দিনাজপুরে মাঠে টিফিন ফেলে দিয়ে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

আপডেট: এপ্রিল ৪, ২০১৭, ১২:৩০ পূর্বাহ্ণ

দিনাজপুর প্রতিনিধি


 
দীর্ঘদিন থেকেই নিম্নমানের টিফিন সরবরাহ করায় অবশেষে বিক্ষোভে ফেটে পড়েছে মাধ্যমিক পর্যায়ে দিনাজপুর শহরে মেয়েদের একমাত্র সরকারি বিদ্যাপীঠ দিনাজপুর সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। প্রতিদিনের ন্যায় নিম্নমানের টিফিন সররবরাহ করায় সোমবার বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কর্তৃক সরবরাহকৃত টিফিন মাঠে ফেলে দিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে ওই বিদ্যলয়ের শিক্ষার্থীরা।
বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা জানায়, তাদের প্রতিজনের কাছ থেকে টিফিন ফি বাবদ প্রতিমাসে ৭০ টাকা করে নেয়া হয়। কিন্তু তাদের সপ্তাহে টিফিন দেয়া হয় পাঁচদিন। জানুয়ারি মাসে তাদের কোন টিফিন দেয়া হয়নি। এছাড়াও এসএসসি পরীক্ষা চলাকালীন এবং গ্রীষ্মকালীন ছুটি, রমজানমাসসহ অন্যান্য সময় স্কুল বন্ধ থাকলেও প্রতি মাসের টিফিন ফি ঠিকই আদায় করা হয়ে থাকে। কিন্তু এরপরও টিফিনের মান একেবারেই নিম্মমানের এবং পরিমান খুবই কম। নামে মাত্র টিফিন দিয়ে প্রতিমাসে টিফিন ফি আদায় করা হয় ঠিকই।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, তাদের যে টিফিন দেয়া হয়, তা খাবারের অযোগ্য এবং পরিমান একেবারেই কম। এ বিষয়ে কেউ অভিযোগ করতে চাইলে তাদের ফেল করিয়ে দেয়াসহ বিভিন্নভাবে হুমকী দেয়া হয় বলে জানান তারা। কিন্তু দীর্ঘদিন থেকে এসব খাবার অযোগ্য টিফিন সরবরাহ করায় বাধ্য হয়েই বেশ কয়েকবার তারা ক্লাস শিক্ষকসহ প্রধান শিক্ষককে অভিযোগ করে। কিন্তু কোন কাজ হয়নি। এই পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার প্রভাতী শাখায় টিফিন হিসেবে নিম্নমানের এবং গন্ধযুক্ত কেক সরবরাহ করতে গেলে শিক্ষার্থীরা বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠে এবং সব টিফিন স্কুল মাঠে ফেলে দিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভে প্রকম্পিত হয়ে উঠে গোটা স্কুল চত্বর।
শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, একই ফি-এর বিনিময়ে দিনাজপুর জিলা স্কুলে উন্নতমানের টিফিন দেয়া হলেও তাদের স্কুলে দেয়া হয়না।
শিক্ষার্থীরা এ বিষয়ে সাংবাদিকদের মৌখিক অভিযোগ করলেও বার বার তাদের নাম না প্রকাশ করার অনুরোধ জানায়। শিক্ষার্থীরা জানান, তাদের নাম সংবাদপত্রে আসলে তাদের পরীক্ষায় কম নম্বর দেয়াসহ বিভিন্ন নির্যাতন চালানো হবে।
এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক চন্দ্র শেখর ভট্টাচার্য্যকে ফোন করা হলে বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক লিয়াকত আলী ফোন রিসিফ করে জানান, স্যার অফিসেই আছেন কিন্তু তিনি কথা বলতে পারবেন না। তবে সহকারী শিক্ষক লিয়াকত আলী টিফিন নিয়ে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ এবং টিফিন স্কুল মাঠে ফেলে দেয়ার কথা স্বীকার করে জানান, সোমবারে টিফিন হিসেবে যে কেক দেয়া হয়েছিলো-সেই কেকগুলোর মান ঠিক থাকলেও ক্রিমের ফ্লেভার (গন্ধ) খারাপ ছিলো। ইতিপুর্বেও টিফিন নিয়ে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ প্রশ্নে তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে যে টাকা নেয়া হয়, তাতে এর চেয়ে ভালো টিফিন দেয়া সম্ভব হয় না। কিন্তু জিলা স্কুলে একই টাকায় কিভাবে ভালো টিফিন দেয়া হয়? এমন প্রশ্ন করা হলে সহকারী শিক্ষক লিয়াকত আলী জানান, এখানকার ছাত্রীরা ডালপুরি বা ভাজা জাতীয় টিফিন পছন্দ করেন না।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও দিনাজপুর জেলা প্রশাসক মীর খায়রুল আলমকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি জানান, এ বিষয়ে তাকে বিদ্যালয় থেকে কিছুই জানানো হয় নি। তবে সাংবাদিকদের কাছ থেকে বিষয়টি জানার পর তিনি বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন বলে জানান।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ