দেশে ২০ ভাগ অকাল মৃত্যুর কারণ বায়ু দূষণ বায়ু দূষণে প্রতিরোধে সমন্বিত পদক্ষেপ চাই

আপডেট: মার্চ ৩০, ২০২৩, ১২:১৪ পূর্বাহ্ণ

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, পৃথিবীতে প্রতিবছর সড়ক দুর্ঘটনা, ধূমপান এবং ডায়াবেটিস- এ তিনটি কারণে যে পরিমাণ মানুষ মারা যায়, তারচেয়ে বেশি মানুষ মারা যায় বায়ুদূষণের কারণে। বিশ্ব ব্যাংকের ‘বিশুদ্ধ বায়ু পাওয়ার চেষ্টা: দক্ষিণ এশিয়ায় বায়ু দূষণ ও জনস্বাস্থ্য’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদনে বাংলাদেশের তেমনি তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। তথ্য অনুযায়ী দেশে ২০ ভাগ অকাল মৃত্যুর কারণ বায়ু দূষণ। বায়ু দূষণ শিশুদের বিকাশ বাধাগ্রস্ত করে। দূষণে শ্বাসনালীর বিভিন্ন রোগ এবং দীর্ঘস্থায়ী স্বাস্থ্যঝুঁকির কারণ তৈরি হয় বলে গবেষণায় ওঠে এসেছে। এতে সামগ্রিকভাবে স্বাস্থ্য সেবার খরচ বেড়ে যায়; উৎপাদনশীলতা কমে যায় এবং অনেক কর্মঘণ্টা নষ্ট হয়।
রাজধানীর একটি হোটেলে ২৮ মার্চ বিশ্বব্যাংক থেকে প্রকাশ করা এক গবেষণা প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। গবেষণায় বায়ুদূষণ রোধে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার জন্য শক্তিশালী রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অঙ্গীকার দরকার বলে মন্তব্য করা হয়।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত দশ শহরের নয়টিই দক্ষিণ এশিয়ায়, তার মধ্যে ঢাকা একটি। প্রতি ঘনমিটার বাতাসে পাঁচ মাইক্রোগ্রাম পর্যন্ত দূষণকারী কণার উপস্থিতি থাকলে তা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মান অনুযায়ী গ্রহণযোগ্য ধরে নেওয়া হয়। অথচ দক্ষিণ এশিয়ার অনেক ঘনবসতিপূর্ণ ও দরিদ্র এলাকাতেই দূষণের মাত্রা অন্তত ২০ গুণ বেশি। এতে দক্ষিণ এশিয়ায় প্রতি বছর অন্তত ২০ লাখ মানুষের অকাল মৃত্যু হয়। একই কারণে উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক ক্ষতির সম্মুখিন হতে হয়।
বিশ্ব ব্যাংক মনে করে, এ অঞ্চলের বিদ্যুৎ কেন্দ্র, বৃহৎ কারখানা ও পরিবহন খাতের ওপর নজর দিয়ে নীতিগত ব্যবস্থা নিলে ‘আংশিক সাফল্য’ পাওয়া যেতে পারে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বৃহত্তর অগ্রগতির জন্য কৃষি, আবাসিক রান্না ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনার দিকেও দৃষ্টি দিতে হবে নীতিনির্ধারকদের। সমন্বিত পদক্ষেপের মাধ্যমে দক্ষিণ এশিয়ায় বছরে প্রায় সাড়ে সাত লাখ মানুষের জীবন বাঁচানো সম্ভব- বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
বায়ু দূষণের ফলে স্বাস্থ্যরে ক্ষতি হয়, পরিবেশ এবং সম্পদও নষ্ট হয়। এর ফলে বায়ুম-লে ওজোন স্তর পাতলা হয়ে যায়। এর প্রভাব পড়ে জলবায়ুর ওপর এবং তা বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তনেরও কারণ হয়। শিল্প, যানবাহন, জনসংখ্যার বৃদ্ধি এবং নগরায়ন বায়ু দূষণের কয়েকটি প্রধান কারণ। এ ক্ষেত্রে বিশ্বব্যাংকের পরামর্শ ধরে এগানো যায়। সমন্বিত পদক্ষেপ নিয়েই বায়ু দূষণের কর্মকৌশল গ্রহণ করতে হবে। একই সঙ্গে জনসচেতনতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বায়ুদূষণ প্রতিরোধে গণমানুষের সম্পৃক্ততা অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ