নওগাঁয় পদত্যাগে বাধ্য করতে প্রধান শিক্ষিকাকে বেঁধে দিনভর নির্যাতন

আপডেট: সেপ্টেম্বর ১২, ২০২৪, ৮:৫৩ অপরাহ্ণ

সোনার দেশ ডেস্ক


নওগাঁর ধামইরহাট উপজেলায় পদত্যাগে বাধ্য করতে প্রধান শিক্ষিকা ও তার স্বামীকে শ্রেণিকক্ষে দড়ি দিয়ে বেঁধে দিনভর নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে।মঙ্গলবার সকাল থেকে উপজেলার খেলনা ইউনিয়নের রেড়িতলা একাডেমিতে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে সন্ধ্যায় সেনাবাহিনী ও পুলিশ গিয়ে নির্যাতনের শিকার দুই শিক্ষককে উদ্ধার করে বলে ধামইরহাট থানার ওসি বাহাউদ্দীন ফারুকী জানান।



তাদেরকে উদ্ধারের পর মঙ্গলবার রাত ৮টায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। এরপর অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসক তাদের রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করেন।

নির্যাতনের শিকার জিন্নাতুন পারভীন ডলি রেড়িতলা একাডেমির প্রধান শিক্ষিকা এবং তার স্বামী আশরাফুল হক উপজেলার আড়ানগর ইউনিয়নের পলাশবাড়ী চিমুনিয়া দাখিল মাদরাসার সহকারী (কম্পিউটার) শিক্ষক।

জিন্নাতুন পারভীন ডলি বুধবার সাংবাদিকদের বলেন, “মঙ্গলবার সকালে কর্মস্থলে গেলে বিদ্যালয়ের সহকারী (কম্পিউটার) শিক্ষক কাওছারের নেতৃত্বে কয়েকজন শিক্ষার্থী ও অভিভাবক পদত্যাগের জন্য চাপ দিতে থাকে। পদত্যাগ করতে না চাওয়ায় বিদ্যালয়ের একটি কক্ষে নিয়ে দড়ি দিয়ে বেঁধে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত আমাকে নির্যাতন করা হয়।”

“আমাকে বাঁচাতে আমার স্বামী এগিয়ে এলে তাকেও বেঁধে নির্যাতন করা হয়।”
শিক্ষক আশরাফুল হক বলেন, “সকালে স্ত্রীকে পৌঁছে দেওয়ার জন্য স্কুলে গেলে আমাদেরকে ভয়ভীতি দেখিয়ে বেঁধে রাখা হয়। হামলাকারীরা আমার অণ্ডকোষসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় নির্যাতন করেছে।”
দুজনের শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম করা হয়েছে বলে জানান আশরাফুল হক।

ধামইরহাট থানার ওসি বাহাউদ্দীন ফারুকী বলেন, “স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা শেখ মো. আব্দুল্লাহ আল মামুনকে নিয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা সেখানে যান এবং স্বামীসহ প্রধান শিক্ষিকাকে উদ্ধার করা হয়।”

তবে এখন পর্যন্ত ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি বলে জানান ওসি।
ধামইরহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আসমা খাতুন বলেন, “এক সপ্তাহ আগে রেড়িতলা স্কুলের প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগের দাবিতে শিক্ষার্থীরা উপজেলা পরিষদ চত্বরে মানববন্ধন করে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দেয়। এ পরিপ্রেক্ষিতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি সোমবার কাজও করেছে।

“এর মধ্যে মঙ্গলবার সকালে প্রধান শিক্ষিকা স্কুলে গেলে পদত্যাগের জন্য চাপ দেওয়া হয়েছে বলে জেনেছি। তিনি পদত্যাগ করতে না চাওয়ায় বিদ্যালয়ের একটি কক্ষে অবরুদ্ধ করে রাখার বিষয় জানতে পেরে প্রশাসনের পক্ষ থেকে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় তাদের উদ্ধার করা হয়েছে।”
অভিযোগের ব্যাপারে জানতে রেড়িতলা একাডেমির সহকারী (কম্পিউটার) শিক্ষক কাওছারের মোবাইল কল করলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।
তথ্যসূত্র: বিডিনিউজ

Exit mobile version