নিজস্ব প্রতিবেদক:
গাছে যত পাতা, এর চেয়ে বহুগুণ ফুল। পুরো গাছ ছেয়ে আছে ফুলে। গ্রীষ্মের খরতাপেও সোনারঙা তরতাজা এই ফুল শোভা ছড়াচ্ছে রাস্তায়। ফুলটির নাম সোনালু। নগরীর সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে লাগানো এই গাছের ফুল এখন প্রশান্তি এনে দিচ্ছে পথচারীদের চোখে।
রাজশাহী মহানগরীর বিভিন্ন সড়কের পাশে ফুটপাতে এই ফুলের গাছ দেখা মিলছে। শীতে সব পাতা ঝরে গিয়েছিল গাছটির। শুধু ডাল নিয়ে পাতাহীন গাছ দাঁড়িয়ে ছিল মৃতের মতো। গ্রীষ্মের শুরুতেই দু-একটি কচিপাতার সঙ্গে ফুল ফুটতে শুরু করে এই গাছে। এখন পুরো গাছই হলদে ফুলে ছেয়ে গেছে। ফুলের ফাঁকে ফাঁকে লাঠির মতো ঝুলছে দু-একটি ফল।
এ কারণে সোনালুকে ‘বাঁদর লাঠি’ বলেও চেনেন অনেকে। কেউ আবার সোনারু, বান্দর লাঠি, বানরনড়ী, রাখালনড়ী, সোদাল বা সোনাইল নামেও চেনেন। এর বৈজ্ঞানিক নাম ক্যাসিয়া ফিস্টুলা। এই ফুল যেমন শোভাবর্ধন করে, তেমনি এর ওষধি নানা গুণাগুণও আছে।
রাজশাহী মহানগরীর বিমান চত্বর থেকে বিহাস সড়কের প্রথম এক কিলোমিটারের দুই পাশে এখন সোনালু ফুল সবার দৃষ্টি কাড়ছে। নগরীর কোর্ট স্টেশন থেকে কাশিয়াডাঙ্গা সড়কেও এক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে দুই পাশেই রয়েছে সোনালুগাছ। এ ছাড়া ভেড়িপাড়া, পুলিশ লাইনসহ নগরীর এখানে-ওখানে চোখে পড়ছে সোনালুর স্বর্ণালি শোভা।
রাজশাহী সিটি করপোরেশনের দেয়া তথ্য মতে, ২০১৯ ও ২০২০ সালে সামাজিক বন বিভাগ এবং ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো সিটি করপোরেশনকে বিনামূল্যে সোনালুর চারা সরবরাহ করে। ওই দুই বছরে প্রায় ৬০০ সোনালুগাছ লাগানো হয়। পরিবেশ শাখার কর্মীদের প্রতিদিনের পরিচর্যায় গাছগুলো বড় হয়েছে। এখন ৭-৮ মিটার উঁচু এসব গাছে ফুল ফুটছে।
ভেড়িপাড়া এলাকায় পথচারী তুহিনুর আলম বলেন, বিভিন্ন দেশে সড়কের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে সারি সারি সোনালুগাছ লাগানো হয়। এতে প্রকৃতির নয়নাভিরাম দৃশ্য চোখে পড়ে। রাজশাহীতে যে এলাকায় সোনালু ফুলের গাছ আছে, সে এলাকা অপরূপ হয়ে উঠেছে। তাই আরও বেশি বেশি যেন এই ফুলের গাছ লাগানো হয়। তাহলে সুন্দর শহরের সৌন্দর্য আরও বাড়বে।
সিটি করপোরেশনের পরিবেশ উন্নয়ন কর্মকর্তা সৈয়দ মাহমুদ-উল-ইসলাম জানান, ইতোমধ্যে তারা সোনালু ফুলের গাছ থেকে প্রচুর বাঁদর লাঠি বা বীজ সংগ্রহ করেছেন। সিটি করপোরেশনের নিজস্ব নার্সারিতে এই বীজ থেকে চারা উৎপাদন করা হবে। এরপর সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য শহরের আরও বিভিন্ন এলাকায় সোনালুর চারা রোপণ করা হবে।