নাসিরপুরে নিহতদের চারজনই শিশু

আপডেট: এপ্রিল ২, ২০১৭, ১২:৩৩ পূর্বাহ্ণ

সোনার দেশ ডেস্ক


মৌলভীবাজারের নাসিরপুরে এক জঙ্গি আস্তানায় ‘আত্মঘাতী বিস্ফোরণে’ ছিন্নভিন্ন যে সাতজনের লাশ পাওয়া গেছে, তার মধ্যে চারজনের বয়স কয়েক মাস থেকে দশ বছরের মধ্যে।
খণ্ড বিখণ্ড দেহের অংশগুলো এতোটাই বিকৃত হয়ে গেছে যে তাদের লিঙ্গ পরিচয় নিশ্চিত করতে পারেননি ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসকরা।
মৌলভীবাজারের সিভিল সার্জন ডা. সত্যকাম চক্রবর্তী জানান, নিহতদের মধ্যে দুজন নারী ও একজন পুরুষ। শুক্রবার বিকালে সাতজনের লাশের ময়নাতদন্ত হয়।
সদর উপজেলার খলিলপুর ইউনিয়নের নাসিরপুরে বাগান ঘেরা একটি একতলা টিনশেড বাড়ি জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে বুধবার ভোর থেকে ঘিরে রাখার পর সেদিন সন্ধ্যায় শুরু হয় সোয়াটের ‘অপারেশন হিট ব্যাক’।
অভিযান শেষ করে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সাত থেকে আটজনের ছিন্নভিন্ন লাশ পাওয়ার কথা জানান পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম।
তিনি বলেন, নিহতরা নব্য জেএমবির সদস্য এবং আত্মঘাতী বিস্ফোরণে তাদের মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা করছেন তারা।
পুলিশের করা লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন পাওয়ার পর শুক্রবার বিকালে মৌলভীবাজার জেনারেল হাসপাতালে ময়নাতদন্ত করেন তিন সদস্যের একটি চিকিৎসক দল।
হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের কনসালট্যান্ট সুব্রত কুমার রায়, আবু ইমরান ও আরএমও পলাশ রায় ছিলেন ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক দলে।
সিভিল সার্জন পরে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, চারটি শিশুর মধ্যে একজনের বয়স এক বছরের কম। বাকিদের বয়স দুই বছর, সাত বছর ও ১০ বছরের মত।
দুই নারীর মধ্যে একজনের বয়স ২০ এর কাছাকাছি এবং অন্যজনের ৩০ এর মত বলে চিকিৎসকদের ধারণা। আর পুরুষটির বয়স আনুমানিক ৩৫ বছর।
মৌলভীবাজার জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা পলাশ রায় সাংবাদিকদের জানান, পচন ধরা টুকরো টুকরো দেহখণ্ডগুলোতে স্লিন্টারের মত ধাতব টুকরো পাওয়া গেছে। শরীরের বিভিন্ন অংশ বিস্ফোরণে উড়ে গেছে। ডিএনএ পরীক্ষার জন্য লাশগুলোর নমুনা সংগ্রহ করেছেন তারা।
ওই দুই বাড়ির মালিক সাইফুল ইসলাম থাকেন লন্ডনে। মৌলভীবাজার শহরে তার মালিকানাধীন আরও একটি বাড়ি বুধবার একই সময়ে ঘিরে ফেলে পুলিশ; সেখানে অভিযান এখনও শেষ হয়নি।
সাইফুলের বাড়ি দুটির তত্ত্বাবধান করে আসছিলেন তার আত্মীয় জুয়েল। তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, মাহফুজ নামের এক ব্যক্তি তিন মাস আগে নাসিরপুরের বাসাটি ভাড়া নেন। ওই বাসার সবাই একই পরিবারের সদস্য।
পুলিশ তাদের নব্য জেএমবির সদস্য বলে মনে করলেও তাদের কারও নাম-পরিচয় আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয়নি।
সিলেটের দক্ষিণ সুরমায় আরেক জঙ্গি আস্তানায় অভিযানের সূত্র ধরেই মৌলভীবাজারের এই দুটি বাড়ির সন্ধান পাওয়া যায় বলে পুলিশের ভাষ্য।- বিডিনিউজ