সোমবার, ২৭ মার্চ, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ১৩ চৈত্র, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ ।
নিজস্ব প্রতিবেদক
দেশে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে প্রতি ঘণ্টায় মারা যাচ্ছে ১৭ জনের বেশি রোগি। বছরে মারা যাচ্ছে দেড় লাখ মানুষ। প্রতি বছর ক্যান্সারে আক্রান্ত হচ্ছেন দুই লাখ মানুষ। গতকাল শনিবার বিশ^ ক্যান্সার দিবস উপলক্ষে নগরীর নানকিং দরবার হলে অনুষ্ঠিত জনসচেতনতামুলক সেমিনারে বক্তারা এসব তথ্য তুলে ধরেন।
বক্তারা জানান, দেশে বিশ^মানের চিকিৎসক ও ওষুধ আছে। আর একারণে দেশেই ক্যান্সারের আন্তর্জাতিক মানের চিকিৎসাসেবা দেয়া সম্ভব। তবে রেডিওলজি মেশিনসহ অন্য যন্ত্রপাতির অভাবে রোগিদের শতভাগ চিকিৎসা করা সম্ভব হচ্ছে না বলেও বক্তরা জানান।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, রাজশাহী মেডিকেল কলেজের (রামেক) সাবেক উপাধ্যক্ষ ও রেডিওলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. দায়েম উদ্দিন। রেডিওলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. অসীম কুমার ঘোষেল সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন, ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ রওশন আরা।
প্রধান অতিথি ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ ডা. দায়েম উদ্দিন জানান, ক্যান্সারের টিকিৎসা করার মতো অনেক চিকিৎসক এখন দেশে আছে। কিন্তু প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশের অনেক অভাব রয়েছে দেশে। রেডিওলজি মেশিন দেশে মাত্র দুই থেকে তিনটি স্থানে রয়েছে। রামেক হাসপাতালে যে মেশিনটি আছে তা দুই বছর নষ্ট পড়ে আছে। সে কারণে ক্যান্সার রোগিদের নানান ভোগান্তি পোহাতে হয়।
তিনি আরো বলেন, বেসরকারি পর্যায়ে রেডিওলজি মেশিনে চিকিৎসা নিতে আড়াই লাখ টাকা মতো খরচ পড়ে। অথচ সরকারিভাবে সেই থেরাপি নিতে এক জন রোগির খরচ হয় মাত্র ৮ হাজার টাকা। যদি কেউ বেসরকারিভাবে একটি রেজিওলজি মেশিন স্থপনের উদ্যোগ নেন তাহলে তার খরচ পড়বে প্রায় ২০ কোটি টাকা। এছাড়াও অন্য খরচ তো আছেই। কেউ ২০ কোটি টাকা বিনিযোগ করে লাভের আশা তো সে করবেই। সে কারণে বেসরকারিভারে এ থেরাপি নিতে গেলে রোগির খরচ অনেক বেশি বেড়ে যায়।
এ থেকে মুক্তির জন্য সরকারি পলিসির প্রয়োজন আছে। দেশের প্রতিটি জেলায় যদি একটি করে ক্যান্সার সেন্টার স্থাপন করে তাহলে রোগির চিকিৎসা শতভাগ করা সম্ভব।
অনুষ্ঠানে বক্তারা আরো জানান, দেশের সরকারি বড় বড় হাসপাতালগুলোতে যদি ক্যান্সারের ওষুধ বিনামুল্যে দেয়া যেতো তাহলেও অনেক মানুষের জীবন রক্ষা করা সম্ভব হতো। ক্যান্সার আক্রান্ত হয়ে অনেকেই বেশি দামে ওষুধ কিনতে পারে না বলে অকালে ঝরে পড়ে। তারা সরকারের কাছে বিষয়গুলো বিবেচনার জন্য আবেদন জানিয়েছেন।
অনুষ্ঠানে ক্যান্সার বিজয়ী কয়েকজন উপস্থিত থেকে নিজেদের জীবন সংগ্রামের কথা উপস্থিতদের সামনে তুলে ধরেন। এদের মধ্যে ছিলেন, ক্যান্সার জয়ী সুলতানা ফৌরদৌসী, জীবন নাহার, ক্যান্সার জয়ী রুবিয়ার স্বামী আব্দুর রউফ ও ক্যান্সার আক্রান্ত পিতার ছেলে সাংবাদিক কাজী নাজমুল হোসেন।
অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন, দৈনিক সোনার দেশের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক আকবারুল হাসান মিল্লাত, ডা. রেজওয়ানুল কাদের, সেবিকা রোকেয়া বেগম প্রমুখ। অনুষ্ঠানে বক্তারা বিনামুল্যে ওষুধ ও রেডিওলজি মেশিন সরবরাহের দাবি জানান।