মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৭ মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ ।
নিজস্ব প্রতিবেদক:
দেশের নদী তথ্য আপডেট এবং আইটি ব্যবস্থাপনা শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (২০ মে) দুপুরে রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে এ কর্মশালার আয়োজন করা হয়।
বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (BWDB) এবং সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্টাল এন্ড জিওগ্রাফিক ইনফরমেশন সার্ভিসেস (CEGIS) এর যৌথ উদ্যোগে Updating the Information of the Rivers in Bangladesh and its IT-Based Management শীর্ষক সমীক্ষা প্রকল্পের ফলাফল চূড়ান্ত করার লক্ষ্যে এ সেমিনারের আয়োজন করা হয়।
মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন, সিইজিআইএস ডেপুটি টীম লিডার ও সিনিয়র স্পেশালিস্ট ড. জাকিয়া আক্তার। স্বাগত বক্তব্য রাখেন, বাপাউবো পরিকল্পনা-১ পরিদপ্তরের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (পুর) ড. রবীন কুমার বিশ্বাস।
কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার (অতিরিক্ত সচিব) ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর বলেন, এখন আমাদের ওয়াটার লেভেল নিচে নেমে যাচ্ছে। বাঘা, চারঘাট, তানোর এলাকাগুলো জটিল অবস্থায় আছে। তাপমাত্রাও বাড়ছে।
তিনি বলেন, ৪৫৪ কোটি বছরের ইতিহাস পযালোচনা করলে দেখা যায়, পৃথিবীতে পানি ১ হাজার ৩০০ পানি নিয়ে যুদ্ধ হয়েছে। বস্তুচ্যুত হয়েছে ৭০ কোটির বেশি। ব্যাবিলনীয় রাজা হাম্বুরাবির শাসনকাল থেকে এখন পর্যন্ত পানি নিয়ে ছোট-বড় ৯২৫টি সংঘাতের তালিকা তৈরি করেছেন ওকল্যান্ডভিত্তিক প্যাসিফিক ইনস্টিটিউটের প্রধান পেটার গ্লিক ও তার দল। যদিও তালিকায় ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণ আসে নি। কিন্তু পানি ও সংঘাতের মধ্যে এক জটিল সম্পর্ক রয়েছে।
কমিশনার আরও বলেন, ‘বিবিসি ফিউচারকে পিটার প্লিক বলেন, পানি সংঘাতকে আমরা তিনটি গ্রুপে শ্রেণিভুক্ত করেছি। প্রথমত, সংঘাতের কারণ, যেখানে পানির নিয়ন্ত্রণের বিতর্কের সঙ্গে সংঘাত জড়িয়ে আছে। দ্বিতীয়ত, সংঘাতের অস্ত্র হিসেবে পানির ব্যবহার। যেখানে সংঘাত ও সংঘাতের অস্ত্র হিসেবে পানি সম্পদ ব্যবহার করা হয়েছে। পানি ধরে রাখতে কিংবা ভাটি অঞ্চলে বন্যা তৈরি করতে বাঁধের ব্যবহার। তৃতীয়ত, সংঘাতের নিশানা কিংবা প্রাণহানি।
অর্থাৎ যেখানে সংঘাতের কারণে পানি সম্পদ, পরিশোধনাগার ও পাইপলাইন হামলার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়। যদি এ শতাব্দিতে তেল নিয়ে যুদ্ধ হয়ে থাকে, তাহলে আগামী শতকে সেই যুদ্ধ হবে পানি নিয়ে, যদি না আমরা এই মূল্যবান ও গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ ব্যবস্থাপনায় আপনাদের আচরণে কোনো পরিবর্তন আনতে না পারি। সুতরাং পানি নিয়ে ভাবনা আর না আর না। আমরা পানি নিয়ে আমরা ভাবছি। আশা করছি, এ ভাবনা ইতিবাচক সুখবর নিয়ে আসবে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাপাউবো অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. মুখলেসুর রহমান। সেমিনারে রাজশাহী প্রশাসক শামীম আহমেদসহ ৮ জেলার জেলা প্রশাসকসহ অন্যান্যা কর্মকর্তা ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (বাপাউবো) ২০০৫ সালে মাঠ পর্যায়ের তথ্য ভিত্তিতে ৩১০ টি নদী চিহ্নিত করে। পরে ৩০ মিটার রেজ্যুলেশনের ল্যান্ডস্যাট স্যাটেলাইট ইমেজ ব্যবহার করে ৪০৫ টি নদী চিহ্নত করে। ২০২৩ সালে ১০ মিটার রেজ্যুলেশনের ল্যান্ডস্যাট স্যাটেলাইট ইমেজ ব্যবহার করে ৭৫৬ টি নদীর তথ্য পেয়েছে। সেমিনারে বক্তারা নদীর প্রকৃত সংখ্যা অনুসন্ধানে বিভিন্ন পরামর্শ দেন।