বুধবার, ১৪ মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৩১ বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ ।
সোনার দেশ ডেস্ক :
দক্ষিণ গাজার আল মাওয়াসির মাটিতে এখনও টাটকা ইসরায়েলি ট্যাঙ্কের চাকার দাগ। বাতাসে বারুদের গন্ধ। উপড়ে যাওয়া মৃত একটি টোমাটো গাছ তুলে ধরলেন প্যালেস্টাইনি কৃষক নেদাল আবু জাহের। ক্লান্ত গলায় বললেন, এই হল ধ্বংসের নমুনা। আমরা সাধারণ কৃষক, হঠাৎ এক দিন ট্যাঙ্ক এসে গোলাবর্ষণ শুরু করল, শুরু হল ক্ষেপণাস্ত্র হানাও।”
আবু জাহেরের পিছনে পড়ে রয়েছে তাঁর গাছঘরের(গ্রিনহাউস) ধ্বংসাবশেষ। জাহের সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ইসরায়েল কিন্তু এই এলাকাটিকে মানবিক ক্ষেত্র ( হিউম্যানিটারিয়ান জোন) হিসেবে চিহ্নিত করেছিল।
আবু জাহের একা নন। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েল-হামাস সংঘর্ষ শুরু হওয়া ইস্তক সমগ্র গাজা জুড়ে প্রায় ৫৭ শতাংশ কৃষিজমি ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংগঠন (ফুড অ্যান্ড এগ্রিকালচারাল অর্গানাইজেশন) ও কৃত্রিম উপগ্রহ সংগঠন ইউএনওস্যাট-এর যৌথ ভাবে প্রকাশিত একটি রিপোর্টে সম্প্রতি তা জানা গিয়েছে। এফএও-এর ম্যাটিউ হেনরি স্পষ্ট জানিয়েছেন, প্যালেস্টাইনের ৩০ শতাংশ অন্নসংস্থান হয় কৃষিক্ষেত্র থেকে। সেগুলি ধ্বংস হয়ে গিয়েছে।
২০২২ সালেও গাজা প্রায় ৪ কোটি ৪৬ লক্ষ টাকার কৃষিপণ্য রফতানি করেছে ইসরায়েল, ওয়েস্ট ব্যাঙ্ক-সহ বিশ্বের বিভিন্ন অংশে। তার মধ্যে স্ট্রবেরি ও ট্যোমাটো অন্যতম। সংঘর্ষ শুরু হতেই সেই রফতানির পরিমাণ কমে হয়েছে শূন্য। কৃষিজমিতে চলছে তখন গোলাবর্ষণ। জাতিসংঘের মতে, গাজায় চলতে থাকা খাদ্যের হাহাকারের পিছনে এই ধ্বংসলীলা প্রবল ভাবে দায়ী।
ইসরায়েলি সেনার অবশ্য দাবি, ইচ্ছে করে কৃষিজমি, ফলের বাগানে আক্রমণ করা হয়নি। হামাস সশস্ত্র সেনা বেশির ভাগ এই সব এলাকাগুলি থেকেই হামলা চালায়। মানবাধিকার কর্মীদের একাংশের দাবি, হামাসের ভয় দেখিয়ে ইসরায়েল আসলে গাজাকে খাদ্যশূন্য করে নিশ্চিহ্ন করে দিতে চাইছে। গাজ়া কার্যত ধুঁকছে, তবু অব্যাহত ইসরায়েলি হামলা।
তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার অনলাইন