নওগাঁয় প্রগ্রেসিভ লাইফ ইনস্যুরেন্স টাকা ফেরত না দেয়ায় গ্রাহকদের ভোগান্তি

আপডেট: মে ১৪, ২০২৪, ১১:৪৭ পূর্বাহ্ণ


আব্দুর রউফ রিপন, নওগাঁ প্রতিনিধি:


বিমার মেয়াদ পূর্ণ হলেও গ্রাহদের টাকা ফেরত দিচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে নওগাঁর প্রগ্রেসিভ লাইফ ইনস্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড-এর বিরুদ্ধে। টাকা পেতে গ্রাহকরা দিনের পর দিন বিমা অফিসে ধর্না দিয়েও কাজ হচ্ছে না। গ্রাহকদের আশংকা তাদের জমাকৃত টাকা নিয়ে বিমা প্রতিষ্ঠানটি উধাও হয়ে যেতে পারে।

জানা গিয়েছে, ২০১৪ সাল থেকে নওগাঁ শহরের হোটেলপট্টির আমিন মার্কেটের তৃতীয় তলায় প্রগ্রেসিভ লাইফ ইনস্যুরেন্স কোম্পানি লি. এর অফিস। নিরাপদ ভবিষ্যতের জন্য শত শত গ্রাহক এই প্রতিষ্ঠানে টাকা সঞ্চয় করেছে। গ্রাহকদের অনেকের বিমার মেয়াদ পূর্ণ হয়েছে। তারা তাদের প্রতিশ্রুত টাকা নেয়ার জন্য অফিসে যোগাযোগ করেও পাচ্ছেন না। টাকা না দিয়ে বিভিন্ন ভাবে তালবাহানা করা হচ্ছে।

আজ-কাল করে সময় পার করছেন অফিসের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। এর ফলে শত শত গ্রাহক তাদের সঞ্চিত অর্থ নিয়ে অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছেন।
জেলার রাণীনগর উপজেলার হরিশপুর গ্রামের কৃষক সাজেদুল ইসলাম ভবিষ্যতে সংসারে উন্নয়নের জন্য বিমা করেছেন। ২০২২ সালের ২২ ডিসেম্বর তার মেয়াদ পূর্ণ হয়েছে। প্রায় দেড় বছর অতিবাহিত গওয়ার পরও তিনি বিমা প্রতিশ্রুত টাকা ফেরৎ পাচ্ছেন না।

সাজেদুল ইসলাম বলেন, বছরে ১০ হাজার ৩৭৩ টাকা হিসেবে ১২ বছর মেয়াদের বিমায় প্রায় ১ লাখ ২৪ হাজার টাকার মতো জমা হয়েছে। মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার পর ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে অফিসে আসতে বলা হয়। তারপর থেকে অফিসে এসে জমাকৃত টাকা পেতে ধর্না দিতে হচ্ছে। মাঝে মধ্যে এসে অফিস বন্ধ থাকে। অফিস থেকে বলা হচ্ছে আরো এক বছর পরে আসার জন্য। নিজের জমাকৃত টাকা পেতে এতো ঘুরতে হবে কেন?

নওগাঁ শহরের চকদৌলত মধ্য সাহপাড়ার শাহাজান বাদশা বলেন, মা সাজেদা বেগমের নামে বছরে ৪ হাজার ৪৫০ টাকা হিসেবে ১২ বছরের জন্য বিমা করা আছে। মেয়াদ পূরণ হয়েছে ২০২৩ সালের মে মাসে। প্রায় ৫৫ হাজার টাকা জমা হয়েছে। জমা-কৃত টাকা পাওয়ার জন্য ব্যাংকে হিসাব খুলতে বলা হয়েছে। একটি ব্যাংকে হিসাব খুলে হিসাব নম্বরটি বিমা অফিসে দেয়া হয়েছে। কিন্তু মাসের পর মাস ঘুরতে হচ্ছে। অফিস থেকে বলা হচ্ছে টাকা নাই এখন দেয়া যাবে না। আরো কিছুদিন পরে আসেন।

প্রতিষ্ঠানের হিসাবরক্ষক রাহিদুল ইসলাম বলেন, করোনা ভাইরাসের আগে গ্রাহকদের টাকা দিতে কোনো সমস্যা হয়নি। তবে পরবর্তী সময় থেকে সমস্যা হচ্ছে। সমস্যা উত্তরণে আমাদের সুযোগ দিতে হবে।

বিমা কোম্পানির নওগাঁ সার্ভিসিং সেলের সহকারি পরিচালক (এএমডি) রহিদুল ইসলাম বলেন, এই অফিসের অধীনে পাঁচ শতাধিক গ্রাহক রয়েছে। বর্তমানে কোম্পানি কোনো ফান্ড (অর্থ) দিচ্ছে না। ফান্ড পেলে দ্রুত গ্রাহকদের পাওনা পরিশোধ করা হবে।

তবে অফিস পালিয়ে যাওয়ার কোনো ভয় নেই। করোনা ভাইরাসের পর থেকে প্রতিষ্ঠান অর্থনৈতিক ভাবে দুর্দিন যাচ্ছে এবং ভাল সেবা দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। যেসব গ্রাহকদের মেয়াদ পূর্ণ হয়েছে তাদের বিষয় অফিসকে অবগত করা হয়েছে। ফান্ড না পাওয়া পর্যন্ত পাওনা পরিশোধ করা সম্ভব হচ্ছে না।