শনিবার, ৭ ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২২ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ ।
নাটোর প্রতিনিধি
নাটোরের গুরুদাসপুরের বামনকোলা ও গারিষাপাড়া মাঠের প্রায় দুই হাজার বিঘা জমিতে জলাবদ্ধতার কারণে দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে ফসল উৎপাদন করতে পারছেনা কৃষকরা। তিন ফসলি এসব জমিতে কৃষকরা বর্তমানে একটি ফসল আবাদ করতে পারছেন। এই ফসলি মাঠের জলাবদ্ধতা নিরসনের মাধ্যমে তিন ফসল আবাদের ব্যবস্থা করার দাবিতে ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক সহ এলাকাবাসী বিক্ষোভসহ মানববন্ধন করেছে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, ফসলি মাঠের মধ্যে অবৈভাবে পুকুর খনন এবং পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না রেখেই অপরিকল্পিতভাবে আঞ্চলিক সড়ক নির্মাণ করার কারনে দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে পাঁচ শতাধিক কৃষককে। মাঠের মাঝ দিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে একটি গ্রামীণ সড়ক। এছাড়া ২০ বছর আগে এই ফসলি মাঠের পানি নিস্কাসনের জন্য নির্মিত কালভার্ট দখল করে বাড়ি নির্মাণ করায় পানি নিস্কাসনের পথ বন্ধ হয়ে গেছে। ফসল রক্ষার জন্য জলাবদ্ধতা দুর করতে সংশ্লিষ্ট বিভাগকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন তারা । উপজেলা প্রশাসন বিষয়টি দ্রুত সুরাহার আশ্বাস দিয়েছে।
বামনকোলা গ্রামের কৃষক আলমগীর হোসেন জানান, ‘বামনকোলা মাঠে তার পাঁচ বিঘা জমি রয়েছে। তার বাবা সেই জমিতে এক সময় তিন ফসল উৎপাদন করতো। এখন তিনি এক ফসল চাষ করতেই অনিশ্চয়তায় থাকেন। জমি চাষাবাদ করেই তার জীবন জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন। এ বছর বর্ষা ও টানা বৃষ্টিতে ধানের জমি প্রায় ডুবে যাওয়ার অবস্থা হয়েছে। আর তিনদিন বৃষ্টি হলেই ধান ডুবে যাবে। ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখিন হতে হবে ধান ডুবে গেলে। অতি দ্রুত প্রশাসনের পক্ষ থেকে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করারও দাবি জানান।’
গারিষাপাড়া গ্রামের সমাজসেবক মিজানুর রহমান জানান,‘দুই গ্রামের প্রায় পাঁচ শতাধিক কৃষকের জমি রয়েছে এই মাঠে। প্রতিটি কৃষক এই মাঠ থেকে ফসল উৎপাদন করে নিজেদের জীবন জীবিকা নির্বাহ করে। দীর্ঘ ১৫ বছর জলাবদ্ধতার কারনে দ্ইুটি ফসল উৎপাদন ব্যহত হচ্ছে। কৃষকদের কথা চিন্তা করে অতি দ্রুত পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা করা দরকার।’
ইতিপূর্বেও প্রশাসনকে জানিয়ে কোন কাজ হয়নি বলে দাবি করেন বামনকোলা গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য রফিক হোসেন, আবুল হোসেন, কৃষক আসাদ মোল্লা, লেদু প্রামানিকসহ আরো অনেকে। মানববন্ধনে শত শত গ্রামবাসী উপস্থিত থেকে জলাবদ্ধতা দ্রুত নিরশনের দাবি তুলে বক্তব্য রাখেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হারুনর রশিদ বলেন,‘ইতিপূর্বেও ওই মাঠের জলাবদ্ধতা নিরশনের জন্য উপজেলা প্রশাসন ও কৃষি অধিদপ্তর উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলো। গ্রামের অভ্যন্তরীন ঝামেলার কারনে বেশিদূর অগ্রসর হওয়া যায়নি। গ্রামবাসীর সহযোগিতায় সরেজমীনে গিয়ে অতি দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করার কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা হবে।’
গুরুদাসপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সালমা আক্তার বলেন,‘কৃষকদের সহযোগিতায় অতি দ্রুত জলবদ্ধতা নিরশন করা হবে।#