নাটোরে ন্যায্য পারিশ্রমিক থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন নারী শ্রমিকরা

আপডেট: নভেম্বর ২০, ২০১৬, ১২:০০ পূর্বাহ্ণ


সুফি সান্টু, নাটোর
পুরুষের সমান কাজ করলেও নাটোরে নারী শ্রমিকরা তাদের ন্যায্য পারিশ্রমিক থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। ফলে পরিবার পরিজন নিয়ে তাদের মানবেতর জীবন যাপন করতে হচ্ছে।
শহরের পশ্চিম বড়গাছা এলাকার ইট ভাঙা শ্রমিক বিউটি বেগম জানান, স্বামী, স্ত্রী ও তার তিন ছেলে-মেয়ে নিয়ে ২১ বছর ধরে রাজমিন্ত্রীর কাজ করে আসছেন। তাদের শ্রমের ওপর নির্ভর করে চলে ৫ সদস্যের পরিবারের ভরণ পোষন। কিন্তু একই স্থানে শহরের চকবৈদ্যনাথ এলাকার সাইফুল ইসলাম কাজ করে  তিনশ টাকা আয় করলেও তাকে দেয়া হয় আড়াইশ টাকা। ছেলে দুইটাও রাজ মিন্ত্রী কাজের সঙ্গে জড়িত। ছোট মেয়ে মেরিনা খাতুন সাবিনা ইয়াসমিন ছবি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ে ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে পড়াশোনা করে। যখন কাজ থাকে তখন দিন ভালোই চলে, কাজ বন্ধ থাকলে তখন কষ্টে দিন কাটে।
এ বিষয়ে নাটোর সদর উপজেলার ছাতনি এলাকার সাইড কন্ট্রাকটর লোকমান হোসেন জানান, নারী শ্রমিকরা পুরুষের চেয়ে কাজ কম করেন এটা ঠিক নয়। কিন্তু যেহেতু এ অঞ্চলে নারী শ্রমিকদের পুরুষ শ্রমিক অপেক্ষা কম দেয়া হয়। সেকারণে তারা কিছু টাকা কম পান। আমারা বিভিন্ন কাজ কন্ট্রাক নিয়ে  তাদেরকে দিয়ে কাজ করাই। অনেক সময় আমাদের লোকসান হলেও শ্রমিকের মুজুরীর টাকা ঠিকভাবে প্ররিশোধ করি।
শহরের বঙ্গজল এলাকার কাঠ মিস্ত্রী গুপী সরকার জানান, একজন পুরুষ শ্রমিক নারী শ্রমিকের চাইতে বেশি ওজন বহন এবং মাটি কাটার কাজ করতে পারেন। সেকারণেই নারী শ্রমিকদের পারিশ্রমিক কম। তবে তিনি স্বীকার করেন, ইটভাঙা, রাজমিস্ত্রীদের যোগানি কাজ ইত্যাদি কাজে নারী শ্রমিকরা পুরুষের সমান তালে কাজ করতে সক্ষম।
অপর দিকে জেলা নাটোর ইমারত শ্রমিকের সাবেক সভাপতি আবু তাহের জানান, পুরুষের চাইতে অনেক ক্ষেত্রে নারী শ্রমিক কাজ বেশি করে। কিছু পুরুষ আছে কাজ ফেলে তারা বিড়ি, সিগারেট, চা পান করে।  কিন্তু নারী শ্রমিকদের ক্ষেত্রে তা হয় না। এছাড়া অভাবের কারণে কাজ না পেয়ে ও বিধবা, স্বামী পরিত্যক্ত নারী আছে তারা শ্রমিকরা সস্তায় কাজ করতে বাধ্য হয়। ফলে এ অঞ্চলে নারী শ্রমিকরা মজুরি বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন। তবে তিনি দায়িত্বে থাকা কালিন এ বিষয়ে সবাইকে সতর্ক করেছেন বলে দাবি করেন তিনি।
কি করলে তারা শ্রমের ন্যায়্য মজুরী পাবে এ বিষয়ে ধারণা নেই এ অঞ্চলের নারী শ্রমিকদের। তাই নিয়তি
মেনেই সকাল হলেই বেরিয়ে পড়ে কাজের সন্ধানে। এ ভাবেই চলছে এ অঞ্চলের নারী শ্রমিকদের দিন।