সোমবার, ২৯ মে, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ১৫ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ ।
এস এম শাহাজামাল, দুর্গাপুর:
ইতোমধ্যেই দুর্গাপুরের হাট-বাজারে উঠতে শুরু করেছে আগাম জাতের ‘মোজাফরপুরি’ বা দেশি লিচু। স্থানীয় বাজারসহ সারাদেশেই কদর রয়েছে এখানকার রসালো লিচুর। এ লিচু আকারে ছোট ও বিচি বড়। গত বছরের তুলনায় এবছর ৪৫ শতাংশ গাছে মকুল আসে। তার উপর তীব্র খরা ও বৈরী আবহাওয়ার কারণে লিচু আকারে কিছুটা ছোট হয়েছে। ফলে লিচুর ফলন মন্দায় চিন্তিত লিচু চাষিরা। তবে অন্যবারের চেয়ে এবার এসব আগাম জাতের এ লিচু ভালো দামে বিক্রি হচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, লিচুর গ্রাম হিসেবে পরিচিত উপজেলার আমগ্রাম, জয়নগর, শ্যামপুর, কুশাডাঙ্গা, আমগাছি, বধর্ণপুর গ্রামে ঢুকলেই চোখে পড়ে সারিসারি লিচুর বাগান। এ উপজেলার সিংগা বাজার, পৌরসভা গেট, উপজেলা মোড়, শ্যাপুর বাজার, আলিপুর বাজার, কানপাড়া বাজার, দাউকান্দি হাটে আগাম জাতের লিচু বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। দুর্গাপুরের লিচু সুস্বাদু ও রসালো হওয়ায় অনেকে কিনছেন।
আব্দুল করিম নামের এক বিক্রেতা জানান, চলতি সপ্তাহ থেকে বাজারে লিচু উঠা শুরু হয়েছে। এখনো বাজারে পর্যাপ্ত লিচু উঠেনি। যে লিচু এখন পাওয়া যাচ্ছে সেগুলো আগাম জাতের দেশি আটি লিচু নামে পরিচিত। এ লিচুর সুস্বাদু ও রসালো হলেও বিচি বড় ও আকারে ছোট। বোম্বাই ও চায়না লিচু উঠতে আরও ১০-১৫ দিন সময় লাগবে।
সিংগা হাটের লিচু বিক্রেতা একরাম আলী বলেন, প্রথম দিন তিন হাজার লিচু এনেছিলাম সব বিক্রি হয়ে গেছে। আজ মঙ্গলবার (১৫ মে) তিন হাজার লিচু এনেছি। সকাল থেকে বেচাকেনা শুরু হয়েছে। বিকেলের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে আশা করি।
আলিপুর বাজারের এরশাদ নামের এক ক্রেতা জানান, দেশি লিচু বাজারে এলে প্রতিবারই বাড়ির জন্য নিয়ে যাই। এবার কিনতে এসে দেখলাম গতবারের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ দামে বিক্রি হচ্ছে। গতবছর ১০০ দেশি লিচু ১৫০-১৭০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এবার লিচু বিক্রেতারা ১০০ লিচুর দাম হাঁকছেন ২৮০থেকে ৩২০ টাকা।
আক্তার নামের আরেক ক্রেতা বলেন, দেশি লিচু আকারে ছোট হলেও সুস্বাদু। অনেকে টক বলে কিনতে চাইছেন না। আসলে সব লিচু টক না। কিছু লিচু এখনো পরিপক্ব হয়নি। তবুও বাজারে আনা হয়েছে।
উপজেলার কৃষি অফিসের তথ্যমতে, দুর্গাপুরে এবার ৫০ হেক্টর জমিতে লিচুর বাগান রয়েছে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হয়েছে ১ হাজার ৫শত মেট্রিক টন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রহিমা খাতুন বলেন, স্থানীয়ভাবে দেশি বা আটি লিচু হিসেবে পরিচিত হলেও এটি মোজাফরপুরি জাতের লিচু। এ লিচুর বিচি বড় হয় ও আঁশ কম হয়। এগুলোর সাইজ ছোট-বড় হলেও পরিপক্ব। স্বাদ মিষ্টি ও হালকা টক-মিষ্টি।
তিনি আরো বলেন, বাজারে মোজাফরপুরি জাতের দেশি লিচু উঠা শুরু হয়েছে। এগুলো আগাম হয়। উপজেলায় ৮০ শতাংশ বোম্বাই লিচু ও ২০ শতাংশ দেশি লিচুর আবাদ হয়। বোম্বাই জাতের লিচু জ্যৈষ্ঠের মাঝামাঝিতে উঠা শুরু হবে।