বুধবার, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৩ আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ ।
নাটোর প্রতিনিধি:
যীশু খ্রিস্ট জন্মদিন উপলক্ষে নাটোর শহরের বড়হরিশপুর এলাকার ব্যপটিশ মিডমিশন হাসপাতালচার্জসহ জেলার ১১টি খ্রিস্টান ধর্মপল্লীতে উৎসব মুখর পরিবেশ ও ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে পালিত হয়েছে শুভ বড়দিন।
২৫ ডিসেম্বর যীশু খ্রিস্ট জন্মলাভ করায় খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীরা এই দিনটিকে সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ‘বড়দিন’ হিসেবে উদযাপন করে থাকে।
দিনটি উপলক্ষে সোমবার (২৫ ডিসেম্বর) নাটোর ব্যপটিশ মিডমিশন হাসপাতালচার্জ এর নিজস্ব কার্য্যলয় উপসনার জন্য আহবান, প্রার্থনা, সমবেত গানসহ নান আয়োজনের মধ্য দিয়ে দিবসটি পালন করা হয়। এতে প্রধান বক্তা ছিলেন, ব্যপটিশ মিডমিশন এর ডেভিড রুপম কর্মকার। এসময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, ডা. তমিওকা, মি. মংক, মি. নিরক মারাক মি. বাদল সহ অন্যরা।
এসময় বক্তা পাষ্টার কর্মকার উল্লেখ করেন, যিশু পাপের শৃঙ্খলে আবদ্ধ মানুষকে মুক্তির বাণী শুনিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ‘ঘৃণা নয়, ভালোবাসো। ভালোবাসো সবাইকে, ভালোবাসো তোমার প্রতিবেশীকে, এমনকি তোমার শত্রুকেও। মানুষকে ক্ষমা করো, তাহলে তুমিও ক্ষমা পাবে। কেউ তোমার এক গালে চড় মারলে তার দিকে অপর গালটিও পেতে দাও।’ তিনি আরও বলেছেন, ‘পাপীকে নয়, পাপকে ঘৃণা করো। গরিব-দুঃখীদের সাধ্য মতো সাহায্য করো, ঈশ্বরকে ভয় করো। সকাল ৯টা থেকে শুরু করে চলে ১১টা পর্যন্ত।
অপরদিকে জেলার সবচাইতে বড় ধর্মপল্লী বড়াইগ্রামের বনপাড়ার লুর্দের রানী মা মারীয়া ক্যাথলিক গির্জাতে সোমবার সকাল ৭টা ও ৯টায় বড়দিনের বিশেষ খ্রিস্টযাগ অনুষ্ঠিত হয়। প্রধান পাল পুরোহিত ফাদার দিলীপ এস কস্তা খ্রিস্টযাগ পরিচালনা করেন। খ্রিস্টযাগ শেষে গির্জা প্রাঙ্গণে বড়দিনের কেক কাটা হয় ও পরে কীর্তণ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন, স্থানীয় সংসদ সদস্য ডা. সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারী, আতাউর রহমান আতা বড়াইগ্রাম উপজেলা পরিষদ ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান, বনপাড়া পৌর মেয়র কেএম জাকির হোসেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবু রাসেল, সহকারী কমিশনার (ভূমি) বোরহানউদ্দিন মিঠু সহ বিভিন্ন সুধীজন।
এর আগে রেবিবার রাতে বড়াইগ্রামের জোনাইল ও বনপাড়া সহ বিভিন্ন গির্জা পরিদর্শন করেন, জেলা প্রশাসক আবু নাছের ভূঁঞা ও পুলিশ সুপার তারিকুল ইসলাম। খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীরা যাতে নির্বিঘ্নে বড়দিন উদযাপন করতে পারে তার জন্য গির্জাগুলোতে প্রয়োজনীয় সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
বড়দিনকে ঘিরে ঘরবাড়ি পরিষ্কার করা, বিভিন্ন ধরনের পিঠা বানানো, কেক বানানো আর নতুন জামাকাপড় বানানোর ধুম। বড়দিনের আগের রাতে এবং বড়দিনের সকালে গির্জায় বিশেষ প্রার্থনা অনুষ্ঠান (খ্রিস্টযোগ) হয়। এদিন সব বাড়িতেই থাকে কেক, পিঠা, কমলালেবু, পোলাও-বিরিয়ানিসহ বিভিন্ন ধরনের সুস্বাদু ও উন্নতমানের খাবারদাবারের আয়োজন। ২৪ ডিসেম্বর সন্ধ্যা থেকে গির্জায় গির্জায় বেড়ানো, অতিথি আপ্যায়ন আর আনন্দ-উল্লাসের মধ্য দিয়েই কেটে যায় খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের সবচেয়ে আনন্দের দিন, বড়দিন। সবাই একে অপরের সাথে বড়দিনের প্রীতিপূর্ণ শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।