বুধবার, ৯ অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৪ আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ ।
নাটোর প্রতিনিধি:
নাটোরে জেলা যুবলীগের সভাপতি বাশিরুর রহমান খান চৌধুরী এহিয়ার বাড়ি থেকে একটি অবৈধ ভারতীয় পিস্তল ও দুই রাউন্ড গুলি উদ্ধার করেছে যৌথবাহিনী। এদিকে সাবেক প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ পলক এবং সংসদ সদস্য (নাটোর-২) শফিকুল ইসলাম শিমুল। তাঁদের নামে থাকা লাইসেন্স করা চারটি আগ্নেয়াস্ত্র নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আগ্নেয়াস্ত্র জমা না দেওয়ায় মামলা হচ্ছে।
শুক্রবার (০৬ সেপ্টেম্বর) ভোরে শহরের কানাইখালী এলাকায় যৌথবাহিনী অভিযান চালিয়ে ওই যুবলীগ নেতার বাড়ি থেকে অস্ত্রসহ গুলি উদ্ধার করা হয়।
নাটোর সদর পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি তদন্ত) শফিকুল ইসলাম নিশ্চিত করে বলেন, নাটোরে বিভিন্ন এলাকায় যৌথবাহিনী অভিযান কার্যক্রম শুরু হয়েছে। শুক্রবার ভোরে শহরের কানাইখালী এলাকায় অবস্থিত জেলা যুবলীগের সভাপতি এহিয়ার বাড়িতে অভিযান পরিচালনা করে যৌথবাহিনী। এসময় বাড়ির এক রুম থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, দুই রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় একটি অস্ত্র মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে তিনি জানান।
অপরদিকে সাবেক প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ পলক ও আলোচিত সংসদ সদস্য নাটোর-২ শফিকুল ইসলাম (শিমুল)। তাঁদের নামে আছে লাইসেন্স করা চারটি আগ্নেয়াস্ত্র স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বেঁধে দেওয়া সয়য়ের মধ্যে জমা না দেয়ায় তাঁদের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলা প্রক্রিয়াধীন ।
জানা যায়, আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর জুনাইদ আহ্মেদ পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন এবং শফিকুল ইসলাম আছেন আত্মগোপনে রয়েছেন।
নাটোরের পুলিশ সুপারের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বেঁধে দেওয়া সময় (৩ সেপ্টেম্বর) পার হলেও নাটোরের সাবেক দুই সংসদ সদস্য বা তাঁদের পক্ষে কেউ তাঁদের নামে লাইসেন্স করা শর্টগান ও পিস্তল থানায় জমা দেননি। এর ফলে এই দুজনের হেফাজতে থাকা আগ্নেয়াস্ত্র এখন অবৈধ অস্ত্র হিসেবে বিবেচিত হবে এবং তাঁদের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলা প্রক্রিয়াধীন।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশ ছেড়ে যাওয়ার পর নাটোরে এই দুই সংসদ সদস্যের বাড়িতে বিক্ষুব্ধ জনতা হামলা চালায়। বাড়িতে লুটপাট ও আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। এখন পর্যন্ত দুই সংসদ সদস্য ও তাঁর স্বজনেরা নাটোর শহরে ফিরে আসেননি।
দুই সংসদ সদস্যের পাশাপাশি সিংড়া পৌরসভার মেয়র ও সিংড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জান্নাতুল ফেরদৌসের নামে লাইসেন্স করা একটি ও নাটোর শহরের ঠিকাদার আশফাকুল ইসলামের নামে লাইসেন্স করা অপর একটি অস্ত্রও জমা পড়েনি। ৫ আগস্ট তাঁদের বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। এ ব্যাপারে তাঁদের পক্ষ থেকেও সাধারণ ডায়েরি করার আবেদন করা হয়েছে।
ঠিকাদার আশফাকুল ইসলাম বলেন, ৫ আগস্ট সন্ধ্যায় শত শত দুর্বৃত্ত লোহার গেট ভেঙে তাঁর বাড়িতে হামলা করে। ব্যাপক অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট করে এবং তাঁকে হত্যার উদ্দেশ্যে গুরুতর জখম করে। এ সময় অন্য জিনিসপত্রের সঙ্গে তাঁর নামে লাইসেন্স করা দুটি অস্ত্র ও গুলি লুট করে। এ ব্যাপারে তিনি সংশ্লিষ্ট দপ্তরে ইমেইল পাঠিয়েছেন।
উল্লেখ্য, নাটোরে আওয়ামী লীগ সরকারের সময় লাইসেন্স দেওয়া ৯৫টি অস্ত্রের মধ্যে নির্ধারিত সময়ে ৮৯টি অস্ত্র জমা পড়েছে।
নাটোরের পুলিশ সুপার মারুফাত হুসাইন বলেন, যে ছয়টি লাইসেন্স করা বৈধ অস্ত্র জমা পড়েনি, তার মধ্যে দুটি করে সাবেক প্রতিমন্ত্রী পলক ও এমপি শিমুলের। এখন এগুলো অবৈধ বলে ঘোষিত হয়েছে। অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে যৌথ বাহিনী কাজ করছে।