য আইনি শাস্তিই প্রাপ্য।
উল্লিলিত দুটি ঘটনা তদন্ত করে এর সাথে জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে হবে। ওই ঘটনার জন্য দোষী প্রমাণিত হলে তাদের দল থেকে বহিস্কারই যথেষ্ট নয়- তাদের শাস্তির ব্যবস্থাও করতে হবে।