নগর সৌন্দর্য দেখে মুগ্ধ রাবির ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা

আপডেট: মে ৩১, ২০২৩, ১:০৫ পূর্বাহ্ণ

নিজস্ব প্রতিবেদক:


ইতিহাস-ঐতিহ্য ও নান্দনিক সৌন্দর্যে সমৃদ্ধ পদ্মাপাড়ের শহর রাজশাহী। যে সৌন্দর্যের মুগ্ধতার সুর এখন জাতীয়ভাবে স্বীকৃত। আর এই সৌন্দর্যের সুর শুনলেও প্রথমবারের মতো দেখার সৌভাগ্য হয়েছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিচ্ছু হাজারো শিক্ষার্থী ও অভিভাবকের। তাইতো পরিক্ষা শেষেই অচেনা শহরের গাড়ির ভিড় ঠেলে নগর সৌন্দর্য উপভোগ করতে নগরীর দর্শনীয়স্থানগুলোতে ভিড় জমাচ্ছেন অনেক অভিভাবক। আর নগরীর উন্নয়ন কর্মকান্ড দেখে প্রশংসায় উদ্বেলিত এই অতিথিরা।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা শুরু হয়েছে গত সোমবার। চলবে আজ বুধবার পর্যন্ত। ভর্তি পরিক্ষা দিতে মোট ১ লাখ ৭৮ হাজার ৫৭৪ জন শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাকরা বিশ্ববিদ্যালয়সহ নগরীতেও এসেছেন। অনেকেই কিছুটা সময় নিয়ে নগরী দেখছেন। আবার কেউ কেউ ঝটিকা সফরে নগরীর রাস্তা-ঘাট ও সৌন্দর্য উপভোগ করছেন।

বিশ্ববিদ্যালয় বিশ^বিদ্যালয়ে ভর্তি পরিক্ষা প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে ১০টা, বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১২টা, বেলা ১টা থেকে ২টা এবং বেলা সাড়ে ৩টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত চার পালায় অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এতে শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ই নয়, নগরী প্রত্যেকটি রাস্তা ও বিনোদন স্পটে মানুষের প্রচুর ভিড় ছিলো।

আর বদলে যাওয়ার রাজশাহীর অন্যতম প্রধান বিনোদন কেন্দ্র হলো পদ্মা গার্ডেন, লালনশাহ পার্ক, আই-বাঁধ, হাইটেক পার্ক এলাকাসহ বিস্তৃর্ণ পদ্মার পাড়। এছাড়া রাজশাহী বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘরও অন্যতম। আর এই সবকটি জায়গাসহ নগরীর প্রজাপতি ও গার্ডেন লাইটের সড়ক হিসেবে পরিচিত সড়কগুলোতে মানুষের সমাগম ছিলো চোখে পড়ার মতো। বিশেষ করে বিকেলে পর পদ্মাপাড় জুড়ে মানুষের ঢল দেখে মনে হতেই পারে কোন উৎসবের আমেজ চলছে।
রাজশাহী বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘরে টিকিটের জন্য সিরিয়াল দিচ্ছিলেন আদিবা তানজুমসহ তার বান্ধবীরা। সে বলেন, তারা ঢাকা থেকে শুধু পরিক্ষা দেয়ার জন্যই এসেছেন। সকালে পরিক্ষা ছিলো। ট্রেনের টিকিট পায় নি। তবে বাসের টিকিট কেটেছি রাতের। পরিক্ষা শেষে বাকি সময়টা রাজশাহী নগরী ঘুরে দেখছি। প্রথম বারের মতো বান্ধবীরাসহ এসেছি। বিভিন্ন মাধ্যমে এতোদিন রাজশাহীর সৌন্দর্য মুঠোফোনেই দেখেছেন। অল্প সময়ের মধ্যে রাজশাহী ঘুরে খুবই ভালোলেগেছে। বিশেষ করে এই জাদুঘর ও বাইরের এতো সুন্দর পরিবেশ তাকে মুগ্ধ করেছে।
রাজশাহী বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘরের উপ-প্রধান সংরক্ষণ কর্মকর্তা আব্দুল কুদ্দুস জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরিক্ষা চলাকালীন প্রতিবারই এখানে দর্শনার্থী ভালো হয়। এবারও অনেক দর্শনার্থী আসছেন। ঘুরে দেখছেন। অনেক শিক্ষার্থী তাদের কাছে বিভিন্ন বিষয়ে জানতে চাচ্ছেন। তারাও তথ্য শেয়ার করছেন।
পদ্মা গার্ডেনের দৃষ্টিনন্দন বসার স্থান, আধুনিক টাইলস খচিত ওয়াকওয়ে ও নান্দদিক ব্রিজ। বিকেল হলে সব জায়গায় যেন পূর্ণ থাকছে। সেখানে বসে বন্ধুদের সঙ্গে নিয়ে আড্ডা দিচ্ছিলেন আরিফুল ইসলামসহ তার ৫ বন্ধু। সে জানায়, তারা পরিক্ষা শেষেই পদ্মা পাড়ে এসেছেন। এই পদ্মাপাড়ের অনেক নিউজ তারা দেখেছেন। আর প্রথমবার এখানে এসে আড্ডা দেয়ার অনুভূতিটা ভাষায় প্রকাশ করার মতো না। আসলে দুপুরের কড়া রোদের মধ্যেই তারা সবায় হাইটেক পার্ক, আই বাঁধ এলাকা ঘুরেছেন। একটু হাঁপিয়ে উঠেছিলেন। তাই পদ্মাপাড়ের গাছের নিচে কিছুক্ষণ বসে জিরিয়ে নিচ্ছেন। আর দুই ঘন্টা পরেই তাদের বাস ছেড়ে যাবে।
মেয়েকে নিয়ে ময়মনসিংহ থেকে এসেছিলেন দিনমজুর আসাদুল হক। তিনি জানান, তিনি দিনমজুরি করলেও তার মেয়ে এসএসসি ও এএইচএসতে ভালো ফলাফল করেছে। মেয়ের ইচ্ছা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করবে। তাই এসেছিলেন। বাড়ি ফেরার টিকিট ছিলো না। শেষে বাধ্য হয়ে রাতের টিকিট কেটেছেন। বাকি সময়টা মেয়েকে নিয়ে শহর ঘুরে দেখছেন। শহরের রাস্তাঘাটের সৌন্দর্য তার খুবই ভালোলেগেছে। যদিও অচেনা হওয়ায় বাড়তি ভাড়ার দৌরাত্ম্য ছিলো।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ