শনিবার, ১০ জুন, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ২৭ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ ।
রাজশাহী নগরে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা নগরবাসীর জন্য বিষফোঁড়া হয়ে দাঁড়িয়েছে- এমনই সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে দৈনিক সোনার দেশে বুধবার। ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ট্রাফিক আইন না মানায় ঘটছে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা। নগরীতে রাস্তায় লেগে থাকছে দীর্ঘ যানজটের সারি। অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে, অটোরিকশার জন্য নগরে পা ফেলা দায় হয়ে গেছে। সিটি করপোরেশন থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে এক বছর আগে থেকে লাইসেন্সে দেয়া বন্ধ থাকা সত্ত্বেও নগরীর বিক্রয়কেন্দ্রে চলছে অটোরিকশা বিক্রি। রাস্তায় একই নম্বর প্লেটে চলছে একাধিক অটোরিকশা।
বেসরকারিভাবে ১২ হাজারের মতো অটোরিকশা নগরীর রাস্তায় চলাচল করলেও রাজশাহী সিটি করপোরেশন সূত্র জানিয়েছে, নগরীতে সিটি করপোরেশন কর্তৃক নিবন্ধিত ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা (ইজিবাইক) রয়েছে আট হাজার ৮৬২টি ও দুই আসনবিশিষ্ট ব্যাটারিচালিত রিকশা রয়েছে ৫ হাজার ৪০০টি। এরপরও নগরীতে প্রতিদিন নতুন নতুন অটোরিকশা নামছে। লাইসেন্স দেয়া বন্ধ থাকা সত্ত্বেও খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নগরীর প্রায় ১০টি শো-রুমে প্রতিদিন অটোরিকশা বিক্রি হচ্ছে।
খুব স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন আসে যে, নতুনভাবে বিক্রিত অটোরিকসাগুলো রাস্তায় চলাচল করছে কীভাবে। রাসিকের দাবি মতে যদি লাইসেন্স দেয়া বন্ধ থাকে তা হলে এরা কোথায়, কীভাবে লাইসেন্স বা চলাচলের অনুমতি পেয়ে যাচ্ছে? একের পর এক অটো সড়কে নামছে কীভাবে। এ বিষয়ের নিষ্পত্তি রাসিক এরই করার কথা কিন্তু বাস্তবে তা হচ্ছে না।
এখনই এ সমস্যা সমাধানে উদ্যোগ নিতে ব্যর্থ হলে এটি যে আগামী এক-দু বছরে আরো ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির সৃষ্টি করবে তা বলাই বাহুল্য। সমস্যাটি বিবেচনায় নিয়ে রাসিক, অটো রিকসাচালক ও মালিকদের সংগঠন এবং ট্রাফিক পুলিশের একটি সমন্বিত উদ্যোগ থাকা প্রয়োজন বলেই মনে হচ্ছে। অটো রিকসা মালিকদের সংগঠন বিভিন্ন উপজেলার অটো রিকসা মূল শহরে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞার বিষয়টিকে আমলে নেয়া যায় কি না সেটাও ভেবে দেখা দরকার।
নগরবাসী পাঁচ বছর আগেও এই নগরীতে যানজটের কোনো অভিজ্ঞতা ছিল না। এখন তারা সে অভিজ্ঞতা অর্জন করছে উদ্বেগ- উৎকণ্ঠার সাথে। উদ্বেগের কথা এই কারণে যে, রাজশাহী মহানগরীর অধিবাসীরা এই ধরেনের যানযটে অভ্যস্থ নয়- তারা ‘যানজটের নগরী’ হোক সেটাও পছন্দ করেন না। একটি পরিকল্পিত ব্যবস্থাপনাই তাদের কাছে কাম্য। রাজশাহগী সিটি করপোরেশনসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর সমন্বিত উদ্যোগই সেটা সম্ভব।