শনিবার, ২৫ মার্চ, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ১১ চৈত্র, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ ।
নাটোর অফিস
নাটোরে শিক্ষক নিয়োগ দেয়ার নাম করে ১৫ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে প্রধান শিক্ষককে জেলহাজতে পাঠিয়েছে আদালত। গতকাল দুপুরে অভিযুক্ত শিক্ষক আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করলে সিনিয়র জুডিশিয়াল আদালতের বিচারক শামসুল আল আমীন জামিন আবেদন না মঞ্জুর করে তাকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, গত ২০১৫ সালের ২১ অক্টোবর জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকায় নাটোর সদর উপজেলার পাইকেরদোল এসসি উচ্চবিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান বিষয়ের শূন্য পদে শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হওয়ার পরে নির্ধারিত নিয়োগ পরীক্ষায় স্থানীয় সুব্রত কুমারের স্ত্রী সীমা রানী দাসসহ মোট ৯জন অংশগ্রহণ করেন। এর আগে ওই পদে নিয়োগ দেয়ার নামে বিদ্যালয়ের ফি বাবদ সীমা রানী দাসের কাছ থেকে ১৫ লাখ টাকা নেন প্রধান শিক্ষক ইয়ার আলী। নিয়োগ পরীক্ষার নির্বাচনী বোর্ডে সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন বিদ্যালয়ের ম্যানিজিং কমিটির সভাপতি অন্তরা রানী। গত ২০১৬ সালের ২৯ জানুয়ারি মোট ৫০ নম্বরের নিয়োগ পরীক্ষা গ্রহণ করা হয়। আবেদনকারীদের মধ্যে সীমা রানী দাস মেধা তালিকায় সর্ব্বোচ ৩৫.৮ নম্বর পেয়ে প্রথম স্থান অর্জন করেন এবং বিধি অনুযায়ী সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার শাহ্ আলম শেখ, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইয়ার আলী ও নিয়োগ নির্বাচন কমিটি ও ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সভাপতি অন্তরা রানী দাস স্বাক্ষরিত নিয়োগ নির্বাচন বোর্ডের রেজুলেশনে সীমা রানী দাসকে ওই বিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান বিষয়ের সহকারী শিক্ষক পদে নির্বাচন করা হয়। কিন্তু বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইয়ার আলী নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সীমা রানী দাসকে নিয়োগপত্র প্রদান না করে নিয়োগ ঠেকাতে তার মনোনীত প্রার্থী রওশন আরাকে দিয়ে একটি মামলা করান। এদিকে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সীমা রানী দাসকে নিয়োগ না দেওয়ায় টাকা ফেরত চায় সীমা রানী দাসের স্বামী সুব্রত কুমার মন্ডল। কিন্তু টাকা ফেরত না দিয়ে প্রধান শিক্ষক ইয়ার আলীর নির্দেশে দেশিয় অস্ত্রসস্ত্রে সজ্জিত স্থানীয় ক্যাডার বাহিনী সুব্রত ও তার পরিবারের লোকজনকে অকথ্য ও সাম্প্রদায়িক ভাষায় গালিগালাজ ও মারপিট জখমের হুমকি দেয়। এ বিষয়ে সুব্রত একটি মামলাও দায়ের করেন। পরে চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি সুব্রত কুমার মন্ডল বাদী হয়ে নাটোর সদর থানায় প্রধান শিক্ষক ইয়ার আলীকে আসামি করে আলাদা একটি মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় প্রধান শিক্ষক ইয়ার আলীকে জেলহাজতে প্রেরণের নিদেশ দেন বিচারক। ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রতারণা ও অর্থ-আত্মসাৎসহ একাধিক মামলা রয়েছে।
এ ব্যাপারে ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সভাপতি অন্তরা রানী দাস জানান, প্রধান শিক্ষক ইয়ার আলী চাকরি দেওয়ার নামে সীমা রানীর কাছ থেকে টাকা নেয়ার বিষয়টি সত্য। এ বিষয়ে একটি মামলা চলছে। মামলায় নায্য ও সঠিক বিচার আশা করছি।