সোমবার, ৮ মার্চ, ২০২১ খ্রিস্টাব্দ, ২৩ ফাল্গুন, ১৪২৭ বঙ্গাব্দ ।
নিজস্ব প্রতিবেদক
নগরীর মালোপাড়া পুলিশ ফাঁড়ির পাশেই কথিত প্রেমিককে তাড়িয়ে দল বেঁধে ধর্ষণের ঘটনায় হোটেলের কর্মচারীসহ চারজনকে আটক করেছে পুলিশ। গত রোববার রাতে নগরীর মালোপাড়া পুলিশ ফাঁড়ির কাছে যমুনা আবাসিক হোটেলে এ ঘটনা ঘটেছে। ধর্ষণের শিকার মেয়েটিকে গুরুতর অবস্থায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসেন্স সেন্টারে (ওসিসি) ভর্তি করা হয়েছে। তার বাড়ি বগুড়ার সোনাতলা উপজেলায়।
এদিকে আটককৃতদের মধ্যে তিনজন ওই হোটেলেরই কর্মচারী। আরেকজন মেয়েটির প্রেমিকের চাচাতো ভাই। থানা হাজতে রেখে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে বলে জানিয়েছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই সোলায়মান হোসেন। তবে মেয়েটির কথিত প্রেমিক মনিরুল ইসলাম সজল পলাতক রয়েছেন। পরে মেয়েটির মা বাদী হয়ে সজলসহ পাঁচ জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেছেন। তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলেও জানান পুলিশের ওই কর্মকর্তা।
জানা গেছে, নাটোরের সজলের সঙ্গে মোবাইল ফোনে প্রেমের সম্পর্ক হয় মেয়েটির। রোববার সন্ধ্যায় নগরীতে তারা রাত যাপনের জন্য স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে যমুনা হোটেলে ওঠেন। এসময় তাদের সাথে সজলের চাচাতো ভাই আল আমিনও ছিল। মেয়েটিকে নিয়ে সজল একটি কক্ষে ওঠে। আর আল আমিন আলাদা কক্ষ বরাদ্দ নেয়। কিন্তু রহস্যজনক কারণে হোটেলের বর্ডারের খাতায় তাদের নাম উঠায় নি। এরপর রাতে হোটেলেই মেয়েটি দলগত ধর্ষণের শিকার হয়।
ওই হোটেলের এক কর্মচারী জানায়, তারা হোটেলে গিয়ে স্বামী স্ত্রী পরিচয় দিলেও সন্দেহ হওয়ায় তাদের নাম ঠিকানা বর্ডারের খাতায় উঠানো হয় নি। রাতে প্রেমিক সজলকে হোটেল কর্মচারীরা ভয়ভীতি দেখিয়ে তাড়িয়ে দেয়। পরে মেয়েটির উপর শুরু হয় পাশবিক নির্যাতন। মেয়েটিকে ৫ থেকে ৬জন মিলে ধর্ষণ করে। পরে কৌশলে মেয়েটি হোটেল থেকে পালিয়ে বোয়ালিয়া থানায় যায়। সেখানে পুলিশের কাছে অভিযোগ দেয়ার পরই চারজনকে আটক করে পুলিশ। পরে ওই মেয়েটি রামেক হাসপাতালের ওসিসিতে ভর্তি করা হয়।
রামেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগের তথ্য অনুযায়ি, ওই মেয়েটি রাত সাড়ে ৯টায় হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার জন্য আসে। ওই সময় তার অবস্থা আশঙ্কাজনক ছিলো।
এবিষয়ে নগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানার ওসি শাহাদত হোসেন খান জানান, মেয়েটি ও সজল এক সময় ঢাকায় গার্মেন্টে চাকরি করতো। সেখানেই তাদের প্রেম হয়। তারা ফের ঢাকায় চলে যাওয়ার উদ্দেশে রাজশাহীতে এসে রাত কাটানোর জন্য যমুনা হোটেলে উঠেছিল। মেয়েটি ধর্ষিত হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হওয়া গেছে। তবে ধর্ষণের ঘটনা কীভাবে ঘটেছে তা এখনো পরিস্কার নয়। ঘটনার পরই সজল পালিয়ে গেছে। তবে তার চাচাতো ভাই আল আমিনসহ হোটেলের তিন কর্মচারীকে আটক করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষ হলে বিস্তারিত জানা যাবে। মেয়েটির ডাক্তারি পরীক্ষাও করা হয়েছে।