দুর্নীতি রুখতে ইউপি চেয়ারম্যানের প্রতি অনাস্থা প্রস্তাব করায় নারী সদস্যকে হেনস্থার অভিযোগ

আপডেট: মার্চ ৬, ২০২৪, ১১:০১ অপরাহ্ণ


নিজস্ব প্রতিবেদক:রাজশাহী-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্যের ছত্রছায়ায় মোহনপুর উপজেলার ২ নং ঘাসিগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজাহারুল ইসলাম ওরফে বাবলুর সীমাহীন দুর্নীতি রুখতে অনাস্থা প্রস্তাব করায় এক নারী সদস্যকে হেনস্থার অভিযোগ উঠেছে।

বুধবার (৬ মার্চ) বিকেলে রাজশাহী ফটো জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করে এই অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীর পরিবার ও অনাস্থা প্রস্তাব করা ৯ জন ইউপি সদস্য।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন, খাসিগ্রাম ১ নং ওয়ার্ড সদস্য ও ২ নং প্যানেল চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম। এসময় তিনি বলেন, ২ নং ঘাসিগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজাহারুল ইসলাম ওরফে বাবলু সাবেক এমপির ভাই। এ প্রভাব খাটিয়ে ইউনিয়ন পরিষদের কোন উন্নয়ন কর্মকান্ডে কোন ইউপি সদস্যকে সম্পৃক্ত করেন না। এমন কি, ইউপি সদস্যদের মাসিক বেতন-ভাতাও দেন না। সাদা পাতার রেজুলেশন তৈরি করে পেশি শক্তি ও ভয়ভীতি দেখিয়ে স্বাক্ষর দিতে বাধ্য করেন।

সরকারের সামাজিক সুরক্ষা ও উন্নয়ন প্রকল্প এবং হোল্ডিং ট্যাক্সের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, এসব অন্যায়ের প্রতিবাদে ইউনিয়নের ১২ জনের মধ্যে ৯ জন সদস্যই অনাস্থা প্রস্তাব এনে ৫ মার্চ ইউনিয়ন পরিষদের হলরুমে সাধারণ সভা করে। যে সভায় প্যানেল-১ চেয়ারম্যান ইমরান হোসেন সভাপতিত্ব করেন। এ অনাস্থার কপি ঐদিন উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে জমা দেয়া হয়। এ অনাস্থা আনার পর গতকাল মঙ্গলবার (৫ মার্চ) রাত আনুমানিক সাড়ে ৮ টার দিকে চেয়ারম্যান আজাহারুল ইসলাম ওরফে বাবলু, ইউপি সদস্য সাফিজ উদ্দিন কবিরাজ, চেয়ারম্যানের ঘনিষ্টজন আমজাদ হোসেন এবং আব্দুল কুদ্দুস মন্ডলসহ ১০-১৫ ব্যক্তি ইউনিয়নের ৪, ৫ ও ৬ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত ইউপি মহিলা সদস্য তহমিনা বিবির বাড়িতে গিয়ে আটকে রেখে মানসিক নির্যাতন ও শারীরিকভাবে হেনস্থা করে জোরপূর্বক স্বাক্ষর নেয়। এরপর অচেতন অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

এসময় ঘটনার মামলার প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে জানিয়ে দুর্নীতিবাজ চেয়ারম্যান ও জড়িত ব্যক্তিদের শাস্তির দাবি জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, ২ নং ওয়ার্ডের সদস্য মো. আইনাল হক, ৩ নং ওয়ার্ড সদস্য মো. আ. সালাম,৭ নং ওয়ার্ড মো. এমরান হোসেন, ৯ নং ওয়ার্ড সদস্য মো. কাওসার আলী, মহিলা সদস্য মাবিয়া এবং মিনা খাতুন।

এ বিষয়ে ঘাসিগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজাহারুল ইসলাম ওরফে বাবলুর মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ না করায় বক্তব্য পাওয়া যায় নি।
এ বিষয়ে মোহনপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আয়েশা সিদ্দিকা বলেন, অনাস্থা প্রস্তাবের অভিযোগ দেয়া হয়েছে। এটা আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিবো। আর ওই এক নারী সদস্যকে হেনস্থার বিষয়টি মৌখিকভাবে জেনেছি এবং তাকে অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস দেয়া হয়েছে। তিনি অসুস্থ বলে জেনেছি, তার চিকিৎসার খোঁজ নেয়া হচ্ছে। তবে খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ