দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের গুরুত্ব

আপডেট: জানুয়ারি ৬, ২০২৪, ১২:১০ পূর্বাহ্ণ

রাজনীতিতে অসাম্প্রদায়িক ধারা বজায় রাখতে হবে

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নানান দিক থেকেই গুরুত্বপূর্ণ। অধিক গুরুত্বের বিষয় হলো বাংলাদেশ কী গণতন্ত্রের পথে অসাম্প্রদায়িক ধারায় থাকবে, না-কী আবারো সাম্প্রদায়িক মৌলবাদের খপ্পরে পড়বে। এটা স্পষ্টত যে, দেশের জাতীয় রাজনীতিতে দুটি ধারা বিরাজমান। অসাম্প্রদায়িক রাজনীতি যা মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনার মধ্য দিয়ে উদ্ভুত ধারার নেতৃত্ব দিচ্ছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। অন্যদিকে সাম্প্রদায়িক-মৌলবাদী ধারার নেতৃত্ব দিচ্ছে বিএনপি-জামায়াত। পঁচাত্তরের পটপরিবর্তনের মধ্য দিয়ে সাম্প্রদায়িক-মৌলবাদী রাজনৈতিক ধারার উত্থান ঘটে। অর্থাৎ বাংলাদেশের সংবিধানে ধর্ম নিয়ে রাজনীতি নিষিদ্ধের ধারা রহিত করে স্বাধীনতাবিরোধীদের রাজনীতিতে পুনর্বাসন করা হয়। সামরিক শাসক জিয়াউর রহমানের বদন্যতায় দেশে মৌলবাদী শক্তি রাজনীতিতে সংগঠিত হওয়ার সুযোগ লাভ করে। এই রাজনৈতিক ধারা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিপরীতে চালিত হয়েছে। অসংখ্য কর্মকাণ্ড থেকে এর বহুল উদাহরণ দেয়া যায়। আবার মুক্তিযুদ্ধবিরোধী ধারার সাথে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সখ্যতা স্বাধীনতার পূর্ব ও পরবর্তীকালে সব সময় ছিল। তাদের পৃষ্ঠপোষকতা ও সহযোগিতায় দেশে মুক্তিযুদ্ধবিরোধী বা সাম্প্রদায়িক-মৌলবাদী রাজনৈতিক ধারা শুধু উজ্জীবিতই হয়নি- রাষ্ট্র ক্ষমতায় পর্যন্ত এসেছে। জাতির দুর্ভাগ্য যে, স্বাধীনতা বিরোধীরা স্বাধীন বাংলাদেশে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী ও সংসদ সদস্য হয়েছেন।

প্রশ্ন উঠতেই পারে যে, দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন তো আওয়ামী লীগ জোট এবং সমমনা দলগুলোই করছেÑ এর সাথে সাম্প্রদায়িক-মৌলবাদী শক্তির কী সম্পর্ক। এই শক্তিই একাট্টা হয়ে সংসদ নির্বাচন প্রতিরোধের ডাক দিয়েছে। শুধু ডাক দিয়েই ক্ষান্ত নয় তারা, ভোট যাতে না হতে পারে তার জন্য সব রকমের কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে। এসব কর্মকাণ্ডের মধ্যে সারা দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির চেষ্টাও আছে। নির্বাচন বানচাল করা গেলে দেশকে সাংবিধানিক সঙ্কটের মধ্যে নেয়া যাবে। যা সম্ভব হলে গণতান্ত্রিক ধারা সমুন্নত রাখা বেশ চ্যালেঞ্জে মুখে পড়বে। এতে জনস্বার্থবিরোধী অপশক্তির উত্থান ঘটার আশংকাও থাকে। দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের আঁতাত আরো শক্তিশালী হয়ে উঠতে পারে। বাংলাদেশে অসাম্প্রদায়িক ধারা বজায় রাখতে হলে সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন সম্পন্ন করার অন্য কোনো বিকল্প নেই। কোনোভাবেই সাংবিধানিক ধারার ব্যত্যয় ঘটানো যাবে না।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ