নগরীতে নিবন্ধনহীন ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার দৌরাত্ম্য উপজেলা থেকে আগত বহনগুলো প্রবেশে কড়াকড়ি আরোপ করতে হবে

আপডেট: অক্টোবর ২৯, ২০২৪, ১১:৪৯ অপরাহ্ণ

নগরীতে প্রধানবাহন হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে অটো রিকশা। দিনকে দিন নানা কারণে অটো রিকশার সংখ্যা বাড়ছে। বাড়ছে যানজটও। প্রতিদিন নগরীর সড়কগুলো দাঁপিয়ে বেড়াচ্ছে প্রায় ৫০ হাজারের মতো অটোরিকশা। অথচ রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক) নিবন্ধন রয়েছে মাত্র ৯ হাজারের। প্রতিদিন সকাল থেকে রাজশাহী নগরীর বাইরে থেকে আসছে এসব অটোরিকশা। যাদের রেজিস্ট্রেশন নম্বরও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের। কিন্তু উপজেলা থেকে আগত বহনগুলো কিভাবে সিটি করপোরেশন রেজিস্ট্রেশন নম্বর দিয়ে থাকে। এই প্রশ্ন এখন নগরবাসীর। নগর সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে উপজেলা থেকে আগত বহনগুলো প্রবেশে কড়াকড়ি আরোপ করতে হবে। তৈরি করতে হবে ব্যবস্থপনার সুষ্ঠু নীতিমালা।

নগরীতে নিবন্ধনহীন ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার অবাধ বিচরণে যানজট লেগেই থাকে। এরপরও উপজেলা থেকে অটোরিকশা প্রবেশ করছে। ফলে যানজট তীব্র আকার ধারণ করছে। তাই নগরবাসীর প্রত্যাশা শহরের প্রবেশমুখে উপজেলা থেকে আগত বহনগুলো বাধা দিতে হবে। সেই সাথে নগরীতে যেসব নিবন্ধনহীন ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চলছে। সেগুলোর বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করতে হবে।

সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা গেছে, আগের সব অটোরিকশার নিবন্ধন বাতিল করে ২০২১ সালে নতুন করে ৮ হাজার ৯০০টির নিবন্ধন দেওয়া হয়। কিন্তু নগরীতে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা রয়েছে প্রায় ৩০ হাজার। এছাড়া অগণিত ব্যাটারিচালিত রিকশা রয়েছে। ব্যাটারিচালিত রিকশার (ছোট) নিবন্ধন আছে মাত্র ১৪ হাজার ২৬২টির। এই রিকশা-অটোরিকশা একসঙ্গে নগরীতে নামলে যানজট দেখা দেয়। তাই ২০১৯ সালের দিকে অটোরিকশাগুলোর সময় ভাগ করে দেওয়া হয়।

মাসের প্রথম সপ্তাহে সকাল ৬টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত মেরুন রং এবং বেলা আড়াইটা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত সবুজ রঙের অটোরিকশা চলাচলের সিদ্ধান্ত হয়। আর পরের সপ্তাহে সকাল ৬টা থেকে ২টা পর্যন্ত সবুজ এবং আড়াইটা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত মেরুন রঙের অটোরিকশা চলাচল করার কথা। এত দিন এভাবেই চলছিল। অথচ প্রতিটি অটোরিকশার নাম্বার প্লেটেই রাসিকের নম্বর দেওয়া রয়েছে। অটোরিকশা চালকদের অভিযোগ, সিটি করপোরেশনের একটি চক্র একেকটি লাইসেন্স দুই-তিনবার করে বিক্রি করেছে ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকার বিনিময়ে। এই চক্রের হোতা ছিলেন অটোরিকশা মালিক সমিতির সভাপতি ও মহানগর শ্রমিক লীগ নেতা সাগর হোসেন। সাগর নগরীতে অটোরিকশার লাইসেন্স বাণিজ্য করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।

রাসিকের একটি সূত্র জানায়, ব্যাটারিচালিত দুই শ্রেণির অটোরিকশা চলে নগরীতে। এরমধ্যে আটজন যাত্রী বহন ক্ষমতার অটোরিকশা রয়েছে প্রায় ৩০ হাজার। এছাড়া দু’জন যাত্রী বহনের ছোট অটোরিকশা রয়েছে প্রায় ৫০ হাজার। সব মিলিয়ে ৭০ থেকে ৮০ হাজার অটোরিকশা চলাচল করছে মাত্র ৯৬ বর্গকিলোমিটারের এই নগরীতে।

গত ৫ আগস্টের পর পুলিশ ও সিটি করপোরেশনের কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়লে সব রিকশা-অটোরিকশা একসঙ্গে নেমে পড়ছে রাস্তায়। যার যখন খুশি, তখন রাস্তায় নেমে পড়ার কারণে শহরের প্রায় প্রতিটি এলাকায় দেখা দিয়েছে যানজট। এ অবস্থার উত্তোরণ জরুরি।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

Exit mobile version