নাটোরে হঠাৎ সবজির দাম বাড়ায় ক্রেতাদের নাভিশ্বাস, স্থানীয় বাজারগুলোতে চাহিদার চেয়ে আমদানি কম

আপডেট: অক্টোবর ৪, ২০২৪, ১০:৫৮ অপরাহ্ণ


নাটোর প্রতিনিধি:


টানা বৃষ্টি, আর উজান থেকে নেমে আসা ঢলের পানি প্রভাব পরেছে উত্তরের জেলা নাটোরেও। হঠাৎ করে সবজির দাম বেড়ে যাওয়ায় ক্রেতাদের নাভিশ্বাস উঠেছে। স্থানীয় বাজার গুলোতে শুক্রবারে যে বেগুন ১শ’ টাকা কেজি দরে বেগুন বিক্রি হয়েছে। সেই বেগুন গত বৃস্পতিবার (৩ অক্টোবর) ৫০ থেকে ৬০ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে। এছাড়া কাঁচা মরিচ প্রতি কেজি ২৮০ টাকা থেকে ৩২০ টাকা,পটল ৮০ টাকা, ঠেঁড়শ ৮০ টাকা এবং আগাম জাতের ফুল কপি প্রকারভেদে ১শ থেকে ১১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এতে ক্রেতারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন। আর বিক্রেতারা বলছেন, স্থানীয় সবজি বাজারে শুক্রবার (৪ অক্টোবর) সকাল থেকে সবজির আমদানি নেই। চাহিদার চেয়ে আমদানি কম হওয়ায় বেশী দামে সবজি কিনতে হয়েছে।

নাটোর শহরের নিচাবাজারের খুচরা সবজি বিক্রেতা আলিমুদ্দিন ও হারেজ আলী জানান, নাটোরের সবজি বাজারগুলোতে প্রতিদিন ভোর থেকে পাইকার ও কৃষকরা বিভিন্ন সবজি বিক্রির জন্য নিয়ে আসেন। কিন্তু শুক্রবার যে কজন সবজি নিয়ে আসেন বিক্রির জন্য তা ছিল চাহিদার তুলনায় একে বারে কম। ফলে নিজেদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান চালু রাখার স্বার্থে প্রতিযোগীতা করে অন্যান্য দিনের তুলনায় দ্বিগুন দামে কিনতে হয়েছে। খুচরা সবজি বিক্রেতা কামাল হোসেন বলেন, প্রতিদিন নিচাবাজার থেকেই তারা প্রথমে পাইকারি মুল্যে সবজি কিনেন। ঘাটতি হলে তারা স্টেশন বাজার থেকে নিয়ে আসেন। আজ শুক্রবার কোন বাজারেই চাহিদা অনুযায়ী সবজির সরবরাহ ছিলনা। ফলে বেশী দামেই কিনতে হয়েছে।

পাইকারী বিক্রেতা মাহাবুব ও মোয়াজ্জেম হোসেন জানান, তারা দু’দিন ধরে বিভিন্ন গ্রামে ঘুরেও প্রতিদিনের সবজি কিনতে পারেননি।
করোটা গ্রামের রুহুল আমিন জানান, তিনি প্রায় একবিঘা জমিতে ফুলকপির আবাদ করেছিলেন। টানা বর্ষনের কারনে জমির ফুল কপি নষ্ট হয়ে গেছে।
জেলা কৃষি বিপণণ কর্মকর্তা মিজানুর রহমান জানান,সবজি পচনশীল পণ্য হওয়ায় টানা কয়েকদিনের বৃষ্টিতে সবজির একটি বড় অংশ ক্ষতি হয়েছে। টানা বর্ষনের কারনে অনেক কৃষকের জমির ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। ফলে চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম ছিল। বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে বাজারে সবজির আমদানি আরো কমে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

নাটোর কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের উপপরিচালক ওবায়দুল হক জানান, গত দু’দিনে নাটোরে প্রায় ৫০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। বিগত কয়েকদিন প্রায় একই পরিমান বৃষ্টিপাত হয়। ফলে অনেক জুমিতে পানি জমে ফসলের একটা বড় অংশ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। খরিপ-২ মৌসুমে নাটোর জেলায় সবজি আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪ হাজার ৮শ হেক্টর জমিতে। অর্জিত হয়েছে ৪ হাজার ৭২৭ হেক্টর জমিতে। ফসল পাওয়া গেছে প্রায় ৮ হাজার টন। অতি বর্ষন সত্বেও আগাম ফসল হিসেবে ফুলকপি বাজারে উঠেছে। এছাড়া যে সব ফসল পানিতে নষ্ট হয়েছে সে সব জমির পানি বের হওয়ার জন্য নালা কেটে দেয়া সহ উঁচু জমিতে নতুন করে বেড তৈরি করার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। যাতে করে যে সব জমির ফসল নষ্ট হয়েছে সেসব জমিতে পুনরায় রবি মৌসুমের ফসল আবাদ করা যায়। কৃষকদের উৎপাদন বাড়াতে নানা পরমর্শ দেয়া হচ্ছে।#

Exit mobile version