শনিবার, ২৫ মার্চ, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ১১ চৈত্র, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ ।
নওগাঁ প্রতিনিধি
পাওনা টাকা নিতে গিয়ে ৫দিন থেকে নিখোঁজ রয়েছে নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার আবদুুর রশিদ (৩৫) নামে এক যুবক। নিখোঁজের পরিবারের পক্ষ থেকে আবদুুর রশিদের বন্ধু মিঠুকে অভিযুক্ত করে বদলগাছী থানায় সাধারণ ডায়রি এবং নওগাঁ সদর থানায় অভিযোগ করা হয়েছে। অভিযোগের প্রেক্ষিতে মিঠুকে গত শুক্রবার বিকেলে নওগাঁ সদর থানা পুলিশ আটক করেছে। তবে মামলা না নিয়ে রহস্যজনক ভাবে মিঠুকে থানা থেকে ছেড়ে দেয়া হয় বলে পরিবারের অভিযোগ। মিঠু নওগাঁ সদর উপজেলার আরজি নওগাঁ মহল্লার বাসীন্দা এবং নিখোঁজ রশিদ বদলগাছী উপজেলার লক্ষিপুর গ্রামে মৃত মোসলেম উদ্দীনের ছেলে।
জানা যায়, রশিদ ও মিঠু পরস্পর বন্ধু। এ সুবাদে রশিদ তার ট্রাক্টর এক বছরের জন্য ১ লাখ ৯০ হাজার টাকায় বন্ধু মিঠুকে ভাড়ায় দেয়। মিঠু এ পর্যন্ত ৯০ হাজার টাকা পরিশোধ করে। বাকী টাকার জন্য মিঠুকে বার বার তাগাদা দিতে থাকে রশিদ। মিঠু টাকা দিচ্ছি দেব বলে সময় পার করতে থাকে। গত ১ আগস্ট বিকেলে রশিদকে টাকা দেয়ার নাম করে মোবাইল ফোনে ডেকে নেয় মিঠু। ট্রাক্টরটি দিনাজপুর জেলায় আছে বলে মিঠু তার সঙ্গে রশিদকে যেতে বলে। বিকেলে দিনাজপুর যাওয়ার উদ্যেশে বাড়ি থেকে বেরিয়ে নওগাঁয় আসে রশিদ। রশিদকে স্ত্রী নাসরীন বেগম সন্ধ্যার দিকে মোবাইলে ফোন দিলে তা বন্ধ পান। এরপর থেকেই রশিদ নিখোঁজ রয়েছে।
বন্ধু মিঠুর বলেন, ওই বিকেলে রশিদ পাওনা টাকা নিতে এসেছিল। তাকে চার হাজার টাকা দিয়েছি। তবে সে দৌলদীয়া ঘাট যাবে বলে জানায়। এছাড়া সে আমার কাছে ট্রাক্টর বিক্রি করেছে।
নিখোঁজ রশিদের স্ত্রী নাসরিন বেগম বলেন, আমার স্বামী ট্রাক্টর বিক্রি করে নি। নিখোঁজের ঘটনার সাথে মিঠুই জড়িত। তিনি বলেন , এ বিষয়ে নওগাঁ সদর থানায় সাধারণ ডায়েরি করতে গেলে থানা থেকে বলা হয় বদলগাছী থানার ডায়রি করতে। তবে সদর থানায় একটি অভিযোগ করা হয়। এর প্রেক্ষিতে মিঠুকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। আবার রাতেই তাকে ছেড়ে দেয়া হয়। কিন্তু মামলা করতে চাইলেও থানায় মামলা নেয়া হয় নি।
রশিদের প্রতিবেশী ও জেলা পরিষদের সদস্য জহুরুল ইসলাম বলেন, মিঠুর কথা অসামজঞ্জ্য ছিল। অভিযোগের প্রেক্ষিতে মিঠুকে আটক করা হলেও পুলিশ মামলা না দিয়ে রশিদকে খোঁজার জন্য সাত দিনের সময় নিয়ে তার পরিবারের জিম্মায় ছেড়ে দেয়।
এ বিষয়ে বদলগাছী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জালাল উদ্দীন বলেন, ঘটনাটি যেহেতু নওগাঁতে ঘটেছে সেহেতু নওগাঁ সদর থানা বিষয়টি দেখবে। আমরা সাধারণ ডায়েরি নিয়েছি। তবে রশিদের মোবাইল নাম্বার ট্র্যাকিং করা হচ্ছে।
এ ব্যাপারে নওগাঁ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তোরিকুল ইসলাম বলেন, অভিযোগের প্রেক্ষিতে মিঠুকে আটক করা হয়েছিল। তবে রশিদকে উদ্ধারের সময় নিয়ে মিঠুকে পরিবারের জিম্মায় ছেড়ে দেয়া হয়েছে। এ সময়ে মধ্যে পাওয়া না গেলে বদলগাছী থানায় মামলা হবে। মামলার প্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। আবার রশিদ তার বন্ধু মিঠুকে বিপদে ফেলার জন্য আত্মগোপন করে থাকতে পারে। তিনি আরো বলেন ঘটনাটি সন্দেহজনক মনে হচ্ছে।