সোমবার, ১৯ মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৫ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ ।
নিয়ামতপুর (নওগাঁ) প্রতিনিধি:
নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলার পাঁড়ইল ইউপি চেয়ারম্যান ও পাঁড়ইল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সৈয়দ মুজিব গ্যান্দার বিরুদ্ধে খাস পুকুর দখল ও খাস পুকুরে মাছ ধরার অপরাধে উজ্জ্বল হোসেনকে অন্যায় ভাবে মারধর, এক নারী ও শিশুর দিকে বাঁশ ছুড়ে মারার অভিযোগে মানববন্ধন করেছেন স্থানীয় জনগন।
বৃহস্পতিবার (১৬ মে) বেলা ১১টার দিকে পাঁড়ইল ইউনিয়ন পরিষদের সামনে মানববন্ধন করে এই ক্ষোভ প্রকাশ করেন ভুক্তভোগী পরিবারসহ স্থানীয় জনগণ।
মানববন্ধনে অংশ নেওয়া শহিদুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি বলেন, পাঁড়ইল ইউনিয়নের দাদরইল এলাকায় ইউনিয়ন পরিষদের পেছনে একটি খাস পুকুরে চেয়ারম্যান মাছ চাষ করতেন। কয়েকদিন ধরে ধাপে ধাপে প্রায় সকল মাছ মেরে মঙ্গলবার (১৪ মে) পুকুরে গ্যাস করেন নতুন করে মাছ ছাড়ার জন্য। গ্যাস করার পরেও দুই তিন বার জাল টানেন চেয়ারম্যানের লোকজন। পরবর্তীতে স্থানীয় শিশু, যুবক, নারী-পুরুষ উৎসাহী হয়ে মাছ ধরতে পুকুরে নামেন। এতে রাগান্বিত হয়ে চেয়ারম্যান তাদেরকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করেন।
মাছ ধরায় ক্ষিপ্ত হয়ে তার হাতে থাকা লাঠি ছুড়ে মারলে অল্পের জন্য এক আদিবাসী শিশু আঘাত থেকে রক্ষা পান। এসময় পুকুর পাড়ে পড়ে থাকা একটি বাঁশ তুলে শ্যামলী নামের এক মেয়ের দিকে ছুড়ে মারেন ইউপি চেয়ারম্যান। তার এমন আচরণে সকলে ভয়ে পুকুর থেকে উঠে যায়। কিছুক্ষণ পর আবারও গ্রামের মানুষ মাছ ধরতে গেলে চেয়ারম্যান হাতে লাঠি নিয়ে গিয়ে উজ্জ্বল হোসেনকে (৩০) বেধড়ক মারধর করেন। আমি চেয়ারম্যানের ঘৃণ্য মানসিকতার তীব্র প্রতিবাদ জানাই এবং এর সঠিক বিচার চাই।
ভুক্তভোগী শ্যামলী বলেন, আমি পুকুর পাড়ে দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় আক্রোশমূলক চেয়ারম্যান গ্যান্দা লাঠি ছুড়ে মারে। এতে করে আমার মাথা কেটে যায়। তার হিংস্রতায় শিশুও রক্ষা পাইনি। এছাড়া এর আগেও এরকম অসহায়দের মারপিট করেন চেয়ারম্যান। আমরা এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী ও খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদারের সহযোগিতা ও চেয়ারম্যানের এমন ঘৃণ্য কাজের উপযুক্ত বিচার দাবি করছি।
মারধরের শিকার উজ্জ্বল হোসেন বলেন, চেয়ারম্যান কোনো কিছুর তোয়াক্কা করেন না। সাধারণত পুকুরে গ্যাস করা হয়ে গেলে এলাকার লোকজন মাছ ধরেন। মাছ ধরার কারণে এমনভাবে মারধর করবেন যা কল্পনা করা যায় না। আমাকে এমনভাবে মারধর করেছে যা ভাষায় প্রকাশ করার মতো না।
এ বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান সৈয়দ মুজিব গ্যান্দা সত্যতা স্বীকার করে বলেন, সে দিন ছোট খাটো একটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটেছে।
থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাইদুল ইসলাম বলেন, মানববন্ধন হয়েছে শুনেছি। ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।