নাটোরে মাদ্রাসা শিক্ষককে হাতুড়ি পেটা

আপডেট: নভেম্বর ১৮, ২০২৩, ৭:৪২ অপরাহ্ণ


নাটোর প্রতিনিধি:


ইসলামী মাহফিলের পোস্টারে নাম না দেয়ায় সদর উপজেলার মাঝদীঝা দারুল উলুম নূরানী হাফিজিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক হাফেজ সাইদুল ইসলামকে (৩৮) জোর করে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে হাতুড়ি পেটা করেছে মুখোশধারী দুর্বৃত্তরা। শুক্রবার (১৭ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৭টার দিকে এই ঘটনা ঘটে।

আহত মাদ্রাসা শিক্ষক হাফেজ সাইদুল ইসলাম মাঝদিঘা নুরানি হাফিজিয়া মাদ্রাসার প্রধান এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ নাটোর জেলা শাখার কর্মী। তিনি নাটোর সদর উপজেলার মাঝদিঘা পূর্বপাড়ার আবদুর রহমানের ছেলে।

এদিকে ওই ঘটনায় সাইদুল ইসলামের বাবা আবদুর রহমান বাদি হয়ে অজ্ঞাত ৬/৭ জনকে আসামি করে ওই রাতেই নাটোর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এ নিয়ে গত এক মাসে নাটোরের সিংড়া, নলডাঙ্গা, নাটোর সদর ও লালপুরের ১০ জনকে তুলে নিয়ে পিটিয়ে, কুপিয়ে, হাত-পায়ের রগ কেটে ও গুলি করে গুরুতর আহত করা হয়।

নাটোর সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সাইদুল ইসলাম জানান, সম্প্রতি একটি ইসলামী জালসায় স্থানীয় একজন ইউপি সদস্যের নাম না দেয়ায় তিনি ক্ষিপ্ত হন এবং আমাকে দেখে নেয়াসহ নানা প্রকার হুমকি দেন। শুক্রবার সন্ধ্যা পৌনে সাতটার দিকে মাদ্রাসার অফিসে বসে পবিত্র কোরআন তিলাওয়াত করছিলাম। ৬-৭ জন অপরিচিত লোক এসে আমার পরিচয় জানতে চায়। আমি পরিচয় দেয়ামাত্র তারা ঘাড়ে ধাক্কা দিয়ে আমাকে জোর করে তাদের নিয়ে আসা সাদা রঙের মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যায়। মাইক্রোবাসে ওঠার পরপরই একটা নতুন গামছা দিয়ে আমার চোখ-মুখ বেঁধে ফেলে। পরে তারা ঘটনাস্থল থেকে প্রায় ৪ কিলোমিটার দূরে নাটোর-নলডাঙ্গা আঞ্চলিক মহাসড়কের চিকুর মোড় এলাকায় তাকে আহত অবস্থায় ফেলে রেখে যায়।

মাওলানা সাইদুল ইসলাম আরো বলেন, মাইক্রোবাসে তোলার পর তাঁকে পেছনের সিটে বসিয়ে দু’জন হাত ধরে রাখেন। তাঁরা পরস্পরের মধ্যে নলডাঙ্গার স্থানীয় ভাষায় কথা বলছিলেন। তবে কেউ ফোনে কথা বলছিলেন না। তাঁর ফোনটি বেজে উঠলে তাঁরা সেটি কেড়ে নেয়। তখনই তারা লোহার রড, চাবুক ও হাতুড়ি দিয়ে আমার হাত-পায়ে এলোপাতাড়ি মারতে থাকে। আমি চিৎকার করলেও কেউ এগিয়ে আসে না। পরে আমি শুয়ে পড়ি এবং অচেতন হয়ে পড়ি। কিছুক্ষণ পর জ্ঞান ফিরলে দেখি তারা নাই।

পরে খবর পেয়ে মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও ছাতনী ইউপি চেয়ারম্যান তোফাজ্জল হোসেনসহ তাঁর সহকর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে প্রেরণ করে।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান তোফাজ্জল হোসেন জানান, সন্ধ্যার পরে এলাকায় একটি সভা করার সময় তিনি সাইদুল ইসলামকে তুলে নিয়ে যাওয়ার খবর পান। পরে খোঁজ খবর নিয়ে চিকুর মোড় থেকে তাঁকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। তাঁর হাত-পায়ে হাতুড়ি দিয়ে বেধড়ক পেটানো হয়েছে। তিনি গুরুতর আহত।
এব্যাপারে নাটোর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নাছিম আহমেদ বলেন, তাকে তুলে নিয়ে গিয়ে নির্যাতনের ঘটনা ঘটনা সঠিক।

এই ঘটনায় আহত সাইদুল ইসলামের বাবা আবদুর রহমান বাদী হয়ে অজ্ঞাত ৬/৭জনকে আসামি করে শুক্রবার মধ্য রাতে নাটোর নাটোর একটি মামলা দায়ের করেছে। বিষয়টি তদন্ত করে জড়িতদের সনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হবে।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ