শনিবার, ১২ জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২৮ আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ ।
নিজস্ব প্রতিবেদক:
এই প্রথম দেশের কোনো খেলোয়াড় ডাব্লুবিসি (প্রফেশনাল বক্সিং) এশিয়ান সিলভার বেল্ট জিতলেন রাজশাহীর উৎসব আহমেদ। ২০ বছর বয়সী এই তরুণ ডাব্লুবিসি এশিয়ান সিলভার বেল্ট জিতলেন।
যা দেশের ইতিহাসে প্রথম কেউ এই পুরস্কার পেলেন। বুধবার (৩০ মে) বিকেলে রাজশাহী নগরীর শিরোইল কলোনী এলাকার বাড়িতে গেলে বক্সার উৎসব আহমেদ বলেন, বক্সিং তো ওয়েটের খেলা। অনেকে দিন প্রশিক্ষণ নিয়েছি। কিন্তু কোন গেম পাইনি। আমার খেলা ও খেলার ধরণ সব কিছুই ভালো ছিল। কোচ শফিউল আলম মাসুদ স্যারও বলতেন আস্তে আন্তে হবে। চালিয়ে যাও। কখনও তিনি ও মামা জুয়েল হতাশ হতে দেয়নি। তারা বলেছে, আমার বক্সিংয়ের উপরে ভালো টান আছে। যা অন্য কোন খেলার মধ্যে নেই।
তরুণ এই বক্সার উৎসব আহমেদ আরও বলেন, শনিবার (২৫ মে) রাতে ঢাকার ইন্টার কন্টিনেন্টাল হোটেলে এই খেলাটি অুনষ্ঠিত হয়। বেক্সিমকো এক্সেল বক্সিং চ্যাম্পিয়ন্সশীপ (একবিসি) গেমসে ডাব্লুবিসি এশিয়ান সিলভার টাইটেলে চ্যাম্পিয়ন্সশিপে অংশ নেন উৎসবের সঙ্গে ৩২ বছর বয়সী ভারতীয় খেলোয়াড় মাজাহার হোসেন। তাকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স হওয়ার গৌরব অর্জন করেন উৎসব। হোটেল কন্টিনেন্টালে ৯টি ইভেন্টে (বাউটে) বাংলাদেশ, চীন, ভারত নেপালসহ এশিয়ার বিভিন্ন দেশের অন্তত ১৮ জন খেলোয়ার অংশ নেয় বিভিন্ন ওজন শ্রেণিতে।
বক্সিংয়ে অনুপ্রেরণার বিষয়ে উৎসব আহমেদ বলেন, তার বয়স ১০ বছরের কম। বিভিন্ন সময় বক্সার মামা জুয়েল আহমেদ জনি পুরস্কার নিয়ে রাজশাহীতে আসতেন। তখন মামাকে অনেকেই শুভেচ্ছা জানাতে রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনে এসে বসে থাকত। মামা আসার পরে অনেকেই মামাকে ফুল দিয়ে বরণ করে নিতেন। মামাকে মিষ্টি খাওয়ান। ঘারে তুলে মামাকে পুরো এলাকায় ঘুরিয়েছে। এই বিষয়গুলো তার অনেক ভালো লাগতো। তখন থেকেই বক্সিংয়ের প্রতি তার একটা আলাদা ভালোবাসা জন্মে। এরপরে আস্তে আস্তে মামার সাথে যেতে শুরু করলাম প্রশিক্ষণে। তখনও পরিবার চাই না আমি (উৎসব) বক্সিং খেলি। কারণ তার মা (আশা খাতুন) মারামারি খুব ভয় পান। তাই কখনও চাননি ছেলে বক্সিং খেলুক। তবে এখন চাই আমি বক্সিং খেলে আরও অনেক বড় খেলোয়াড় হই।
উৎসব জানান, তিনি ২০২২ সাল থেকে প্রফেশনাল ম্যাচে অংশ নিচ্ছেন তিনি। এখন পর্যন্ত ৯টি ম্যাচের সবকটিতেই তিনি জয়ী হলেন। আমার আশা আমি দেশের হয়ে বক্সিংয়ে অলিম্পিক স্বর্ন জয় করবো। সেই লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি। কোচ আমাকে আমাকে সেইভাবেই গড়ে তুলছেন। আমিও প্রচুর পরিশ্রম করে যাচ্ছি। তবে আর্থিক সঙ্কটে অনেক সময় ইচ্ছে থাকলেও সঠিকভাবে প্রস্তুতি নিতে পারি না।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ জাতীয় বক্সিং দলের কোচ শফিউল আজম মাসুম বলেন, উৎসব আহমেদের শুরুটা তার হাত দিয়ে। সে ছোট থেকে মনোযোগী। ভালো খেলা উপহার দেয়। মাঝখানে হঠাৎ করে প্রশিক্ষণ থামিয়ে দিয়েছিল। তার পরে তাকে আবার নিয়ে এসে প্রশিক্ষণ চালু করায়। সে আগামিতে আরও ভালো খেলবে দেশের হয়ে।
তিনি বলেন, উৎসব আহমেদের মত ছেলেরা উজ্জ্বল নক্ষত্র। এদের পাশে দাঁড়িয়ে আমাদের সার্পট দিতে হবে। যে সববিষয়ে পরিপূর্ণভাবে সহযোগিতা পেলে আগামিতে আরও ভালো করবে। আমাদের প্রত্যাশা আছে উৎসবকে নিয়ে আমরা অলেম্পিকে যাব। সেখানেও সে নিজের ভালোটা দেবে দেশের জন্য।