নগরীতে তিন হত্যায় মামলায় গ্রেপ্তার ৬ আসামি

আপডেট: ফেব্রুয়ারি ৪, ২০২৩, ১২:৫৬ পূর্বাহ্ণ

নিজস্ব প্রতিবেদক:


নগরীতে পৃথক হত্যার ঘটনায় দুটি মামলা হয়েছে। এঘটনায় মোট ৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
নগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানাধীন সপুরা বিসিক শিল্পনগরী এলাকায় চোর সন্দেহে দুই নির্মাণ শ্রমিককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় বাড়ির মালিক ও তার শ্বশুর-সহ ৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে বোয়ালিয়া মডেল থানা পুলিশ। এছাড়া নগরীর ছোটবনগ্রাম উত্তরপাড়া এলাকায় বরই ফল পাড়তে নিষেধ করাকে কেন্দ্র করে খুনের ঘটনায় মূলহোতাসহ দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে চন্দ্রিমা থানা পুলিশ।

নির্মাণ শ্রমিক হত্যা মামলায় গ্রেপ্তারকৃতরা হলো- নগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানার সপুরা বিসিক এলাকার মো. আব্দুল মালেকের ছেলে আব্দুল্লাহ, এয়ারপোর্ট থানার বায়া বাড়ইপাড়ার মৃত মনির উদ্দিনের ছেলে মাসুম রেজা (৫০), মো. শফিকুল ইসলামের ছেলে মো. মঈন উদ্দিন রিয়াল (১৯) ও রাজপাড়া থানার সিলিন্দা বাগানপাড়ার মো. মোশারফের ছেলে মো. ইমরান (২১)।
অপরদিকে, বরইপাড়াকে কেন্দ্র করে ডিস ব্যবসায়ীকে হত্যায় গ্রেপ্তারকৃতরা হলো- মো. নাসিম (২২) ও মো. শুভ (২০)। আসামি নাসিম শাহমখুদম থানার গাংপাড়ার মৃত আজম আলীর ছেলে। বর্তমানে সে চন্দ্রিমা থানার আসাম কলোনী বউ বাজার এলাকার বাসিন্দা। অপর আসামি শুভ শাহমখদুম থানার পবা নতুনপাড়ার (গাংপাড়া) মৃত সাজ্জাদের ছেলে।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, শ্রমিক পিটিয়ে হত্যার ঘটনা- আসামি আব্দুল্লাহর বাড়িতে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ থানার চৈতন্যপুর গ্রামের মো. রাকিবুল ইসলাম হেড মিস্ত্রি এবং নওগাঁ জেলার মান্দা থানার সাগুনিয়া গ্রামের মো. রেজাউল করিম (৫০) লেবার মিস্ত্রি হিসেবে নির্মাণ কাজ করছিল। ২ ফেব্রুয়ারি দুপুর ৩ টায় আসামি আব্দুল্লাহর বাড়িতে টাকা চুরি সন্দেহে আব্দুল্লাহ ও তার সহযোগীরা মিলে রাকিবুল ও রেজাউলকে রশি দিয়ে বেঁধে লোহার রড ও গাছের ডাল দিয়ে পিটিয়ে এবং পায়ের নখ উপরিয়ে গুরুত্বর আহত করে। আশপাশের লোকজন রাত ৯ টায় জরুরি সেবা ৯৯৯ এর মাধ্যমে বোয়ালিয়া মডেল থানা পুলিশকে ঘটনাটি জানায়। বোয়ালিয়া মডেল থানা পুলিশ খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে রাকিবুল ও রেজাউলকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে রাকিবুলকে মৃত ঘোষণা করে।

এ ঘটনায় রাকিবুল ইসলামের স্ত্রী মোসা. সুমা খাতুন চার জনের নামসহ অজ্ঞাত আরও ১০-১২ জনের বিরুদ্ধে বোয়ালিয়া মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
অন্যদিকে, ডিসমিস্ত্রিকে হত্যা- বৃহস্পতিবার (২ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১ টায় নগরীর চন্দ্রিমা থানার ছোট বনগ্রামে কাজেম আলী বিদ্যুৎ এর পৈত্রিক বাড়ির সামনে গেট সংলগ্ন বরই গাছে আসামি নাসিম, শুভ ও আকাশ ঢিল মেরে বরই পাড়ছিল। তখন কাজেম আলী তাদের ঢিল মেরে বরই পাড়তে নিষেধ করলে আসামিদের সাথে তার বাকবিতন্ডা ও ধাক্কাধাক্কি হয়। ধাক্কাধাক্কির একপর্যায়ে আসামিরা ক্ষিপ্ত হয়ে কাজেম আলীকে কিলঘুষি মেরে এবং চাকু দ্বারা আঘাত করে গুরুতর জখম করে করে পালিয়ে যায়। স্থানীয়রা কাজেম আলীকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। কাজেম আলীর ছোট বোন মোসা. মৌসুমী খাতুন বাদী হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করে।

পরে এদিন রাত ১০ টার দিকে অভিযান চালিয়ে চন্দ্রিমা থানার মুশরইল এলাকা হতে আসামি মো: নাসিম ও মো: শুভকে গ্রেপ্তার করে।

রাজশাহী নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) মো. রফিকুল আলম জানান, দুই ঘটনাতেই মুল আসামিদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। আসামিদের আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হবে।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ