বুধবার, ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ১২ আশ্বিন, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ ।
নাটোর প্রতিনিধি :
নাটোরে সংসদ সদস্য শহিদুল ইসলাম বকুলের বিরুদ্ধে আদালতে একটি হত্যাকাণ্ডের নালিশি মামলা জমা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১ জুন) স্বামী হত্যার বিচারের আশায় স্ত্রী শাহানাজ পারভীন বাগাতিপাড়ার আমলি আদালতে মামালাটি দাখিল করেন। নাটোরের বাগাতিপাড়া আমলী আদালতের বিচারক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আবু সাঈদ অভিযোগটি আমলে নিয়ে আগামী ১৫ জুন এ বিষয়ে আদেশ দেয়ার কথা জানান। বাদি বাগাতিপাড়া উপজেলার মাড়িয়া গ্রামের মরহুম আইয়ুব আলীর স্ত্রী মোছা. শাহানাজ পারভীন (৫০)।
নিহতের স্ত্রী মামলায় অভিযোগ করেন, বাগাতিপাড়া উপজেলার স্যানালপাড়া গ্রামের মহিদুল ইসলাম (৩৬), মাড়িয়া গ্রামের মিজানুর রহমান (৩৬) ও মাইনুল ইসলাম (৩২) এবং আব্দুল মজিদ দীর্ঘদিন থেকে তার স্বামী আইয়ুব আলীর কাছে মিথ্যা অভিযোগে টাকা দাবি করে আসছিল।
পরে প্রধান অভিযুক্ত শহিদুল ইসলাম বকুল এমপি নির্বাচিত হওয়ায় তারা আরো শক্তিশালী হয়। তাদের পরামর্শে শহিদুল ইসলাম বকুল এমপি তার স্বামীকে এমপির বাড়িতে ডেকে পাঠায়। অভিযুক্তরা ২০২০ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি সকাল ১০টার দিকে তিনি ও তার স্বামী এবং সাক্ষীদের অভিযুক্তরা এমপি শহিদুল ইসলাম বকুলের বাড়িতে নিয়ে যান। এ সময় এমপি বকুল সকলের সামনে বলেন, ‘মাড়িয়া গ্রামের সবাই চোর। এই শালাকে বেঁধে ফেল। সাদা স্টাম্পে সই নেয়। সই না দিলে গাছে ঝুলিয়ে মারপিট কর।’
তিনি আরো জানান, অভিযুক্তরা তার স্বামী আইয়ুব আলীকে বেঁধে ফেলে। এ সময় এমপি বকুল নিজে হাতে তার স্বামীকে চড় থাপ্পর মারতে থাকেন। এক পর্যায়ে তার স্বামী মাটিতে লুটিয়ে পড়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান। পরে তাকে বাগাতিপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ওই সময়ই তিনি বাগাতিপাড়া মডেল থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ এমপির বিরুদ্ধে মামলা নেয়নি। এ বিষয়ে বাদিপক্ষের আইনজীবী সুফি মমতাজ রায়হান বলেন, অভিযোগটি আদালত গ্রহণ করেছেন। প্রাথমিক শুনানি হযেছে। আগামি ১৫ জুন আদালত এ বিষয়ে আদেশের দিন ধার্য্য করেছেন।
এ বিষয়ে জানতে (লালপুর-বাগাতিপাড়া) আসনের এমপি শহিদুল ইসলাম বকুল মামলাটিকে মিথ্যা, বানোয়াট ও হয়রানিমূলক বলে দাবি করে বলেন, তাকে রাজনৈতিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষদের ইন্ধনে এই বানোয়াট মামলাটি করা হয়েছে। মৃত আইয়ুব আলী হার্টের রুগী ছিলেন। তার চিকিৎসার জন্য তিনি নিয়মিত তাকে সহায়তা করতেন।
এছাড়া সে স্ট্রোক করে মারা যায় বলে ডাক্তারি রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে। পুলিশের প্রতিবেদনেও তাই উল্লেখ রয়েছে। প্রায় তিন বছর আগের একটি স্বাভাবিক মৃত্যুকে পুঁজি করে ষড়যন্ত্রকারীরা আগামী সংসদ নির্বাচনের আগে তাকে রাজনৈতিকভাবে হেয় করতে তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক এই মামলাটি করিয়েছে। তিনি ঘটনার প্রকৃত সত্য উদঘাটনে সাংবাদিকদের অনুরোধ করেন।
কেননা বাদির আইনজীবী হিসাবে এডভোকেট মমতাজ রায়হান সিনাকে স্বাক্ষর করালেও মামলা দাখিলের সময় বাদির পক্ষে মুভ করেছেন তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ সাবেক সংসদ সদস্য এডভোকেট আবুল কালামের জুনিয়র এডভোকেট শাহ মখদুম রুপশ। এতেই পরিষ্কার বোঝা যায় এটা রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র।
সাবেক এমপি এডভোকেট আবুল কালাম আজাদের বিরুদ্ধে শহিদুল ইসলাম বকুলের অভিযোগ বিষয়ে কথা বলার জন্য একাধিকবার চেষ্টা করেও এডভোকেট আবুল কালামের ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।