নওগাঁয় প্রতিদিনই মাগরিবের নামাযের সময় বিদ্যুতের লোডশেডিং

আপডেট: সেপ্টেম্বর ৬, ২০২৪, ৫:২৩ অপরাহ্ণ

আব্দুর রউফ রিপন, নওগাঁ প্রতিনিধি:


নওগাঁয় প্রায় প্রতিদিনই মাগরিবের আযানের শুরুর দিকেই বন্ধ করা হচ্ছে বিদ্যুৎ। যার কারণে মাগরিবের নামাজ পড়তে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে মসজিদের মুসল্লিসহ বাসা-বাড়ি থেকে শুরু করে প্রত্যেক স্থানে। শুধুমাত্র মাগরিবের নামাজের সময়ই এমন লোডশেডিং এর কারণে বিদ্যুৎ বিভাগ নিয়ে সকল শ্রেণি পেশার মানুষের মাঝে একটি নেতিবাচক ধারণার সৃষ্টি হয়েছে। দ্রুত এমন লোডশেডিং এর সময় পরিবর্তন করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন সর্বস্তরের মানুষরা।

জেলার রাণীনগর উপজেলার বাজারের বাসিন্দা মো. নজরুল ইসলাম বলেন আমরা কোন দেশে বসবাস করি যে দেশে নামাজের সময়ই লোডশেডিং দেয়া হয়। বিশেষ করে মাগরিবের নামাজের ওয়াক্তের পুরো সময় খুবই কম থাকে যার কারণে এই নামাজের সময় বিদ্যুতের প্রয়োজন থাকে বেশি। মাগরিবের নামাজের ওয়াক্তের সময় ওযু করে নামায আদায়ের জন্য ১০-১৫ মিনিট সময় বিদ্যুৎ থাকা খুবই জরুরি কিন্তু দুঃখের বিষয় হচ্ছে এই যে শুধুমাত্র মাগরিবের নামাজের আজান দিতে শুরু করলেই বিদ্যুৎ থাকে না।

বিশেষ করে গরমকালে চরম দুর্ভোগের মধ্যে মুসল্লিদের সালাত আদায় করতে হয়। তাহলে এই সময় যারা বিদ্যুৎ সরবরাহের দায়িত্বে নিযুক্ত থাকেন তারা কি ইসলাম বিরোধী মানুষ। অন্তত এই সময়টায় বাংলাদেশের সব জায়গায় বিদ্যুতের সরবরাহ ঠিক রাখা উচিত বলে মনে করি। তা না হলে বিক্ষুদ্ধ জনতা এক সময় প্রতিটি বিদ্যুৎ অফিসে হামলা করতে বাধ্য হবেন। দ্রুত এমন সমস্যার একটি শান্তিপূর্ণ সমাধান করতে সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করছি।

নওগাঁ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর রাণীনগর জোনাল অফিসের ডিজিএম মো. আকিয়াব হোসেন বলেন বাংলাদেশে বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী, সঞ্চালনকারী ও বিতরণকারী প্রতিষ্ঠান রয়েছে। উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান বিদ্যুৎ উৎপাদন করে সঞ্চালনকারী প্রতিষ্ঠানকে দেয়। উৎপাদন হওয়া বিদ্যুৎ সঞ্চালনকারী প্রতিষ্ঠান (পিজিসিবি) বিতরণকারী প্রতিষ্ঠান এর মধ্যে বণ্টন করে।

বাংলাদেশে পল্লী বিদ্যুৎ, পিডিবি, ডিপিডিসি, ডেসকো, নেসকো ও ওজোপাডিকো এই ৬টি প্রতিষ্ঠান বিদ্যুৎ বিতরণ করে। প্রতিদিন বাংলাদেশে কত মেগাওয়াট বিদ্যুৎ ব্যবহার হচ্ছে তার উপর ভিত্তি করে পরের দিন এর বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়।

উৎপাদন এবং চাহিদার ব্যবধান হঠাৎ করে যদি কম/বেশি হয়ে যায় তখন ফ্রিকোয়েন্সিও কম/বেশি হয়ে যায়। ফ্রিকোয়েন্সির স্ট্যান্ডার্ড মান হলো ৫০ হার্টজ। ফ্রিকোয়েন্সি যখন ৫২ এর উপরে উঠে যায় অথবা ৪৮এর নিচে নেমে যায় তখন SCADAনামক সুইসের মাধ্যমে যে সব ৩৩ কেভি ফিডারে SCADA সুইস বসানো আছে সেই সব ৩৩ কেভি ফিডার বন্ধ করে দেয়া হয়।

ফলে ১১ কেভি ফিডারের বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। আর SCADAরিচালনা করা হয় ঢাকার রামপুরায় অবস্থিত NLDC অফিস থেকে পিজিসিবি কর্তৃক। তাই বিশেষ করে মাগরিবের নামাজের সময় বিদ্যুতের যে লোডশেডিং এর সৃৃষ্টি হয় তাতে জেলা কিংবা উপজেলার পল্লী বিদ্যুৎ অফিসগুলোর কিছু করার থাকে না। এই সমস্যাটি সমাধান করতে হলে বিদ্যুৎ নিয়ন্ত্রনকারী উপর মহলের কর্তা ব্যক্তিদের উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।