বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৭ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ ।
সোনার দেশ ডেস্ক
জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা খোমেনী ইহসান, সমন্বয়ক হাসান আরিফ, বিপ্লবী ছাত্র পরিষদের আহ্বায়ক আবদুল ওয়াহেদ ও সদস্য সচিব ফজলুর রহমান এবং বিপ্লবী ছাত্র পরিষদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক সানোয়ারা খাতুন। ছবি: সংগৃহীত
ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পরপরই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা দল গঠনের ঘোষণা দিয়েছিলেন। পরে সেখান থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে সরে এলেও ভেতরে ভেতরে সংগঠিত হওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা হাসনাত আব্দুল্লাহ, সারজিস আলম, আবদুল হান্নান মাসুদ, আবু বাকের মজুমদারসহ একটি পক্ষ অন্তর্র্বতী সরকারের ‘প্রেসার গ্রুপ’ হিসেবে কাজ করছে। আরেকটি পক্ষ ‘জাতীয় নাগরিক কমিটি’ করেছে। অন্যদিকে ‘জাতীয় বিপ্লবী পরিষদ’ নামে রাজনৈতিক দল গঠনে কাজ করছে আরেকটি পক্ষ। ইতিমধ্যে তাদের ছাত্র সংগঠন গঠিত হয়েছে। পেশাজীবী পরিষদ, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন উইং গঠনের কাজও চলমান।
জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের আনুষ্ঠানিক কমিটি না থাকলেও বিপ্লবী ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কমিটি আছে। তারা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কমিটি নিয়েও কাজ করছে। ইতিমধ্যে ৭ নভেম্বর বিপ্লব ও সংহতি দিবসে তারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরসি মজুমদার মিলনায়তনে ‘সিপাহী-জনতার ঐক্যে রাষ্ট্র পুনর্গঠন: জাতীয় নিরাপত্তায় নতুন প্রস্তাবনা’ শীর্ষক আলোচনা সভা করেছে।
৭ নভেম্বরের অনুষ্ঠানে প্রথমবারের মতো রাষ্ট্র পুনর্গঠনে সেনাবাহিনীকে ক্ষমতা কাঠামোতে সম্পৃক্ত হওয়ার আহ্বান জানানোসহ ছয় দফা প্রস্তাব দেওয়া হয়। প্রথম দফায় সেনাবাহিনীকে বর্তমান সংবিধান বাতিল করে অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে রাষ্ট্রপতি শাসিত অন্তর্র্বতীকালীন সরকার গঠনে সর্বাত্মক সহায়তা ও নিরাপত্তা প্রদান করতে বলা হয়।
দ্বিতীয় দফায় একটি শক্তিশালী জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদ গঠন করতে বলা হয়, যার চেয়ারম্যান অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের রাষ্ট্রপতি ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও ভাইস চেয়ারম্যান সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান হবেন। প্রস্তাবনা অনুসারে, এই পরিষদে প্রধান বিচারপতি, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, নৌ ও বিমান বাহিনী প্রধান, পুলিশ প্রধান, গুরুত্বপূর্ণ রাজনীতিক ও নাগরিকরাও অন্তর্ভুক্ত হবেন। জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের সিদ্ধান্তের আলোকে পুরাতন সংবিধান বাতিল এবং ফ্যাসিবাদী দল ও সংগঠনকে নিষিদ্ধ করবে।
তৃতীয় দফায় নতুন সংবিধান প্রণয়নে দ্রুত গণপরিষদ গঠন ও নির্বাচন পরিচালনা এবং পরবর্তীতে দ্রুত সংসদ নির্বাচনের পর নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা প্রদান তত্ত্বাবধান করার প্রস্তাব রাখা হয়।
চতুর্থ দফায় দেশের আর্থিক খাতের নিরাপত্তা তথা ব্যাংক, স্টকএক্সচেঞ্জ, আমদানি ও রপ্তানির লেনদেন সামরিক বাহিনীর মনিটরিং ও তত্ত্বাবধানে হওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়।
পঞ্চম দফায় দেশের সব উপজেলা পর্যন্ত স্থায়ীভাবে সেনা মোতায়েন করে সাম্প্রদায়িক ও জঙ্গি হামলাসহ জননিরাপত্তা সংক্রান্ত ইস্যুতে তাৎক্ষণিক সাড়া দেওয়ার ব্যবস্থা নিতে আহ্বান জানানো হয়। এক্ষেত্রে পুলিশ, র্যাব ও বিজিবির সহায়তা নিতে সেনাবাহিনীকে পরামর্শ দেওয়া হয়।
ষষ্ঠ দফায় সেনাবাহিনী, জনপ্রশাসনসহ রাষ্ট্রের সর্বত্র ফ্যাসিবাদের দোসর, দুর্নীতিবাজ ও দেশবিরোধীদের চিহ্নিত করে তাদের শূন্যপদে সাবেক দেশপ্রেমিক সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তাদের নিয়োগ প্রদান করতে প্রস্তাব রাখা হয়।
বিপ্লবী পরিষদে আছেন যারা
বিপ্লবী পরিষদে কারা আছেন? তাদের মূলমন্ত্র কী? নেপথ্যে কারা? এসব খুঁজতে গিয়ে বেরিয়ে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। জাপান থেকে এক আধ্যাত্মিক তরুণের নেতৃত্বে হচ্ছে সব। ১৯৬২ সালে ছাত্রলীগের গোপন সংগঠন ‘স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী পরিষদ’-এর মতোই এগুচ্ছে তারা। সিরাজুল আলম খানের মতো তাদের নেতা খোমেনী ইহসান নামের এক জাপানপ্রবাসী। তিনিই নতুন এই রাজনৈতিক দলের চিন্তক।
অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, জাতীয় বিপ্লবী পরিষদ খোমেনীকে ঘিরেই গঠন হচ্ছে। দেশে তার ভাই, ছাত্রজীবনের অনুসারী ও সতীর্থরা সরাসরি কাজ করছেন এই সংগঠনে। মূল সংগঠনে হাসান আরিফ নামের একজন সমন্বয়ক হিসেবে করছেন। তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অ্যাকাউন্টিংয়ে পড়াশোনা করেছেন। ২০০৭-২০০৮ সেশনে স্নাতকে (সম্মান) ভর্তি হওয়া আরিফ ২০১৪ সালে স্নাতকোত্তর শেষ করেছেন। তথ্যপ্রযুক্তি ও ই-কমার্স সংক্রান্ত প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন। কয়েক মাস আগে চাকরি ছেড়ে আমদানি-রপ্তানির ব্যবসা শুরু করেছেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক জানতে চাইলে জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের সমন্বয়ক হাসান আরিফ জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সম্পৃক্ত ছিলাম, নেতৃত্বে ছিলাম না। অর্থ, পরামর্শ ও সমর্থন দিয়ে পাশে ছিলাম। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা আমাদের ছোটভাই-বন্ধু। তবে, আমরা আমাদের চিন্তা থেকে রাজনৈতিক দল করছি। আমাদের ছাত্র সংগঠন বিপ্লবী ছাত্র পরিষদ।’
‘আমাদের মূল সংগঠন গোছাচ্ছি। এখনও কমিটি হয়নি। তবে ছাত্র সংগঠনের কমিটি দিয়ে দেওয়া হয়েছে।’
দৃশ্যপটে বিপ্লবী পরিষদ, নেপথ্যে কারা?
নিবন্ধনের বিষয়ে হাসান আরিফ বলেন, ‘নিবন্ধনের জন্য সময় লাগবে। এখানে তো কিছু শর্ত আছে। আগে সেগুলো পূরণ করি।’
‘৫৩ বছরের রাজনৈতিক জঞ্জাল এবং অসহিষ্ণুতাকে বিদায় করে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে পারস্পরিক যোগাযোগ ও সম্পর্ককে গুরুত্ব দিয়ে জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলবো।’-অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সাংবাদিক জাকির মজুমদার
উপনিবেশপূর্ব বাংলা সালতানাতকে ফিরিয়ে আনা
জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের প্রতিষ্ঠাতাদের একজন সাংবাদিক জাকির মজুমদার জাগো নিউজকে বলেন, ‘নতুন রাষ্ট্রকাঠামো ও রাজনৈতিক বন্দোবস্ত প্রতিষ্ঠায় নতুন ধারার রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্মকে এগিয়ে নেবো আমরা, ইনশাআল্লাহ। সমতা, ইনসাফ, মানবিক মর্যাদা নতুন রাজনীতির মূল ভিত্তি। গণতন্ত্র এবং মানবাধিকারের সর্বোচ্চ বিকাশকে আমরা প্রাধান্য দেবো। সমাজের প্রতিটি স্তরে সংস্কার, সভ্যতা, শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনবো।’
‘আমাদের রাজনৈতিক দর্শন উপনিবেশপূর্ব বাংলা সালতানাতকে ফিরিয়ে আনা। যে সালতানাত মুসলিম, হিন্দু, খ্রিস্টান, বৌদ্ধসহ সব জাতিগোষ্ঠীর সম্মিলনে প্রতিষ্ঠা লাভ করেছিলো। যেই সালতানাত ছিলো সমৃদ্ধ, সভ্য ও শৃঙ্খলাপুর্ণ। মুসলিম জাতীয়তাবাদ হবে বাংলা সালতানাতের প্রেরণার উৎস। বিশ্বের সব রাষ্ট্রের সঙ্গে আমরা সম-মর্যাদার ভিত্তিতে সম্পর্ক ও যোগাযোগ স্থাপন করবো ইনশাআল্লাহ। বিশেষ করে গোটা বিশ্বের মুসলিম দেশ ও মুসলিম কমিউনিটির সঙ্গে আমাদের রাজনীতি, অর্থনীতি, কূটনীতি, সংস্কৃতি, সামরিক, প্রতিরক্ষা তথা আত্মরক্ষার সম্পর্ক, যোগাযোগ স্থাপন, তথ্য বিনিময় এবং মুসলিম উম্মাহর বন্ধনকে মজবুত করবো।’
জাকির মজুমদার বলেন, ‘৫৩ বছরের রাজনৈতিক জঞ্জাল এবং অসহিষ্ণুতাকে বিদায় করে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে পারস্পরিক যোগাযোগ ও সম্পর্ককে গুরুত্ব দিয়ে জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলবো। চব্বিশের গণবিপ্লব এবং জনআকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করে অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক মুক্তির জন্য রাষ্ট্র মেরামত ও সংস্কারকে এগিয়ে নেবো। সব হাতকে কর্মীর হাতে রূপান্তর করে আধুনিক, সমৃদ্ধ এবং উন্নত রাষ্ট্রগুলোর কাতারে শামিল হতে আমরা কাজ করবো। বাংলাদেশের অখণ্ডতা, আত্মমর্যাদা, স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব এবং গণতান্ত্রিক চেতনাকে সর্বদা অক্ষুণ্ণ রাখবো ইনশাআল্লাহ।’ যোগ করেন জাকির মজুমদার।
বিপ্লবী ছাত্র পরিষদ গঠন
জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের ছাত্র সংগঠনের নাম বিপ্লবী ছাত্র পরিষদ। এরই মধ্যে এর কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটি গঠিত হয়েছে। আহ্বায়ক আবদুল ওয়াহেদ ও সদস্য সচিব ফজলুর রহমান। সংগঠনটির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আহ্বায়ক সানোয়ারা খাতুন।
বিপ্লবী ছাত্র পরিষদের আহ্বায়ক আবদুল ওয়াহেদ জাগো নিউজকে বলেন, ‘৫ আগস্টের বিপ্লবের পর বাংলাদেশ রাষ্ট্র পরিচালনায় নেতৃত্ব দেওয়ার লক্ষ্যে বিপ্লবী ছাত্র পরিষদ গঠন করা হয়েছে। আমাদের প্রধান প্রতিপক্ষ সন্ত্রাসী সংগঠন ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এখন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, ছাত্রশিবির এবং ইসলামী ও বাম ছাত্র সংগঠনগুলো ক্রিয়াশীল রয়েছে। ইনশাআল্লাহ, এসব সংগঠনকে ছাপিয়ে বিপ্লবী ছাত্র পরিষদই হয়ে উঠবে বাংলাদেশের প্রধান ছাত্র সংগঠন এবং মেধাতান্ত্রিক বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দেওয়ার প্রধান ভ্যানগার্ড। কারণ আমরা একই সঙ্গে সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশি মুসলিম সভ্যতার উত্তরাধিকারী এবং আধুনিক জ্ঞানবিজ্ঞান নির্ভর জেনারেশন। আমাদের সঙ্গে জাতীয় নেতৃত্বে অভিষিক্ত হওয়ার মধ্য দিয়ে মুসলিম বিশ্বের গণতান্ত্রিক অভিযাত্রার কান্ডারি হওয়া যাবে। আমাদের অগ্রযাত্রায় প্রাচ্য ও প্রতীচ্যের সভ্যতাগুলোরও সর্বাত্মক সহযোগিতা থাকবে ইনশাআল্লাহ।’
‘আমরা বিপ্লবী পরিষদ অনানুষ্ঠানিকভাবে এখন ক্ষমতায় সম্পৃক্ত আছি, কিন্তু উপদেষ্টা পরিষদে নেই এবং সচেতনভাবেই থাকব না। আমরা মূলত রাজপথ ও পলিসি লেভেলে সরকারপক্ষ।’- জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা খোমেনী ইহসান
কে এই খোমেনী ইহসান?
জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের চিন্তক খোমেনী ইহসান। শরীয়তপুরে জন্ম নেওয়া খোমেনী ইহসান পড়াশোনা করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে। তিনি ইসলামী ছাত্রশিবিরের রাজনীতিতে যুক্ত ছিলেন বলে বিশ্বস্ত সূত্র নিশ্চিত করেছে। ২০০৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘নির্যাতন প্রতিরোধ ছাত্র আন্দোলন’ সংগঠনের আহ্বায়ক ছিলেন। ছাত্রজীবনে তিনি দৈনিক নয়া দিগন্তের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করেছেন। ছাত্রজীবন শেষ করে দৈনিক আমার দেশ, যুগান্তরসহ বেশ কয়েকটি গণমাধ্যমে কাজও করেছেন। ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের রোষানলে পড়ে দেশত্যাগে বাধ্য হন তিনি। জুলাই বিপ্লবে তার অবদান ছিল। যেকোনো সময় তিনি দেশে এসে নতুন দলটির হাল ধরবেন বলে শোনা যাচ্ছে।
খোমেনী ইহসান জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমাদের বিপ্লবী পরিষদ ভূরাজনীতি ও ওয়ার্ল্ড অর্ডারের সঙ্গে সঙ্গতি রেখেই বাংলাদেশকে পুনর্গঠনের রাজনীতি করবে৷ আমরা যুক্তরাষ্ট্র, চীনসহ বিশ্ব নেতাদের নেতৃত্বকে সম্মান করি এবং তাদের শিক্ষা ও সহযোগিতা নিয়ে দেশ গড়তে চাই। আমাদের মধ্যে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক নিয়ে অস্পষ্টতা নেই। মূলত বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশকে কিভাবে নেতৃত্ব দিতে হবে এটিই আমাদের নেতাকর্মীরা আত্মস্থ করার চেষ্টা করছে এবং রাজপথ থেকে সংসদে ব্যবহারিকভাবে অর্জিত শিক্ষাকে কাজে লাগাবে। আমাদের মধ্যে বিশ্ব ব্যবস্থা, রাজনীতি, অর্থনীতি, সিকিউরিটি ও ক্ষমতা প্রশ্নে কোনো ভাববাদিতা, হটকারিতা, সংকীর্ণতা ও নির্বুদ্ধিতা নেই।’
খোমেনী ইহসান বলেন, ‘আমাদের যারা সমালোচনা করে তারা সম্ভবত বাংলাদেশে স্থানীয় রাজনৈতিক সংস্কৃতির জায়গা থেকেই বিরক্ত করে। মেধাতন্ত্রভিত্তিক বিপ্লবী পরিষদকে বোঝার জন্য লেখাপড়া করুন, তাহলে অন্তত নিজেদের উপকার হবে। আমরা পপুলিস্ট না, তবে গণবিচ্ছিন্নও নই, দুর্বলও নই। আমরা সংগঠন গড়ে তুলতে পারলে বড় বড় দলগুলোকে তাদের বসেরাই হুকুম দেবে আমাদের সঙ্গে সম্পর্ক করতে। কাজেই আমাদের চ্যালেঞ্জটা নিজেদের নিয়েই।’
বর্তমান অন্তর্র্বতী সরকারের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক নিয়ে খোমেনী ইহসান বলেন, ‘আমরা বিপ্লবী পরিষদ অনানুষ্ঠানিকভাবে এখন ক্ষমতায় সম্পৃক্ত আছি, কিন্তু উপদেষ্টা পরিষদে নেই এবং সচেতনভাবেই থাকব না। আমরা মূলত রাজপথ ও পলিসি লেভেলে সরকারপক্ষ।’
নয়া দলটির প্রাথমিক আহ্বান
জাতীয় বিপ্লবী পরিষদে যোগ দিতে ইতিমধ্যে আহ্বান জানিয়েছে দলটি। গুগল ফরম ছেড়ে সেখানে দেওয়া আহ্বানে তারা বলছে, ‘বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম। ২০২৪ এর আগস্ট বিপ্লবে সম্পৃক্ত বিপ্লবীদের রাজনৈতিকভাবে সংগঠিত ও ক্ষমতাসীন করতে জাতীয় বিপ্লবী পরিষদ গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, যেন বিপ্লবীরা রাষ্ট্র ও রাজনীতি সংস্কার এবং দলমত নির্বিশেষ জাতীয় সমঝোতা কায়েম করতে সক্ষম হয়। বিপ্লবীরা রাষ্ট্র পরিচালনার সর্বস্তর থেকে প্রতিবিপ্লবীদের উৎখাত করবে এবং বিপ্লবী সরকার গঠন করবে। বিপ্লবীরা জনগণতান্ত্রিক কর্তৃত্ব কায়েম করবে এবং গণশত্রুদের বিচারের মধ্য দিয়ে জনগণের সঙ্গে সব বৈরিতার অবসান ঘটাবে ইনশাআল্লাহ। মহান আল্লাহর প্রতি আমাদের সকল দায়বদ্ধতা নিবেদিত। আমরা জনগণের বিপ্লবের হেফাজতকারী। আমরা সর্বশক্তিমান আল্লাহর কাছে দ্বিতীয় স্বাধীনতা হেফাজতের তৌফিক কামনা করি। জাতীয় বিপ্লবে পরিষদে অন্তর্ভুক্ত হতে ইচ্ছুকরা নিচের ফরমটি পূরণ করে নিবন্ধিত হতে পারবেন।’
তথ্যসূত্র: জাগোনিউজ