নাটোরের সবচেয়ে বড় গরু বিশু, ওজনে ৩২ মণ

লালপুর (নাটোর) প্রতিনিধি:

বৃহস্পতিবার জন্ম নেয়ায় নাম রাখা হয়েছে বিশু দেওয়ান। ওজনে প্রায় ৩২ মণ। এবছর এই গরুটি ইদুল আজহায় নাটোরের সবচেয়ে বড় গরু বলে দাবি করেছেন লালপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা।

সরেজমিনে জানা যায়, উপজেলার বিলমাড়িয়া ইউনিয়নের চকবাদকয়া গ্রামের ভ্যানচালক গোলাম মোস্তফার নিজ গাভীর থেকে উৎপাদিত বাছুর সাড়ে ৩ বছর লালনপালন করেন। গরুটিকে বিশু বলে ডাকলেই সাড়া দেয়। ছোট থেকে নিজের সন্তানের মত লালন-পালন করে বড় করেছেন। আবার এই কৃষকের পরিবারের সবার সাথে এই বিশুর রয়েছে দারুণ সখ্যতা।

বিশুকে মোস্তফার ছেলে স্বপন ও সোনালি আরেকটা ভাইয়ের মতই যত্ন করেন। প্রায় এক থেকে বারশো টাকা ফ্রিজিয়াম জাতের এই গরুটির পেছনে প্রতিদিন খরচ হয়। প্রচণ্ড গরমে তাকে দিনে ৪ বার গোসল করানো হয়। দূর থেকে দেখ মনে হবে যেন হাতি দাঁড়িয়ে আছে।

গরুটির মালিক গোলাম মোস্তফা জানান, তার গরুটি ওজন প্রায় ৩২ মণ। গত বছর ভালো দাম পেয়েও গরুটিকে বিক্রি করেন নি। টিভিতে অনেক বড় বড় গরু দেখতেন, তার স্বপ্ন এই গরুটিকে অনেক বড় করবেন। ইতোমধ্যে তার গরুটি নাটোর জেলার মধ্যে সবচেয়ে বড় গরুর তকমা পাচ্ছে। সাদা ও কালো মিশ্র রঙের এই গরুটি ১৫ লাখ টাকায় বিক্রি করার আশা করছেন তিনি।

মোস্তফার ছেলে স্বপন জানান, বাইরের লোক একদম অপছন্দ করেন বিশু। নতুন কাউকে বাড়িতে আসা দেখতে পারে না। মুখ ভার করে থাকে। কিন্তু দরিদ্র ভ্যানচালক বাবার সামান্য উপার্জনের সব টাকা এই গরুর পেছনে ব্যয় করেছেন। এই গরুটি তাদের পরিবারের একমাত্র সম্বল। এজন্য এই কোরবানির ইদেই তাকে বিক্রির চেষ্টা করছেন।

এদিকে, বিশুকে দেখতে প্রতিদিনই ভিড় করছেন উৎসাহী মানুষ। তেমনি দু’জন আব্দুর রশিদ ও রিপন আলী। তারা জানায়, গরু মোটাতাজাকরণের পরিকল্পনা করছি। বাড়িরপাশে লোকমুখে বিশুর কথা শুনে দেখতে এসেছেন। বিশুর খাবার ও যত্ন নেয়ার বিষয়গুলো জেনে নিচ্ছি। জীবনে এতো বড় গরু নিজ চোখে দেখেন নি।

উপজেলা উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. চন্দন কুমার বলেন, আমরা সব খামারিদের গরু মোটাতাজাকরণের পরামর্শ দিয়ে থাকি। গোলাম মোস্তফার প্রায় ১ হাজার ৮০০ কেজি ওজনের গরুটিকেও সার্বক্ষণিক তদারকির পাশাপাশি সুষম খাদ্যাভ্যাসের পরামর্শ দিয়ে আসছি। গত বছর প্রাণিসম্পদ মেলায় লালপুরের সবচেয়ে বড় গরু হিসেবে পুরষ্কার অর্জন করে বিশু। আশা করছি কৃষক গরুটির ভালো দাম পাবেন।