দীর্ঘদিন পর অভিভাবক-শিক্ষার্থীদের পদচারণায় মুখর ছিলো ত্রিমোহনী উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ

আপডেট: সেপ্টেম্বর ১৮, ২০২৪, ৮:২৪ অপরাহ্ণ

নওগাঁ প্রতিনিধি:


১৯৮৬সালে প্রতিষ্ঠিত নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার ঐতিহ্যবাহী ত্রিমোহনী উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের শিক্ষার মান উন্নয়ন ও ক্লাসে উপস্থিতি বৃদ্ধির লক্ষ্যে অভিভাবক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রায় ৭ বছর পর অভিভাবক সমাবেশ ঘিরে বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে বিভিন্ন কর্মসূচীর মাধ্যমে স্কুল প্রাঙ্গণে আয়োজিত সমাবেশস্থল মুখর হয়ে ওঠে।



সমাবেশে কাশিমপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো: মকলেছুর রহমান বাবুর সভাপতিত্বে ও বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) আব্দুল মোত্তালিবের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি মোহাইমেনা শারমীন।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নওগাঁ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী ও বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী প্রবীর কুমার পাল, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: তারিকুল ইসলাম, বিদ্যালয়ের প্রাক্তন সভাপতিগন, শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।

এসময় অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে প্রাক্তন শিক্ষার্থী ও নওগাঁ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী প্রবীর কুমার পাল বলেন শিক্ষার্থীদের বড় হওয়ার জন্য স্বপ্ন দেখতে হবে। আর সেই স্বপ্ন পূরণ না হওয়া পর্যন্ত নিরলস ভাবে পরিশ্রম করার কোন বিকল্প নেই। পরিশ্রমী হওয়ার পাশাপাশি একজন শিক্ষার্থীকে অবশ্যই বিনয়ী হতে হবে। আর শিক্ষার্থীর সেই স্বপ্ন পূরণে সারথী হিসেবে অভিভাবকদের ভূমিকা অপরিসীম।

তিনি আরো বলেন শিক্ষা-সেবা-কর্তব্য এই ৩টি নীতির উপর ভিত্তি করে আজ থেকে ‘ত্রিমোহনী উচ্চ বিদ্যালয় প্রাক্তন শিক্ষার্থী ফোরাম’ আত্মপ্রকাশ করছে, যে সংগঠনটি বিদ্যালয়ের গৌরব ফিরিয়ে আনতে এবং রাণীনগর উপজেলায় ত্রিমোহনী বিদ্যালয়কে শ্রেষ্ঠত্বের স্থানে নিয়ে যেতে সব সময় শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সাথে কাজ করবে। শিক্ষার্থীদের নিজের সন্তান মনে করে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করার জন্য তিনি শিক্ষকগণের প্রতি অনুরোধ জ্ঞাপন করেন।

প্রধান শিক্ষক আব্দুল মোত্তালিব বলেন, অভিভাবকদের জন্য স্কুলের দরজা সব সময় খোলা রয়েছে। আপনারা স্কুলে আসবেন, আপনার সন্তান কি করছে তার সঠিক খোঁজ-খবর নিবেন। অভিভাবকরা যতবেশি স্কুলে এসে খোঁজ-খবর নিবেন শিক্ষকরা তত বেশি পাঠদানের প্রতি যত্নশীল হবেন এবং সেই বিদ্যালয়ের সকল কার্যক্রম তত বেশি স্বচ্ছ হবে


বিশেষ অতিথি হিসেবে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম বলেন, শিক্ষার্থীদেরকে পড়াশুনার প্রতি মনোযোগী হতে হবে এবং অভিভাবকগণকে সেটার সঠিক তদারকি করতে হবে।

থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তারিকুল ইসলাম অভিভাবকদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনার সন্তানকে মাদক থেকে দূরে রাখবেন এবং বাল্য বিবাহ দিয়ে তাদের জীবনটা নষ্ট করবেন না। একজন সন্তানের প্রথম শিক্ষক হচ্ছেন তার মা ও বাবা। তারপর প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষকরা।

কাশিমপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মকলেছুর রহমান বলেন, আপনার সন্তান কে প্রাইভেটমুখী নয়, স্কুলমুখী করে গড়ে তুলন। প্রাইভেটের নেশা একজন মেধাবী শিক্ষার্থীর জন্য অনেক ক্ষতিকর। তাই চেস্টা করতে হবে পাঠ্য বইয়ের প্রতি মনোযোগী করতে।
প্রধান অতিথি মোহাইমেনা শারমীন বলেন, প্রথমেই প্রত্যক শিক্ষার্থীর মাকে তার সন্তানের কাছে একজন ভালো বন্ধু হতে হবে।

যে মা তার সন্তানের বন্ধু হতে পারবে, সে মা সেই সন্তানকে একজন আদর্শ মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে পারবে। এছাড়া সন্তানরা ক্লাসে নিয়মিত উপস্থিত হচ্ছে কিনা সেই বিষয়টি নিশ্চিত করতে অভিভাবকদের তদরকি করা প্রয়োজন। একজন শিক্ষার্থী যখন নিয়মিত তার ক্লাসে উপস্থিত হবে তখন সে দুর্বল ও অমনোযোগী হলেও একদিন সে মেধাবী হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলতে সক্ষম হবে। তাই একজন শিক্ষার্থীকে নিয়মিত ক্লাসে উপস্থিত হওয়ার কোন বিকল্প নেই।

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ